ফ্রিল্যান্সিং করতে চাচ্ছেন, অথচ ইংরেজিতে দূর্বলতার কারণে করতে পারছেন না! আপনি জানেন কি, বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সিং সাইট আছে? যেখানে আপনি ইংরেজি ছাড়াই শুধুমাত্র দক্ষতার কারণে কাজ পেতে পারেন। বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সিং সাইট সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি না। কিন্তু আমাদের দেশে প্রচুর ফ্রিল্যান্সার আছেন এবং যুবক সমাজের মধ্যেও ফ্রিল্যান্সিংকে ক্যারিয়ার হিসেবে নিতে আগ্রহী হচ্ছেন অথচ ইংরেজি ভীতির কারণে আস্থা পাচ্ছেন না।
আপনার দক্ষতা থাকা সত্ত্বেও যদি আন্তর্জাতিক সাইটে কাজ করার বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কারণে অনলাইনে আয় করতে না পারেন, তবে এবার একটু নিজেকে সুযোগ দিন।
কারণ আপনাকে প্লাটফর্ম দিচ্ছে বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সিং সাইট। যেখানে আপনি এমন কাজও পাবেন যা মোবাইল দিয়েও করা যায়, অর্থাৎ মোবাইল দিয়ে অনলাইনে ইনকাম করার সুযোগ পাবেন।
সূচীপত্র
বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সিং সাইট এ কেন কাজ করবেন?
বাংলাদেশী হিসেবে সেরা ফ্রিল্যান্সিং সাইট গুলোতে কাজ করার জন্য আমাদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হন। প্রধান দুইটি সমস্যা হলো;
- কমিউনিকেশন
- পেমেন্ট মেথড
বেশিরভাগ আউটসোর্সিং সাইট পেপালের মাধ্যমে পেমেন্ট করে যা আমাদের দেশে এখনো স্বীকৃত নয়। তাই এসব সমস্যার সমাধান হতে পারে বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সিং সাইট।
বাংলাদেশের বর্তমানে দুইটি ফ্রিল্যান্সিং সাইট রয়েছে যেখানে কাজ পাওয়ার জন্য ফ্রিল্যান্সার প্রোফাইল তৈরি করা এবং কাজ করানোর জন্য Freelancer হায়ার করা যায়।
বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সিং সাইট ;
- বিল্যান্সার ডটকম
- কাজ কী ডটকম
BELANCER – বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সিং সাইট
বাংলাদেশের বেকার যুবক ও ফ্রিল্যান্সারদের জন্য কাজের সুযোগ করে দিতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ (পলক) এর আগ্রহ এবং সরকারী সহযোগিতায় ২০১৫ সালে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশের প্রথম ফ্রিল্যান্সিং সাইট Belancer.com
বিল্যান্সার নামটিও প্রস্তাব করেছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ (পলক)। সাইটটির মূল উদ্যোক্তা মোঃ শফিউল আলম।
এখন পর্যন্ত ৪৯৬২৮ জন্য ফ্রিল্যান্সার বিল্যান্সারে রেজিস্ট্রেশন করেছেন। ৫৮২৯ জন Employer ১২৯৫৮ টি কাজ করানোর জন্য জব পোস্ট করা হয়েছে। যার প্রজেক্ট মূল্য ৩ কোটি ৬১ লাখ ৬২ হাজার টাকারও বেশি।
এখানে কাজ খোঁজাও বেশি সুবিধাজনক। আপনার একাউন্ট তৈরি করে ভালভাবে সাজিয়ে নিতে হবে। যে কাজ করতে চান সেখানে বিড করে এপ্রুভাল পেতে হবে, এরপর কাজটি জমা দিয়ে পেমেন্ট নিতে পারবেন।
Freelancerদের জন্য সুখবর হলো বিল্যান্সার টিম এখন দেশের বাইরে থেকেও প্রজেক্ট নিয়ে আসার চেষ্টা করে যাচ্ছে, যা আপনাদের আরো বেশি কাজের সুযোগ দিবে, একইসাথে পারিশ্রমিকও বৃদ্ধি পাবে।
বিল্যান্সারে যেসব কাজ বেশি পাওয়া যায়:
- মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট
- ওয়েবসাইট পেডেভলপমেন্ট
- সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট
- কনটেন্ট রাইটিং ও ট্রান্সলেশন
- ডিজাইন এবং মাল্টিমিডিয়া
- সেলস ও মার্কেটিং
পেমেন্ট পাওয়ার গ্যারান্টি
বিলান্সারে কোনো নিয়োগতর্তা জব পোস্ট করলে তার একাউন্ট থেকে কাজের মূল্যের সমপরিমাণ অর্থ জমা নেওয়া হয়। কাজ সম্পাদন হলে ফ্রিল্যান্সারের একাউন্টে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। অর্থাৎ পেমেন্ট নিয়ে অনিরাপদ অনুভব করার কোনো কারণ নেই।
বিল্যান্সার নিয়োগতর্তা এবং ফ্রিল্যান্সার উভয়ের কাছ থেকেই ৫% কমিশন নেয়।
পেমেন্ট মেথড
যেমনটা বলেছিলাম, বাংলাদেশের কোনো ফ্রিল্যান্সিং সাইটে কাজ করার সুবিধা হলো সহজ পেমেন্ট মেথড। বিল্যান্সার ডট কম আপনাকে বিকাশ, ক্রেডিট কার্ড এবং পেপালের মাধ্যমে পেমেন্ট দিতে এবং নিতে পারবেন।
বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সিং সাইট – kajKey
বাংলাদেশের দ্বিতীয় ফ্রিল্যান্সিং মার্কেট কাজ কী ডটকম। ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম শুরু হয় ২০১৯ সালের জানুয়ারীতে। কাজ কী ডটকম ফ্রিল্যান্সিং সাইটের প্রতিষ্ঠাতা সাব্বির আহমেদ।
kajkey.com কে বাংলা ভাষার প্রথম ফ্রিল্যান্সিং সাইট বলা হয়। কেননা, এই সাইটের সম্পূর্ণ নেভিগেশন বাংলায় করা।
যারা ইংরেজির ভয়ে সন্ত্রস্ত এবং দক্ষতা থাকা সত্ত্বেও কাজ করতে পারছেন না, তাদের জন্য কাজ কী ফ্রিল্যান্স সাইটটি বেস্ট অপশন।
সাইটটিতে ফ্রিল্যান্সার একাউন্ট খুলে জব পোস্টগুলোতে বিড করতে হয়। এছাড়াও এখানে ফাইভার সাইট এর মতো গিগ প্রকাশ করার সুযোগও রয়েছে। ফলে আপনার কাজের দক্ষতা এবং রেটিং ভালো থাকলে ইমপ্লয়াররাই আপনাকে কাজের জন্য অফার করবে।
এখানে কাজ করার জন্য আপনার কোনো শিক্ষাগত যোগ্যতা জরুরী নয়, তবে অবশ্যই দক্ষতা থাকতে হবে। সাইটটিতে প্রতিদিন অনেকগুলো জব পোস্ট হয় এবং কাজের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে।
কাজ কী তে যেসব ফ্রিল্যান্সিং কাজ বেশি পাওয়া যায়:
- ওয়েব ডেভেলপমেন্ট
- মোবাইল ডেভেলপমেন্ট
- গ্রাফিক্স ডিজাইন
- ভিডিও তৈরি, এডিটিং ও এনিমেশন
- ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্ট
- কাস্টমার কেয়ার
- মার্কেটিং
- কনটেন্ট রাইটিং
- ডাটা এন্ট্রি
- অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট
পেমেন্ট মেথড
ফ্রিল্যান্সারদের পেমেন্ট দেওয়া হয় বিকাশের মাধ্যমে। তবে Employerদের জন্য বিকাশের পাশাপাশি মাস্টার কার্ড এবং ভিসা কার্ড এর মাধ্যমে টাকা জমা দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সিং সাইটে Employer দের সুবিধা
বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট দুইটি যারা কাজ করতে চায় শুধুমা্ত্র তাদের জন্য যে সুবিধা করেছে তা কিন্তু নয়। আপনার যদি কোনো ফ্রিল্যান্সার হায়ার করার দরকার হয় সেটাও সহজে করতে পারবেন।
সবাই বাংলা ভাষা-ভাষী হওয়ায় আপনার রিকুয়ারমেন্ট এবং কাজ সম্পর্কে ভালোভাবে বুঝাতে পারবেন, যার ফলে কাজ নিয়ে সন্তুষ্ট হতে পারবেন।
এছাড়া বাইরের দেশের ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটগুলোতে কাজের মূল্য শুরু হয় ৫ ডলার থেকে, অথচ একই কাজ এখানে আপনি ১০০ টাকাতেই করিয়ে নিতে পারবেন। সুতরাং, বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সিং সাইট থেকে কাজ করিয়ে নিলে অনেকটা খরচ বেচে যাবে।
শেষ কথা
ফ্রিল্যান্সিং সাইট এখন বিশ্ব বাজারের অন্যতম বৃহত্তম মার্কেট, যেখানে প্রতিদিন হাজার হাজার কোটি টাকার লেনদেন হচ্ছে। আমাদের দেশের রাজস্বের একটা বড় অংশও নিয়ে আসেন ফ্রিল্যান্সাররা।
আমরা স্বপ্ন দেখি একদিন আমাদের বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সিং সাইট বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতা করবে।
যারা ইতিমধ্যে Upwork, Freelancer, Fiverr এর মতো সাইটগুলোতে কাজ করেন কিংবা শুরু করতে চাচ্ছেন, সবাই যদি এসব সাইটের পাশাপাশি বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলোতেও সামান্য একটিভ হন, তাহলে হয়তো ভবিষ্যতে দেশের বাইরের কোনো আউটসোর্সিং সাইটে কাজ করতে হবেনা।
আমাদের বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সিং সাইট-ই বিশ্বের সেরাদের কাতারে চলে আসবে একদিন। আর এটিই হতে পারে আমাদের বেকারত্ব সমস্যার সমাধান। সেই সাথে আমাদের বাংলা ভাষাও পৌছে যাবে বিশ্বের অপর প্রান্তে, আরো বহুদূরে।
আমি কাজ করতে আগ্রহী
শুরু করে দিন। বেস্ট অব লাক
I want to do work onlin as a Data entry
Plz search by typing “ডাটা এন্ট্রি” on our site, you will find a bunch of site