হলুদের উপকারিতা’র কারণে অনেক বছর আগে থেকেই প্রাচীন ভারতীয় আয়ুর্বেদ ও চৈনিক চিকিৎসা পদ্ধতিতে হলুদের ব্যবহার হয়ে আসছে। হলুদ যে শুধু রান্নায় রঙ আনে তাই নয়, স্বাদ বা গন্ধের দিক থেকেও হলুদ খুবই প্রয়োজনীয় একটি উপাদান। হলুদের উপকারিতার জন্য গোটা ভারত, বাংলাদেশ সহ দক্ষিণ এশিয়ার রান্নায় হলুদের ব্যবহার ব্যাপকভাবে সমাদৃত।
হলুদ একটি মসলা জাতীয় উপাদান। হলুদ রান্না বা রূপচর্চা সর্ব ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। ত্বক, পেট বা শরীরের অন্যান্য সকল সমস্যায় হলুদ সমানভাবে কাজ করে।
গুঁড়া কিংবা কাঁচা দুই ধরনের হলুদের উপকারিতাই সমান। আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় ত্বক পরিচর্যার ওষুধ বা সুস্বাস্থ্যের প্রয়োজনীয় ওষুধ তৈরি করতে হলুদের ব্যবহার অনেক প্রাচীন।
একনজরে সম্পূর্ণ আর্টিকেল
হলুদের উপকারিতা সমূহ | Holuder Upokarita
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, হলুদে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টিভাইরাল ও অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান রয়েছে।
এছাড়াও, হলুদে পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফাইবার, ভিটামিন বি৬ ও ভিটামিন সি রয়েছে। হলুদে কারকিউমিন নামক এক প্রকার রাসায়নিক আছে যা আমাদের শরীরকে বিভিন্ন রোগের হাত থেকে রক্ষা করে। শুধু তাই নয়, হলুদের অনেক ধরনের উপকারিতা রয়েছে।
তাহলে হলুদের উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক, যার অধিকাংশ হয়তো এখনো আমাদের অজানা।
১। হলুদ ক্যান্সার প্রতিরোধক
কোলন, ত্বক এবং পেটের ক্যান্সার নিরাময় করতে হলুদের উপকারিতা অপরিসীম। হলুদে থাকা প্রতিরক্ষামূলক উপাদানগুলো ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা কমিয়ে দেয় এবং ক্যান্সারের বিস্তারকে নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারে।
অনেক গবেষণায় পাওয়া গেছে, যারা নিয়মিত কাঁচা হলুদ খান তাদের ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যায়।
এছাড়াও, হলুদ ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি বন্ধ করে শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। হলুদের মধ্যে থাকা কারকিউমিন যেকোনো প্রদাহের সাথে লড়াই করে শরীরকে প্রদাহ মুক্ত করে।
২। ওজন কমাতে হলুদের ভূমিকা
বর্তমান সময়ে আমাদের মধ্যে অনেকেই অতিরিক্ত ওজন নিয়ে সমস্যায় আছেন। কিন্তু একটি সামান্য উপাদান নিয়মিত গ্রহণের ফলে আপনি আপনার ওজনকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন।
কাঁচা হলুদে থাকে Anti-Obesity যা আমাদের শরীরে বাড়তি মেদ জমতে দেয় না। বরং, দেহের মেটাবোলিজমের হারও বাড়িয়ে দেয়। যার ফলে শরীরে বাড়তি মেদ জমার সম্ভাবনা কমে যায়।
হলুদে থাকা কারকিউমিন শরীরে ফ্যাট সংরক্ষণ করা কোষ গুলির উৎপাদনে বাধা সৃষ্টি করে। যথাযথ ডায়েট এবং ব্যায়ামের মাধ্যমে ওজন কম করার পাশাপাশি দৈনিক খাদ্য তালিকায় হলুদ রাখা খুবই জরুরি।
এজন্য, আপনিও যদি অতিরিক্ত ওজন নিয়ে দুশ্চিন্তায় থেকে থাকেন তাহলে প্রতিদিন হলুদ খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
সকালে ঘুম থেকে উঠেই অনেকের চা খাওয়ার অভ্যাস আছে। আপনিও চাইলে এই চায়ের সাথে ১ চিমটি পরিমাণ হলুদ গুঁড়ো মিশিয়ে চা বানিয়ে নিয়মিত পান করতে পারেন।
৩। লিভারের পরিশুদ্ধতায় হলুদ
আমাদের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ হচ্ছে লিভার। হলুদের মধ্যে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদান গুলো লিভারের সকল ধরনের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে হলুদের মধ্যে থাকা কারকিউমিন লিভারকে সুরক্ষিত রাখে। কারকিউমিন মূলত অ্যালকোহল যুক্ত ফ্যাটি লিভারের চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
এছাড়া, হলুদে থাকে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান, যা আমাদের শরীরের যেকোনো ধরনের খাদ্য থেকে হওয়া সংক্রমণ আটকাতে সাহায্য করে এবং লিভারে থাকা দূষিত টক্সিন বের করে দেয়। ফলে লিভারের ক্ষতি হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।
৪। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে
হলুদের উপকারিতা গুলোর মাঝে অন্যতম হলো এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। যারা নিয়মিত সকালে খালি পেটে হলুদ খান, তাদের শরীরে এমন কিছু উপাদানের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে থাকে যার প্রভাবে ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
এজন্য ডায়াবেটিক রোগীরা সকালে খালি পেটে হলুদ খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলবেন। কারকিউমিন রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কম করার পাশাপাশি রক্তের মধ্যে উপস্থিত ফ্যাটের পরিমাণকে নিয়ন্ত্রণে রাখে।
৫। হলুদ হৃদযন্ত্রকে সুরক্ষিত রাখে
হলুদ আমাদের হৃদযন্ত্রকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে। সারা বিশ্বে প্রতিবছর প্রায় ৩১ পার্সেন্ট মানুষ হৃদরোগের কারণে মারা যায়। হলুদে থাকা কারকিউমিন হৃদরোগ প্রতিরোধ করে।
এছাড়া, দেহের খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। নিয়মিত কাঁচা হলুদ খেলে স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়। হলুদ আমাদের হৃদযন্ত্রকে বিভিন্ন ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে।
তাই সুস্থ থাকতে অবশ্যই খাদ্য তালিকায় হলুদ রাখা উচিত। আপনি বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হলুদ খেতে পারেন যেমন, চা বা দুধের সাথে অল্প পরিমাণ হলুদ মিশিয়ে খাওয়া যায়। কিংবা রান্নার সবজি সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন।
৬। হলুদ হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
যারা নিয়মিত হলুদ খান তাদের পাচক রসের সমস্যা কমে যায়। সেই সাথে পেটে জমে থাকা গ্যাস অম্বল এর সমস্যা কমতে থাকে।
এছাড়া, হলুদ হজমের উন্নতি ঘটিয়ে প্রদাহজনিত পেটের সমস্যা, লিভারের রোগ এবং ডায়রিয়ার সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। হলুদে থাকা উপাদানগুলি গ্যাস্ট্রিক আলসারের প্রভাব পড়তে পারে।
তাই আপনার হজম ক্ষমতার উন্নতি করতে চাইলে নিয়মিত হলুদ খাওয়া জরুরি।
৭। বাতের ব্যথা নিরাময় করে হলুদ
যেকোনো ধরনের বাতের ব্যথা উপশমে হলুদের উপকরিতা রয়েছে। বাতের ব্যথা হাঁটুর ব্যাথা সহ যেকোন ধরনের পেশীর ব্যথা ক্ষেত্রে হলুদ ব্যবহার করা হয়। হরুদে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি (Anti-Inflammatory) উপাদানগুলো ভিতর থেকে ব্যথা নিরাময়ে সাহায্য করে। এর মধ্যে থাকা কারকিউমিন যে কোন প্রকারের প্রদাহ জনিত সমস্যা কম করতে সাহায্য করে।
আর্থাইটিস ও হৃদযন্ত্রের সমস্যায় যারা ভুগছেন তাদের ক্ষেত্রে হলুদ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। হলুদ রক্তে অক্সিজেন তৈরি করে। যা শরীরের বিভিন্ন কষে পৌঁছায় এবং শরীরের যেখানে যেখানে ব্যথা সৃষ্টি হয় সেই সকল জায়গায় রক্ত সঠিকভাবে হয়। এছাড়াও ব্যথা ও ফুলে যাওয়া কমিয়ে দেয়।
৮। হলুদ সর্দি কাশি নিরাময় করে
আমাদের দেশে ঋতু পরিবর্তনের সময় একটি সাধারণ সমস্যা হচ্ছে সর্দি-কাশি। ছোট থেকে বড় সকলের-ই এই সমস্যা দেখা দেয়। কারও কারও আবার জ্বরের কারণে বা এলার্জির কারনে সর্দি কাশি হয়ে থাকে। সর্বক্ষেত্রে হলুদ সর্দি কাশি জনিত সমস্যা সারাতে সাহায্য করে।
এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে আমরা অনায়াসে হলুদের সহায়তা নিতে পারি। এছাড়াও কাঁচা হলুদ Boost Immunity বাড়াতে সাহায্য করে এবং সর্দি-কাশির মত রোগ থেকে দূরে রাখে।
কাঁচা হলুদে থাকা ভিটামিন সি সর্দি-কাশি সারাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এছাড়া, হাঁপানির মতো শ্বাসজনিত রোগ গুলি থেকে রক্ষা করে।
৯। হলুদ প্রাকৃতিক জীবানুনাশক
হলুদের মধ্যে থাকা অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান টি যেকোনো ধরনের ব্যাকটেরিয়া সহজে ধ্বংস করে দিতে পারে। তাই বিভিন্ন ত্বকের সমস্যা, পেটের অসুখের ক্ষেত্রে হলুদের ব্যবহারে উপকারিতা পাওয়া যায়।
খাবারের মাধ্যমে পেটে যদি কোনরকম জীবাণু সংক্রমণ হয় সেক্ষেত্রে খালি পেটে কাঁচা হলুদ, গুঁড়া বা মধু দিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়। কাঁচা হলুদ বা হলুদ গুঁড়া আমাদের শরীরে প্রাকৃতিক জীবাণুনাশক হিসেবে কাজ করে।
১০। শরীরে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এর মাত্রা বৃদ্ধি করে
নিয়মিত হলুদ খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর মাত্রা বৃদ্ধি পায়। যা শরীরকে অ্যামিনিয়ার হাত থেকে রক্ষা করে। মেয়েদের ক্ষেত্রে অ্যামিনিয়া হওয়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়।
এজন্য মেয়েদের নিয়মিত হলুদ খাওয়া উচিত। তাছাড়া, হলুদ লহিত রক্তকণিকাকে রক্ষা করে এবং দেহের আয়রনের ঘাটতি মেটায়।
১১। কাঁচা হলুদ ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ায়
নিয়ম করে প্রতিদিন এক গ্লাস দুধের সাথে অল্প পরিমাণ হলুদ মিশিয়ে খেলে ত্বকের ভিতরে থাকা টক্সিক বের হয়ে যায়। সেইসাথে কোলাজেনের উৎপাদন বেড়ে যায়। ফলে ত্বক উজ্জ্বল হতে শুরু করে এবং বলিরেখা কমতে থাকে।
এছাড়াও ব্রণ ও ত্বকের কালো ছোপের মত সমস্যা দূর করে। শীতকাল সহ সারা বছরই যদি ত্বকের সৌন্দর্য ধরে রাখতে চান, তাহলে আজ থেকেই নিয়ম করে হলুদ খাওয়া শুরু করুন।
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, অ্যাগজিমার মত ত্বকের সমস্যার চিকিৎসা করতে হলুদ মিশ্রিত দুধ বিশেষ কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
১২। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
বিভিন্ন কারণে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যায়। যার ফলে শীতকালে আমাদের মধ্যে অসুস্থ হওয়ার হার বেশি লক্ষ্য করা যায়। শরীর সুস্থ রাখতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে চিকিৎসকগণ প্রতিদিন হলুদ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
১৩। হলুদ মাথার যন্ত্রণা কমায়
মাথার যন্ত্রণা শুরু হলেই এক গ্লাস হলুদ মিশানো গরম দুধ খেয়ে নিবেন। দেখবেন নিমিষেই মাথার যন্ত্রণা কমতে শুরু করেছে।
হলুদের মধ্যে থাকা কারকিউমিন এবং অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি উপাদান শরীরের প্রদাহ কমায়। ফলে দ্রুত মাথার যন্ত্রণা কমাতে সাহায্য করে।
১৪। হলুদ রক্ত পরিষ্কার করে
আমাদের শরীরকে ডিটক্সিফাই করতে হলুদ বিশেষ ভূমিকা রাখে। প্রাকৃতিক এই উপাদানটির মধ্যে থাকা কারকিউমিন রক্তে উপস্থিত ক্ষতিকারক টক্সিক বের করে দেয়। ফলে রক্তে সকল ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা কমায়। ক্যান্সারসহ নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা হ্রাস পায়।
১৫। হাড় জোড়া লাগাতে সহায়ক
প্রাচীনকাল থেকেই হাড়ের বিভিন্ন সমস্যায় হলুদের প্রলেপ ব্যবহার করা হয়। হাত-পা মচকে গেলে চুন হলুদ একসাথে লাগানোর কথা হয়ত অনেকেই জানি।
হাড় ভেঙে বা চটে গেলে কাঁচা হলুদ বেটে লাগালে উপকার পাওয়া যায়। হলুদে থাকা ইনফ্লেমেটরি উপাদান হাড়ের টিসু গুলিকে রক্ষা করে। সেই সাথে হলুদের কারকিউমিন উপাদানটি হাড়ের ক্ষয় রোধ করে।
১৬। দাঁতের ক্ষয় রোধ করে
নিয়মিত হলুদ খাওয়ার ফলে আমাদের দাঁতের উপরে থাকা এনামেলের আস্তরণকে রক্ষা করে। হলুদের অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান বিভিন্ন জীবাণুর সংক্রমণের হাত থেকে দাঁতকে সুরক্ষা দেয়।
মাড়ি থেকে রক্ত পড়া ও মুখের ভিতর ঘা সারাতে হলুদের উপকারিতা অনস্বীকার্য। বিভিন্ন টুথপেস্টে হলুদকে আবশ্যক উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
১৭। হাঁপানির সমস্যা দূর করে
হলুদের কারকিউমিন উপাদানটি শ্বাসনালীর পথ পরিষ্কার রাখে। সহজ ভাবে শ্বাস প্রশ্বাস নেওয়ার ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
যাদের হাঁপানির সমস্যা আছে তারা নিয়ম করে কাঁচা হলুদ বা হলুদ গুঁড়া খেতে পারেন। নিয়ম করে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক চিমটি পরিমাণ হলুদ গুঁড়া দিয়ে চা বানিয়ে অথবা এক টুকরো কাঁচা হলুদ খেলে হাঁপানির সমস্যায় বেশ উপকার পাবেন।
১৮। হলুদ মূত্রনালীর প্রদাহ কমায়
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, হলুদে উপস্থিত কারকিউমিন মূত্রনালীর প্রদাহ কমিয়ে নানা ধরনের সংক্রমণের হাত থেকে আমাদেরকে রক্ষা করে। নিয়মিত হলুদ খাওয়ার ফলে এর মধ্যে থাকা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণগুলো মূত্রনালীকে জীবাণু থেকে বাঁচায়।
১৯। কাটাছেঁড়া বা ক্ষত সারায়
হলুদের এন্টিবায়োটিক ও অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান শরীরের বিভিন্ন ক্ষত সারাতে সাহায্য করে। শরীরের কোন অংশে কেটে গেলে সাথে সাথে হলুদ গুঁড়া লাগালে রক্ত পড়া বন্ধ হয় এবং কাটা জায়গায় কোন জীবাণুর সংক্রমণ হওয়ার ঝুঁকি থাকে না, দ্রুত ব্যথা উপশম হয়।
২০। অনিদ্রা দূর করে ও স্মৃতিশক্তি বাড়ায়
হলুদ মিশানো দুধ অ্যামাইনো এসিড উৎপন্ন করে, যা আমাদের অনিদ্রা দূর করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে এক গ্লাস দুধ মেশানো দুধ খেলে এটি অনিদ্রা রোগের ওষুধ হিসেবে কাজ করে শান্তিপূর্ণ ঘুম হবে।
এছাড়া হলুদে থাকা কারকিউমিন মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রেখে স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে এবং বিষন্নতা দূর করে আমাদের মনকে ভাল রাখে।
হলুদের উপকারিতা নিয়ে শেষ কথা
মসলা হিসেবে আমাদের প্রতিদিনের রান্নায় হলুদ ব্যবহার হওয়া ছাড়াও এটি রূপচর্চা ও বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়। হলুদে অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান থাকায় বিশেষত আয়ুর্বেদিক ওষুধ পত্র তৈরিতে এটি বেশি উপযোগী।
হলুদ অনেক সমস্যা ও রোগের হাত থেকে মুক্তি দেয়। আর্টিকেলটিতে হলুদের উপকারিতা সম্পর্কে বিশদভাবে আলোচনা করা হয়েছে। এছাড়াও হলুদের আরো অনেক উপকারিতা রয়েছে।
তাই শরীর সুস্থ রাখতে আর দেরি না করে আজ থেকেই হলুদ খাওয়া শুরু করুন। নিয়মিত সকালে খালি পেটে কাঁচা হলুদ খেলে নিজেই হলুদের উপকারিতা উপলব্ধি করতে পারবেন, ইনশাআল্লাহ।