মার্কেটিং কি | what is Marketing?

মার্কেটিং কি

মার্কেটিং কি :  মার্কেটিং হলো সম্ভাব্য ক্লায়েন্ট বা গ্রাহকদের কাছে আপনার পণ্য এবং পরিষেবাগুলো পৌঁছানো এবং সেসব ক্রয়ে আগ্রহী করার প্রক্রিয়া।

মার্কেটিং শব্দটির সাথে আমরা সবাই মোটামুটিভাবে পরিচিত হলেও মার্কেটিং বলতে আসলে কি বুঝায় সেসম্পর্কে আমরা খুব কম লোকই জানি। একজন সাধরণ মানুষের কাছে marketing বলতে শুধুমাত্র সেল করাকে বুঝায়। এই ধারণা মোটেও সঠিক নয়।

মার্কেটিংকে একটি বিজনেসের মূল হাতিয়ার হিসেবে ধরা হয়। একজন বিজনেসম্যানের কাছে এই marketing শব্দটি খুব তাৎপর্য বহন করে। আপনি যদি একটি বিজনেস শুরু করার পরিকল্পনা করে থাকেন, তবে আপনাকে অবশ্যই marketing সম্পর্কে ভালোভাবে জ্ঞান আহরণ করে তবেই ব্যবসা শুরু করতে হবে।

এমন অনেকেই আছেন যারা মার্কেটিং বলতে কি বুঝায়, মার্কেটিং কৌশল সম্পর্কে ভালোভাবে না জেনেই কাজে নেমে পরেন। ফলস্বরূপ মাঝপথে দিশা হারিয়ে হতাশায় ভুগেন।

আমরা আপনাদের কথা ভেবেই আজকের এই আর্টিকেল লিখতে বসেছি। এই আর্টিকেলে আমরা, মার্কেটিং কি, মার্কেটিং কত প্রকার ও কী কী? মার্কেটিং কৌশল সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করার চেষ্টা করব ইন-শা-আল্লাহ।

মার্কেটিং কি | What Is Marketing In Bangla?

কিভাবে মার্কেটিং করবেনMarketing শব্দটি উচ্চারণ করলেই যে কারো মাথায় প্রথমেই আসে কোনো পণ্য সেল বা বিক্রি করা। মার্কেটিং বলতে কী শুধুই সেল করা বুঝায়?

জি না। Marketing শব্দটির পরিধি অনেক বিস্তৃত। সাধারণত মার্কেটিং বলতে বুঝায় কোনো ব্যান্ড (brand), বিজনেস, পণ্য (product) কিংবা সার্ভিসকে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে কিংবা যেকোনো উপায়ে মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া। 

অন্যভাবে বলা যায় মার্কেটিং হলো এমন একটি প্রক্রিয়া (Process) বা কৌশল যার মাধ্যমে বিভিন্ন উপায়ে নিজের কোনো বিজনেস, পণ্য ( product) বা সার্ভিসের উপর সম্ভাব্য গ্রাহকদের আগ্রহী করে ঐ পণ্য বা সার্ভিসের বিক্রি বাড়ানো।

মার্কেটিংয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো process বা প্রক্রিয়া। এটির সাথে গবেষণা করা (researching), প্রচার করা (promoting), বিক্রি করা (selling) এবং পণ্য বা সার্ভিস বিতরণ করা (distributing) জড়িত।

খুব কঠিন লাগছে কী? আচ্ছা, ব্যাপার না। চলুন একটি উদাহরণের মাধ্যমে সহজে বিষয়গুলো বুঝে নেওয়া যাক।

রিসার্চ: মনে করুন, আপনি একটি ল্যাপটপের বিজনেস শুরু করতে চাইতেছেন। এখন বাজারে এতো এতো ভালো ল্যাপটপ সেলার আছেন, তাঁদের রেখে ক্রেতারা কেনো আপনার ল্যাপটপ কিনতে যাবেন?

এখানেই হলো মূল গবেষণা। আপনাকে খুঁজে বের করতে হবে, গ্রাহকদের চাহিদা বা আগ্রহের বিষয়টি। গ্রাহকরা কেমন ফিচার, ডিজাইন কিংবা কতো দামের ল্যাপটপ কিনতে পছন্দ করেন? আপনাকে রিসার্চ করার মাধ্যমে সেটা বের করতে হবে।

প্রমোশন: এরপর আসি promoting নিয়ে। আপনাকে পণ্য নিয়ে বসে থাকলে তো হবে না। মানুষ সেই পণ্য কেনো কিনতে যাবে? এতে তাঁদের লাভ কী? এই যে বিষয়গুলো এগুলো খুব সুন্দরভাবে বিভিন্ন উপায়ে মানুষকে বুঝিয়ে দিতে হবে।

বিক্রি: আপনি গ্রাহকের চাহিদা পূরণ করতে পারলে তবেই গ্রাহক আপনার পণ্য কিনবে। এরপর পণ্য selling এবং distributing এর কাজটি আসবে। 

এই যে একটি পণ্য research  থেকে শুরু করে promoting, selling এবং distributing এর মধ্য দিয়ে যায়, মূলত এই সবগুলো process নিয়েই হচ্ছে marketing। 

আরো পড়ুন:  বাংলাদেশের সবচেয়ে ভাল অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম - সহজ অ্যাফিলিয়েট

মার্কেটিং কত প্রকার ও কী কী | Types of marketing

Marketing কে অনেকে অনেক ভাবে ভাগ করেছেন। তবে সাধারণত মার্কেটিংকে  দুই ভাগে ভাগ করা হয় । 

১.   Business to business marketing (B2B)

B-to-B  হচ্ছে এমন একটি marketing প্রসেস যেখানে একটি Business এর সাথে অন্য একটি Business এর লেনদেন হয়ে থাকে।

অর্থাৎ একজন ব্যবসায়ীর সাথে যখন অন্য আরেকজন ব্যবসায়ীর লেনদেন (transaction) হয় তখন থাকে Business to Business  marketing বলে।

এক্ষেত্রে একটি ব্যবসা কিন্তু সাধারণ consumer বা গ্রাহকের কাছে পণ্যের কোনোরকম প্রচারণা করছে না।

যখন একজন manufacturer সরাসরি একজন wholesaler কিংবা retailer এর কাছে কোনো পণ্য বা সেবা transaction করেন তখন তাকে B2B মার্কেটিং বলা যায়।

২. Business to Consumer (B2C)

B2C হচ্ছে এমন একটি marketing প্রসেস যেখানে একটি business  এর সাথে  ভোক্তা বা গ্রাহকদের মধ্যে কোনো ধরনের লেনদেন হয়ে থাকে।

অর্থাৎ এই মার্কেটিংয়ের প্রক্রিয়ায় একটি বিজনেস বা পণ্যের সরাসরি গ্রাহকের কাছে প্রচারণার কাজটি করা হয়ে থাকে।

মার্কেটিং এর গুরুত্ব

একটি বিজনেসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পার্ট বা অংশ হলো marketing. মার্কেটিং করা আসলেই কি প্রয়োজন? চলুন উদাহরণনের মাধ্যমে জেনে নেই।

ধরুন আপনি একটি মোবাইলের নতুন দোকান দিয়েছেন। সেখানে আপনি বিভিন্ন ফিচারের সবচেয়ে আকর্ষণীয় মোবাইগুলো দিয়ে আপনার দোকানটি সাজিয়েছেন।

এখন আপনার দোকানের কাজ তো শেষ। তো, আপনি যে মোবাইলের এই দোকানটি দিলেন, সেটা কতোজন মানুষ জানে? আচ্ছা বলুন তো, মানুষ যদি আপনার বিজনেস সম্পর্কে না’ই জানলো তাহলে আপনার পণ্যের বিক্রি হবে কী করে?

আচ্ছা এখন ধরুন, মোটামুটি প্রায় মানুষই আপনার দোকান সম্পর্কে জেনে গেলো। তো, বাজারে এতো এতো ভালো মানের মোবাইল রেখে, ক্রেতারা কেনো আপনার দোকানের ফোনটিই কিনবে? 

এই যে বাজারে এতো এতো মোবাইল রেখে ক্রেতারা আপনার দোকানের মোবাইলটিই কিনবে, এর পেছনের কারণই হলো ঐ পণ্যটির ভালোভাবে marketing করা।

বাংলাদেশে এখন অনেকগুলো ই-কমার্স সাইট রয়েছে, দারাজ, ইভালির বাইরে আপনি আমি আর কয়টার নাম জানি? তাদের নাম কেন জানি না সবাই? উত্তর কিন্তু ঘুরে ফিরে সেই marketing

তাহলে বুঝলেন তো, নিজের বিজনেস সম্পর্কে মানুষকে জানাতে এবং তার ভালো দিক তুলে ধরে মানুষের কাছে পণ্য বা সেবা পৌঁছে দিতেই মার্কেটিংয়ের প্রয়োজন। 

মার্কেটিং কিভাবে করতে হয়?

আমরা প্রায় সবাই Marketing শব্দটির সাথে পরিচিত। তবে কিভাবে মার্কেটিং করা হয়ে থাকে? এ বিষয়ে অনেকেই জানেন না।

মূলত তিনটি কৌশল বা পন্থা অবলম্বন করে মার্কেটিং করা হয়ে থাকে। চলুন সে-সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই ;

১. ট্রাডিশনাল মার্কেটিং ( Traditional marketing )

এই ট্রাডিশনাল মার্কেটিংয়ের সাথে কমবেশি আমরা সবাই পরিচিত। আমরা যদি এর একদম শুরুর দিকটায় তাকাই তাহলে দেখতে পাবো, একদল ফেরিওয়ালা মাথায় পণ্য নিয়ে মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পণ্যের গুণাগুণ তুলে ধরছেন।

তবে এই প্রথাটা এখন খুব একটা লক্ষ্য করা যায় না। যাবেই বা কী করে? প্রতিযোগিতার এই যুগে বসে যদি সেই ফেরিওয়ালাদের উপর ডিফেন্ড করা হয়, তবে ব্যবসার কী হাল হবে, ভেবে দেখুন তো?ট্রাডিশনাল মার্কেটিং

এরপর এতে নতুন মাত্রা যোগ হয়। পরবর্তীতে এই ট্রাডিশনাল মার্কেটিং করা হয় টিভি, রেডিও, টেম্পলেট, ব্যানার কিংবা সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দেওয়ার মাধ্যমে। 

তবে বর্তমানে অনেক ব্যবসায়ী এই ট্রাডিশনাল মার্কেটিং থেকে সরে যাচ্ছেন।

২. ডিজিটাল মার্কেটিং ( Digital marketing )

বর্তমানে বিজনেসের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং লাভজনক উপায় হচ্ছে এই Digital marketing. ডিজিটাল মার্কেটিং বলতে বুঝায় অনলাইনের মাধ্যমে নিজের বিজনেস, ব্র্যান্ড, পণ্য কিংবা সার্ভিসকে প্রমোট করা।

আরো পড়ুন:  ইমেইল মার্কেটিং কি | ইমেইল মার্কেটিং শেখার সহজ উপায়

এই ডিজিটাল মার্কেটিকে online marketing বা internet marketing ও বলা হয়ে থাকে।

মার্কেটিং কৌশল

বর্তমান যুগ হলো তথ্য-প্রযুক্তির যুগ। বিশ্বের প্রায় সব মানুষই এখন অনলাইনে এক্টিভ ভূমিকা পালন করছে। আর এই সুযোগটাকেই কাজে লাগাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। 

মানুষ এখন গতানুগতিক মার্কেট এর চেয়ে অনলাইনে কেনাকাটা করতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। তাছাড়া ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে খুব সহজেই টার্গেটেড গ্রাহক পাওয়া যায়।

গতানুগতিক মার্কেটিং হয়তো একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর কাছে স্বপ্নের নাম। কিন্তু এই ডিজিটাল মার্কেটিং ক্ষুদ্র, মাঝারি, কিংবা বড় সব ধরনের ব্যবসায়ীদের জন্যই একটা সুবর্ণ সুযোগ। 

এই ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের অনেকগুলো ভাগ রয়েছে।  চলুন জেনে নেওয়া যাক তাদের সম্পর্কে;

ডিজিটাল মার্কেটিং কত প্রকার ও কি কি?

ডিজিটাল মার্কেটিংকে অনেক ভাগে ভাগ করা হয়েছে। তবে আমরা এখানে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং লাভজনক কয়েকটি উপায় তুলে ধরবো।

  • সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং: অনলাইন কিংবা ইন্টারনেট মানুষের জীবনধারায় নিয়ে এসেছে নতুন মাত্রা।  মানুষ এখন সামাজিক যোগাযোগ বলুন কিংবা নিজেদের নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন কাজের জন্য সোশ্যাল মিডিয়াতে সক্রিয় থাকেন। বিশ্বের প্রায় সব মানুষই এখন সোশ্যাল মিডিয়ার সাথে যুক্ত। আর এই সুযোগটাকেই কাজে লাগিয়ে বর্তমানে ব্যবসায়ীরা নিজের পণ্য কিংবা সার্ভিসের প্রচারণা করছেন। বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া (যেমন; ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম ইত্যাদি) মাধ্যমে যে মার্কেটিং করা হয় তাকে social media marketing বলে।
  • অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং: বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় উপায় হচ্ছে এই affiliate marketing. বিভিন্ন ব্লগার,  ইউটিউবার কিংবা ফ্রিল্যান্সারদের কমিশন দেওয়ার মাধ্যমে এই ধরনের মার্কেটিং করানো হয়ে থাকে।
  • কন্টেন্ট মার্কেটিং: অনলাইনে কন্টেন্টের মাধ্যমে যে marketing করা হয়।
  • Paid advertisements: অনলাইনে এমন অনেক জনপ্রিয় advertisements platform রয়েছে যারা টাকার বিনিময়ে আপনার পণ্যের প্রচারণা করে থাকে। এমনই জনপ্রিয় কয়েকটি প্লাটফর্ম হলো Google ads, Facebook ads.
  • ইমেইল মার্কেটিং: ই-মেইলের মাধ্যমে যখন মার্কেটিংয়ের কাজটা করা হয়ে থাকে, তখন তাকে ইমেইল মার্কেটিং বলে। এক্ষেত্রে টার্গেটেড কাস্টমারদের ইমেইল এড্রেস সংগ্রহ করে তাদের ইমেইলে পণ্য বা বিজনেসের গুণাগুণ তুলে ধরা হয়।
  • এসইও মার্কেটিং: SEO কিংবা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এর মাধ্যমে যে marketing করা হয় থাকে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিন (যেমন: গুগল, ইয়াহু, বিং ইত্যাদি)  থেকে অর্গানিংভাবে ট্রাফিক নিয়ে আসা হয়।

৩. Word of mouth marketing

এই মার্কেটিংয়ের সাথে আমরা প্রায় সবাই জড়িত। আপনিও হয়তো ইতোমধ্যেই এই marketing করে ফেলেছেন। অবাক হচ্ছেন? ভাবছেন, আমি তো কোনো বিজনেসই করি না, তাহলে মার্কেটিং কখন করলাম?

অবাক হবেন না। চলুন একটু খোলাসা করে বলি।

এইতো কিছুদিন হলো, আমি একটি মোবাইল ফোন কিনেছি। তো আমি মোবাইলটি কেনার পূর্বে আমার কয়েকজন বন্ধুর থেকে সাজেশন নিলাম, কোন ফোনটা ভালো হবে?  তারা বেশ কয়েকজন আমাকে Realme কিনতে সাজেস্ট করলো। ফোনটির ফিচার, ডিজাইন আর স্বল্প বাজেটের মধ্যে হওয়ায় আমি ফোনটা কিনেই ফেললাম।

এখন এই যে আমি realme ফোনটা কিনলাম, কেনো বলুন তো? আমার বন্ধুরা আমাকে এর ভালো দিক তুলে ধরেছে বলেই তো?

এখন দেখুন তারা আমাকে এটা সাজেস্ট করার কারণ কী? তাদের তো কোনো কোম্পানি টাকা দেয় নি? এরপরও এটাকে সাজেস্ট করেছে, কারণ তাদের কাছে ফোনটি ভালো লেগেছে বলে।

তাহলে দেখুন তো, একজন ভোক্তা অন্য একজন কাস্টমারকে একটি পণ্যের গুণাগুণ তুলে ধরে কিন্তু ফ্রিতেই ঐ পণ্যটির marketing করে ফেলছেন। 

এভাবে আমরা প্রত্যেকেই প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো পণ্যের marketing করে ফেলছি। তবে এই মার্কেটিং শুধুমাত্র তখনই হয় যখন কোনো ভুক্তভোগী কিংবা কাস্টমার কোনো পণ্য বা সার্ভিস থেকে সন্তুষ্ট হোন।  

আরো পড়ুন:  ডিজিটাল মার্কেটিং কি | What is Digital marketing in Bangla

এখন বুঝলেন তো, word of mouth মার্কেটিং কী?

ডিজিটাল মার্কেটিং নাকি ট্রাডিশনাল মার্কেটিং?

আপনারা ইতোমধ্যেই জেনে গেছেন, ডিজিটাল এবং ট্রাডিশনাল marketing কী? অনেক নতুন ব্যবসায়ীর মনেই প্রশ্ন থাকে, ডিজিটাল মার্কেটিং করবো? নাকি ট্রাডিশনাল মার্কেটিং? চলুন কয়েকটি বিষয় আলোচনা করে ঠিক করে নেওয়া যাক আপনার জন্য কোনটি ভালো হবে?

ডিজিটাল মার্কেটিং ও ট্রাডিশনাল মার্কেটিংয়ের মধ্যে পার্থক্য:

ডিজিটাল মার্কেটিং টিউটোরিয়াল

  • ট্রাডিশনাল মার্কেটিংয়ে বেশি পরিমাণ বিনিয়োগ বা পুঁজির প্রয়োজন। অন্যদিকে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে খুব একটা পুঁজির প্রয়োজন পরে না।
  • ট্রাডিশনাল মার্কেটিংয়ে প্রচারের কাজটি করা হয় টিভি,  রেডিও কিংবা সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দেওয়ার মাধ্যমে।  আচ্ছা বলুন তো, বর্তমানে কয়জন মানুষ রেডি শুনেন কিংবা সংবাদপত্র পড়েন? সংখ্যাটা খুবই কম। কারণ মানুষ বর্তমানে ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া থেকেই সমগ্র তথ্য আহরণ করে থাকেন। তাই এক্ষেত্রে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের মাধ্যমেই বেশি মানুষের কাছে নিজের পণ্যের প্রচারণা সম্ভব। 
  • একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর কিংবা উদ্দোক্তার পক্ষে  ট্রাডিশনাল মার্কেটিং করা সম্ভব নয়। কিন্তু ছোট-বড় সব ধরনের ব্যবসায়ীই ডিজিটাল মার্কেটিং করতে পারবেন। 
  • ট্রাডিশনাল মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে টার্গেটেড অডিয়েন্স পাওয়া যায় না। যা ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে খুব সহজেই সম্ভব হয়ে উঠে।
  • ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে প্রচারণার কাজটি ট্রাডিশনাল মার্কেটিংয়ের তুলনায় অনেক দ্রুত করা যায়।

উপরে আমরা ডিজিটাল মার্কেটিং এবং ট্রাডিশনাল মার্কেটিংয়ের পার্থক্যগুলো তুলে ধরেছি। বর্তমান এই প্রতিযোগিতার সময়ে আপনি যদি ট্রাডিশনাল মার্কেটিং নিয়ে পরে থাকেন, তবে আপনি সফলতার মুখ নাও দেখতে পারেন। এটা হলফ করে বলা যায়, সুদূর ভবিষ্যতে সফল ব্যবসায়ীদের মূল টার্গেটই হবে ডিজিটাল মার্কেটিং। 

তাই আপমি যদি জিজ্ঞেস করেন, ডিজিটাল নাকি ট্রাডিশনাল মার্কেটিং করবেন? তবে আমি বলবো আপনি যদি খুব কম খরচ করে সফলতা পেতে চান, তবে ডিজিটাল মার্কেটিং হতে পারে আপনার জন্য সেরা চয়েস।

মার্কেটিং এর কৌশল

মার্কেটিং করা খুব একটা সহজ কাজ না। তবে এটা যে খুব কঠিন, এমনও কিন্তু না। মার্কেটিং এর কৌশল অবলম্বন করে যেকোনো ব্যবসায়ী খুব সহজেই সাফল্য পেতে পারেন। মার্কেটিং কৌশলগুলো জেনে নেওয়া যাক;

মার্কেটিং কৌশল

  • শুরুতেই আপনাকে গ্রাহক বা কাস্টমারদের চাহিদা বা আগ্রহের বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। এমন কিছু মার্কেটিং করুন যা আসলেই কাস্টমাররা চেয়ে থাকেন বা পছন্দ করেন। 
  • গ্রাহকরা কেমন দামে পণ্য কিনতে বেশি আগ্রহবোধ করেন? বিষয়টি আপনার বিবেচনায় থাকতে হবে। এমন দামের পণ্য নিয়ে মার্কেটিং শুরু করলেন যা কাস্টমারদের ধরাছোয়ার বাইরে। তাহলে কি হবে?
  • প্রচারণার কাজটি সুন্দরভাবে করার চেষ্টা করুন। অন্যদের প্রোডাক্ট রেখে গ্রাহকরা কেনো আপনাদের পণ্য কিনবেন? বিষয়টাতে জোর দিন। এমনভাবে বিষয়টিকে তুলে ধরুন যেনো গ্রাহকেরা নিজ থেকেই আপনার পণ্য কিনতে আগ্রহবোধ করেন।
  • বর্তমানে মানুষ অনলাইনে কেনাকাটার বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। তাই আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং করার কথা ভাবতেই পারেন। অনেক সফল ব্যবসায়ীর কাছেই বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিং প্রথম স্থানে জায়গা করে নিয়েছে।

আমরা এখানে মার্কেটিংয়ের কিছু কৌশল তুলে ধরেছি। আপনি যদি আপনার মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে এই কৌশলগুলো অনুসরণ করার চেষ্টা করেন, তাহলে আপনি ব্যবসায় উন্নয়ন করতে পারবেন বলে আশা করি।

মার্কেটিং নিয়ে শেষ কথা

একটি বিজনেসের মূলমন্ত্রই হলো মার্কেটিং।  মার্কেটিংয়ের কাজটা যদি সঠিকভাবে করা যায়, তবে ব্যবসায় সাফল্য আসতে বাধ্য। 

একটি বিজনেসের সাফল্য অনেকাংশেই নির্ভর করে এই মার্কেটিংয়ের উপর। অনেক অনেক সফল ব্যবসায়ী ব্যবসায় সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেন এই মার্কেটিংয়েই।

আপনি যদি একটি নতুন বিজনেস শুরু করতে চান, তবে শুরুতেই আপনাকে মার্কেটিং কি সেসম্পর্কে ভালোভাবে আইডিয়া নিতে হবে।

আমরা এই আর্টিকেল মার্কেটিং সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করছি। আশা করছি আপনারা এটি থেকে উপকৃত হবেন। এছাড়াও মার্কেটিং নিয়ে আপনাদের মনে যদি কোনো প্রশ্ন ঘুরপাক খায় তবে আমাদেরকে জানিয়ে দিন কমেন্ট করে।

2 thoughts on “মার্কেটিং কি | what is Marketing?”

    1. আপনার কাজে লেগেছে জেনে ভাল লাগলো, ধন্যবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top