ইমেইল মার্কেটিং কি | ইমেইল মার্কেটিং শেখার সহজ উপায়

ইমেইল মার্কেটিং

ইমেইল মার্কেটিং কি: ইমেইল মার্কেটিং বলতে মেইল ব্যবহারকারী টার্গেট গ্রাহকদের কাছে কোন পণ্য বা সেবা সম্পর্কে প্রচারণামূলক মেসেজ পাঠানো।

ইমেইল মার্কেটিং যদিও ডিজিটাল যোগাযোগের প্রাচীনতম রূপগুলির মধ্যে একটি, তবে ব্যবহারের ক্ষেত্রে ইমেইল এখনও সর্বোচ্চ রাজত্ব করছে।

অবশ্যই, আপনার শ্রোতা এবং গ্রাহকদের সাথে যোগাযোগের অন্যান্য নতুন পদ্ধতি রয়েছে যেমন, সোশ্যাল মিডিয়া, লাইভ চ্যাট, ইত্যাদি। কিন্তু, 4 বিলিয়নেরও বেশি ব্যবহারকারী নিয়ে ইমেইল এখনও মার্কেটিং চ্যানেলের রাজা।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, এসইও এবং সোশ্যাল মিডিয়াকে পরাজিত করে ইমেইল মার্কেটিং এখনও সবচেয়ে কার্যকর মার্কেটিং পদ্ধতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। পরিসংখ্যান বলছে, ইমেইল মার্কেটিং এর জন্য খরচ করা প্রতি ১ ডলার এর বিনিময়ে গড়ে ৩৮ ডলার লিড জেনারেট করতে পারে। সুতরাং, ইমেইল মার্কেটিং আবশ্যিকভাবে মার্কেটিং দুনিয়ায় টপ পজিশনে থাকার যোগ্য দাবিদার।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি সত্ত্বেও লোকজন অন্যান্য প্ল্যাটফর্মের চেয়ে ই-মেইল বেশি ব্যবহার করেন। পরিসংখ্যান থেকে দেখা যাচ্ছে যে, বেশিরভাগ মানুষেরই ইমেইল এড্রেস রয়েছে, এবং এই সংখ্যা প্রতি বছর বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইমেইল মার্কেটিং কেন করবেনএটা বুঝতে অবশ্য ডাটা এনালিস্ট হওয়ার দরকার নেই। আপনার এমন কোনো সোশ্যাল মিডিয়া আছে, যেখানে ই-মেইল একাউন্ট দরকার হয়নি? প্রযুক্তি সম্পর্কে জ্ঞান থাক বা না থাক, সোশ্যাল মিডিয়ায় এড হতে হলেও আপনার ই-মেইল একাউন্ট দরকার হচ্ছে। সুতরাং, কেনইবা ই-মেইল গ্রাহক বাড়বে না!

উপরন্তু, ইমেইল মার্কেটিং এ আপনাকে সার্চ ইঞ্জিন বা সোশ্যাল মিডিয়া অ্যালগরিদম পরিবর্তন নিয়েও চিন্তা করতে হবেনা। সম্পূর্ণ কন্ট্রোল আপনার হাতে থাকবে। যখন, যাদের কাছে পৌঁছানো দরকার তাদের ই-মেইল পাঠাতে পারবেন।

আর এজন্যই একটি সফল ইমেইল মার্কেটিং ক্যাম্পেইন করা আগের চেয়ে বেশি অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

তবে অধিকাংশ মানুষই জানে না, কিভাবে সঠিকভাবে ইমেইল মার্কেটিং করতে হয়। আপনিও হয়তো ইতিমধ্যে আপনার ইনবক্সে এমন বাজে মার্কেটিং দেখেছেন, যা দেখার পর ইনবক্স থেকে হয়তো স্প্যাম ফোল্ডারেও পাঠিয়ে দিয়ে থাকতে পারেন।

আপনার মার্কেটিং কৌশলে যেন সেরকম কোনো ভুল না হয় এজন্যই এই ইমেইল মার্কেটিং টিউটোরিয়াল এর মাধ্যমে ইমেইল মার্কেটিং শেখার সহজ উপায় অবলম্বন করে সফল মার্কেটিং করার জন্য প্রয়োজনীয় টিপস এবং কৌশলগুলো শিখে নিবো।

একনজরে সম্পূর্ণ আর্টিকেল

ইমেইল মার্কেটিং কি | What is E-mail Marketing in Bangla?

ইমেইল মার্কেটিং হলো ইমেইল এড্রেস ব্যবহার করে বিপুল পরিমাণে মানুষের কাছে প্রচারণামূলক বার্তা পাঠানোর কাজ। এটি সাধারণত বিক্রয় বা লিড জেনারেট করার জন্য করা হয়।

মনে রাখবেন: তাদের ইনবক্সে আপনি একজন অতিথি

ইন্টারনেটে আমরা যেখানেই যাই সেখানেই এখন বিভিন্ন বাধা আর বিজ্ঞাপন, যা প্রায়শই বিরক্তির কারণ হয়ে ওঠে। আপনার মতো অনেকেই তাদের ইমেইলে বার্তা পাঠায়, এবং প্রায় সকলের উদ্দেশ্যই এক। সুতরাং, তাদের কাছে আপনিও অন্যান্য হাজার হাজার মার্কেটারদের মতোই একজন। কিন্তু, আপনাকে কৌশলে তাদের কাছে প্রিয় হয়ে উঠতে হবে।

কারও ইনবক্সে প্রবেশ করা তাদের বাড়িতে ডিনারের জন্য আমন্ত্রিত হওয়ার মতোই। যদি তারা আপনাকে আপনার জুতা খুলে ভিতরে প্রবেশ করতে বলে, আপনিও নিশ্চয়ই স্ব-সম্মানেই তা করবেন।

ইমেইল মার্কেটিং এর ক্ষেত্রেও তাই, তাই শুরু করার আগে আমি আপনাকে মনে করিয়ে দিতে চাই যে, সর্বদা আপনার সর্বোত্তম আচরণ ফুটিয়ে তুলুন এবং মনে রাখবেন আপনি তাদের ইনবক্সে আপনি একজন অতিথি মাত্র।

এখন, আসুন কীভাবে কার্যকর ইমেইল মার্কেটিং কৌশল তৈরি করা যায় সে সম্পর্কে আলোচনা করা যাক!

ইমেইল মার্কেটিং করার সহজ উপায়

ইমেইল মার্কেটিং কার্যকরী ডিজিটাল মার্কেটিং কৌশলগুলোর মধ্যে অন্যতম হলেও এটা খুব একটা কঠিন নয়। মোটামুটি সম্পূর্ণটাই স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে করা যায়।

একটি কার্যকর ইমেইল মার্কেটিং করার জন্য তিনটি অপরিহার্য উপাদান থাকা প্রয়োজন:

১. সঠিক ইমেইল তালিকা

সফল ইমেইল মার্কেটিং করার জন্য আপনার একটি সক্রিয় ইমেইল তালিকা প্রয়োজন। শুধুমাত্র অ্যাক্টিভ ইমেইল হলেই হবে না, আপনার ব্রান্ড সম্পর্কে তাঁর ইন্টারেস্ট থাকাটাও গুরুত্বপূর্ণ।

এক্ষেত্রে, আপনার ব্র্যান্ড থেকে যারা পূর্বে সার্ভিস বা প্রোডাক্ট নিয়েছে, আপনার নিকট থেকে বিভিন্ন মার্কেটিং তথ্য জানতে আগ্রহী শুধু তাদেরকে পাঠানোটাই সবচেয়ে বেশি কার্যকর। কেননা, আমরা কেউই প্রয়োজনের বাইরে ইমেইল পেতে পছন্দ করি না, অযাচিত ইমেইল আমরা সবাই স্প্যাম ফোল্ডারেই পাঠিয়ে দেই।

একটি ইমেইল লিস্ট তৈরি করার অনেক উপায় আছে। সবচেয়ে সহজ উপায়গুলোর একটি হলো অফার তৈরি করা (এটিকে লিড ম্যাগনেটও বলা হয়)। আপনার টার্গেট অডিয়েন্সদের তাদের ইমেইল ঠিকানার বিনিময়ে গোপন কুপন কোড দিতে পারেন।

২. ইমেইল মার্কেটিং পরিষেবা প্রদানকারী

একটি ইমেইল সার্ভিস প্রোভাইডার বা ইমেইল মার্কেটিং প্ল্যাটফর্ম হলো এমন একটি সফটওয়্যার যা আপনার ইমেইল তালিকা ম্যানেজ করতে মেইল পাঠাতে তদুপরি মেইল মার্কেটিং করতে সাহায্য করে।

আরো পড়ুন:  ডিজিটাল মার্কেটিং কি | What is Digital marketing in Bangla

এসব টুল খুব সহজেই অনেকটা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইমেইল টেমপ্লেট ডিজাইন, সম্পাদন ও মেইল পাঠাতে সাহায্য করে। জনপ্রিয় কিছু ইমেইল মার্কেটিং সার্ভিস প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান হলো mailchimp, awber, convertkit, ইত্যাদি।

ইমেইল পাঠানোর পর আপনার সেসব গ্রাহকের মনোভাবও ট্র্যাক করতে পারবেন। কতজন মেইলটি ওপেন করেছে, আপনার দেওয়া লিঙ্কে কতজন ক্লিক করেছে ইত্যাদি ট্র্যাক করে প্রতিটি গ্রাহকের ইন্টারেস্ট সম্পর্কে জানতে পারবেন, যা পরবর্তী মার্কেটিং মেইল গুলো আরো বেশি লিড জেনারেশন আনবে।

৩. স্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত লক্ষ্য

আপনি বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়িক লক্ষ্য অর্জন করার জন্য ইমেইল মার্কেটিং ব্যবহার করতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ:

  • বিক্রয় বৃদ্ধি
  • ব্র্যান্ড সচেতনতা বৃদ্ধি
  • লিড তৈরি
  • গ্রাহকদের সাথে কানেক্টেড থাকার জন্য
  • গ্রাহকের বিশ্বস্ততা বৃদ্ধির জন্য

একটি সফল ইমেইল মার্কেটিং ক্যাম্পেইন চালানোর জন্য অবশ্যই আপনার একটি ইমেইল তালিকা, ইমেইল সার্ভিস প্রোভাইডার এবং লক্ষ্য থাকতে হবে। এগুলো গুছানোর পর আপনি মার্কেটিং এর দিকে আগাতে পারেন।

  • প্রথম ধাপ হল গ্রাহকের গ্রাহকের ইন্টারেস্ট অনুযায়ী ইমেইল তালিকা ভাগ করুন।
  • এরপরে, ভোক্তাদের একশন নিতে আগ্রহী করে তুলতে একটি ইমেইল বা সিরিজ ইমেইল তৈরি করুন (আপনার লক্ষ্য)।
  • অবশেষে, ইমেইল পাঠাতে এবং অটোমেটিক্যালি Email Marketing ক্যাম্পেইন পর্যবেক্ষণ করতে আপনার ইমেইল মার্কেটিং টুলস ব্যবহার করুন।

ইমেইল মার্কেটিং এর সুবিধা এবং অসুবিধা

অন্য যে কোন মার্কেটিং মিডিয়ার মতই ইমেইল মার্কেটিংয়েও ভালো-মন্দ দিক আছে। আসুন সংক্ষিপ্তভাবে উল্লেখযোগ্য কিছু সুবিধা-অসুবিধা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক:

ইমেইল মার্কেটিং এর সুবিধা

১. পূর্ব অনুমতি-ভিত্তিক মার্কেটিং

যখন কোন গ্রাহক তাদের ইমেইল ঠিকানা দিয়ে আপনাকে বিশ্বাস করে, তখন এটি তাদের ঘরের ভার্চুয়াল চাবি দেওয়ার সমতুল্য।

বিনা অনুমতিতে কারো কাছে নিজের প্রোডাক্ট নিয়ে মার্কেটিং করার চেয়ে অনুমতি পাওয়া কোনো গ্রাহকের কাছে মেইল পাঠানোয় এংগেজমেন্ট এবং কনভার্সন রেট সবসময়ই বেশি থাকে। কেননা, তিনি পূর্ব থেকেই আপনার ব্রান্ড নিয়ে আগ্রহী।

২. ডিরেক্ট অ্যাক্সেস

আপনি তাদের সময়সূচীতেই গ্রাহকদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন। উপরন্তু, যেহেতু লোকেরা প্রতিদিন তাদের ই-মেইল চেক করেন, তাই আপনার ইমেলটিও দেখা হবে এই সম্ভাবণা বেশি থাকে।

৩. অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণ

অন্যান্য বেশিরভাগ মার্কেটিং প্ল্যাটফর্মগুলোর মালিক আপনি নন। যদি প্ল্যাটফর্মটি বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে আপনার সমস্ত পরিশ্রম সাথে সাথে ডুবে যাবে।

কিন্তু, ই-মেইলের মাধ্যমে আপনি আপনার গ্রাহকদের সাথে যে সম্পর্ক তৈরি করবেন তার মালিক একমাত্র আপনি।

৪. পার্সোনাল চয়েজ ভিত্তিক মার্কেটিং

সাইকোগ্রাফিক ডেটা ব্যবহার করতে পারেন। গবেষণায় দেখা গেছে যে বিভাগীয় এবং ব্যক্তিগতকৃত মার্কেটিং ৭৬০ শতাংশেরও বেশি লীড জেনারেট করে।

মেইল কালেকশন করার সময় গ্রাহকের পার্সোনাল ইন্টারেস্ট সম্পর্কে জেনে নেওয়া এবং ক্যাম্পেইন পরিসংখ্যান ট্র্যাক করার মাধ্যমেই প্রয়োজনীয় সাইকোগ্রাফিক ডেটা বের করতে পারেন।

সবাইকে সব বিষয়ে মেইল পাঠিয়ে বিরক্তির কারণ না হয়ে তাদের পছন্দকে গুরুত্ব দিন। কোন গ্রাহক কি ধরনের প্রোডাক্ট মার্কেটিং এ ক্লিক করছেন সেগুলো ট্র্যাক করে পরবর্তীতে মেইল পাঠানো যায়।

৫. পরিমাপযোগ্য

মার্কেটিং ক্যাম্পেইনের কার্যকারিতা পরিমাপ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং স্বয়ংক্রিয় ইমেইল মার্কেটিং আপনার প্রচার অভিযানকে পরিমাপ করার সুবিধা দিবে। যা আপনার লীড জেনারেট বৃদ্ধি করতে পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে সাহায্য করবে।

ইমেইল মার্কেটিং এর অসুবিধা

১. কঠিন প্রতিযোগিতা

শত শত ই-মেইলের ভীরে দাড়িয়ে থাকা বেশ চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। আপনার ইমেইলগুলো আকর্ষণ করা ও ওপেন করা নিশ্চিত করতে আপনাকে অবশ্যই সৃজনশীল হতে হবে।

২. একটি ইমেইল তালিকা দরকার

ইমেইল মার্কেটিং সফল করার জন্য আপনার অবশ্যই ইতিমধ্যে একটি ইমেইল তালিকা থাকতে হবে। যদি আপনি কিনতে যান, তবে অনেকসময়ই সঠিক ক্লায়েন্ট মেইল এড্রেস পাওয়া যায় না। উদাহরণস্বরূপ, আপনি পোশাক নিয়ে মার্কেটিং করছেন, অথচ আপনার মেইল লিস্টের বেশিরভাগ এড্রেসই ইলেক্ট্রিক পণ্য কিনতে আগ্রহী কাস্টমারের! তাহলে কি আশানুরূপ বিক্রি বাড়বে?

৩. নেভিগেট করার জন্য জটিল নিয়ম এবং প্রবিধান

বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ইমেইল ব্যবহার করার জন্য অনেক নিয়ম আছে। সাধারণ উদাহরণগুলির মধ্যে রয়েছে CAN-SPAM, GDPR, এবং CCPA. যদিও সবগুলো বাংলাদেশের জন্য প্রযোজ্য নয় তবে, ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটিং করার জন্য অবশ্যই মেনে চলতে হবে। এই সমস্ত নিয়মের কারণে আপনি অযাচিত ইমেইল পাঠাতে পারবেন না।

দুর্ভাগ্যবশত, কিছু গ্রাহক ইমেইল লিস্ট বা তালিকায় সাবস্ক্রাইব করার পরেও আপনার পাঠানো মেইলগুলোকে স্প্যাম হিসাবে রিপোর্ট করে। ফলস্বরূপ, আপনার খ্যাতিতে আঘাত আনে।

৪. Delivery এবং Deliverability সমস্যা

রিসিভারের ইনবক্সে আপনার ইমেইল পৌঁছানোর কোনো নিশ্চয়তা নেই। কার্যকর ইমেইল মার্কেটিং চালানোর জন্য, আপনাকে অবশ্যই ডেলিভারি এবং ডেলিভারিবিলিটি বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ করতে হবে।

ইমেইল মার্কেটিং এর নমুনা বা ‍উদাহরণ

আরো ভালোভাবে বুঝার জন্য দুইটি সুন্দর এবং কৌশলী ইমেইল মার্কেটিং নমুনা দেখে নেওয়া যাক!

১. Teaonic: টিওনিক একটি ই-কমার্স ব্র্যান্ড যা অরগানিক ও স্বাস্থ্যকর চা তৈরিতে প্রসিদ্ধ।

বিষয় লাইন: Getting Low On Wellness?ইমেইল মার্কেটিং নমুনাএই ই-মেইলকে কোন কোন জিনিস কার্যকরী করে তুলেছে?

  • অসাধারণ সাবজেক্ট লাইন: সাবজেক্ট লাইন টার্গেট অডিয়েন্সের প্রধান দূর্বলতাকে মনে করিয়ে দিয়েছে, যা তাদের স্বাস্থ্যের উন্নতির দিকে মনোনিবেশ করতে আগ্রহী করে তুলবে।
  • Leverages color psychology: উজ্জ্বল ও উষ্ণ রং সুখের অনুভূতি সৃষ্টি করছে।
  • Well-timed: ই-মেইলটি এমন লোকদের লক্ষ্য করে পাঠানো হয়েছে যারা ইতিমধ্যে পণ্যটি কিনেছেন এবং গ্রাহকের স্টক মোটামুটি শেষের দিকে চলে এসেছে।

২. ব্লুহোস্ট : ব্লুহোস্ট তার ডোমেইন ও হোস্টিং পরিষেবার জন্য সুপরিচিত। ব্লুহোস্ট তাদের ওয়েবসাইট বিল্ডিং পরিষেবা দেওয়া সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

সাবজেক্ট লাইন: Bluehost’s new Website Builder makes building simple.ইমেইল মার্কেটিং টেমপ্লেট

  • বৈশিষ্ট্য নয়, সুবিধা বিক্রি: সুবিধার দিকে ফোকাস করে লেখা মেইল কাস্টমারকে আরো বেশি কৌতুহল করে তুলে।
  • ক্লিন ডিজাইন: সিম্পল ডিজাইন ইমেইলকে নান্দনিক করে তুলে যা দেখতে সুন্দর লাগার পাশাপাশি পড়তেও বেশ সহজ মনে হয়।
  • চমৎকার টার্গেটিং: ব্লুহোস্ট জানে তাদের তালিকায় থাকা গ্রাহকদের মধ্যে বেশিরভাগই মূলত টেকনিক্যাল দক্ষতা ছাড়াই ক্ষুদ্র অনলাইন ব্যবসার মালিক। তাই, ই-মেইলটিতে তাদের প্রয়োজন ও অভিজ্ঞতার দিকে লক্ষ্য রেখে সহজতর টেকনিক্যাল টার্ম ব্যবহার করা হয়েছে।

কিভাবে অটোমেটিক ইমেইল মার্কেটিং করবেন?

যদিও অটোমেশন প্রক্রিয়াটি একটি ইএসপি (ইমেইল মার্কেটিং সার্ভিস প্রোভাইডার) থেকে অন্যটিতে অন্যরকম হয়, তবে আপনার ইমেইল মার্কেটিং স্বয়ংক্রিয় করার সকল কোম্পানীতেই কিছু কমন বিষয় বা স্টেপ রয়েছে।

১. ইমেইল লিস্ট ছোট ছোট ক্যাটেগরিতে ভাগ করে নিন

একটি সফল ক্যাম্পেইন নির্ভর করে সঠিক কাস্টমারের কাছে মেইল পাঠানোর মাধ্যমে। তাছাড়া কাস্টমারের স্প্যাম তালিকায় যেতে না চাইলেও এটা বেশ প্রয়োজনীয়।

আরো পড়ুন:  টাকা ইনকাম করার সহজ উপায় বাংলাদেশে (২০২৩)

আপনাকে যে ইলেক্ট্রিক পণ্য সম্পর্কে জানার জন্য সাবস্ক্রাইব করেছে, তিনি নিশ্চয়ই আপনার থেকে কসমেটিক্স পণ্যের মার্কেটিং মেইল আশা করেন না। এতে আপনার বিক্রি তো বাড়বেই না, বরং আন-সাবস্ক্রাইবার সংখ্যাই বৃদ্ধি করবে।

আপনার যদি একাধিক পরিসেবা/প্রোডাক্ট থাকে, তবে সাবস্ক্রাইব করার সময়ই গ্রাহককে তালিকা পছন্দ করার সুযোগ দিন।

২. একটি স্মার্ট ওয়ার্কফ্লো ডিজাইন করুন

ক্যাম্পেইন চলাকালীন সময়ে গ্রাহকের এক্টিভিটির উপর নির্ভর করে আরো কিছু রিপ্লাই মেইল পাঠানোর দরকার হতে পারে। এটা ম্যানুয়ালি না পাঠিয়ে আগে থেকেই সিরিজ ইমেইল তৈরি করে অটোমেট করুন।

৩. সঠিক ট্রিগার নির্ধারণ করুন

ইমেইল অটোমেশনে ট্রিগার বলতে নির্দিষ্ট তারিখ, ইভেন্ট সম্পর্কিত বা সাবস্ক্রাইব করার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বার্তা পাঠানো। বোঝার সুবিধার্থে কয়েকটি উদাহরণ দেখে নেওয়া যাক!

ট্রিগার: নতুন সাবস্ক্রাইবার (New subscriber)
ইমেইল: ওয়েলকাম মেসেজ!

পরিসংখ্যান বলছে,

  • ৭৪% মানুষ একটি মেইলিং লিস্টে সাবস্ক্রাইব করলে একটি ওয়েলকাম ইমেইল পাওয়ার আশা করে।
  • ওয়েলকাম মেইল স্ট্যান্ডার্ড মার্কেটিং ইমেইলের চেয়ে ৪ গুণ বেশি পড়া হয় এবং ৫ গুণ বেশি ক্লিক পড়ে।
  • অন্যান্য প্রচারমূলক মার্কেটিং মেইলের চেয়ে 320% বেশি আয় হয়।

তাই, যখন আপনি একজন সাবস্ক্রাইবার পান, তখন উষ্ণ অভ্যার্থনা পাঠিয়ে কোন রকম অতিরিক্ত প্রচেষ্টা ছাড়াই তাকে গ্রাহকে কনভার্ট করতে পারছেন।

যদি আপনার ওয়েবসাইট একটি ই-কমার্স স্টোর হয়, প্রথমবার ভিজিট করা ভিজিটরদের অনেকেই কার্ট করলেও অর্ডার করবেন না। তাদের জন্য ওয়েলকাম মেইলের পরিবর্তে নিচের মেসেজটিও পাঠাতে পারেন।

ট্রিগার: কার্ট পরিত্যাগ (Cart abandonment)
ইমেইল: কিছু কি ভুলে গেলেন?

কার্টে যোগ করার জন্য মাত্র একটি ক্লিক করার প্রয়োজন হয় কিন্তু, সেটাকে ফলো করে প্রোডাক্টটি অর্ডার করতে অনেক স্টেপ পার করতে হয়। একজন অনলাইন ক্রেতা অর্ডার করার আগে অনেক কিছু ভাবেন যেমন,

  • ডেলিভারী খরচ
  • প্রোডাক্ট কোয়ালিটি
  • সাইট অথরিটি
  • রেজিস্ট্রেশন করার ঝামেলা কিংবা
  • ডাটা নিরাপত্তা

এসব কিছুর কারণে প্রায় ৭০% ই-কমার্স ক্রেতা তার কার্ট ছেড়ে চলে যান। কিন্তু আপনার ছোট একটি Cart abandonment বার্তা তাকে গ্রাহক হিসেবে ফিরিয়ে নিয়ে আসতে পারে।

আপনার শ্রোতাদের সাথে পরিচিত হওয়ার সময়োপযোগী অফার বার্তা পাঠান। যা তাদেরকে পুণরায় আপনার শপ থেকে পণ্য কিনতে উৎসাহী করবে।

ট্রিগার: নতুন পণ্য বা প্রচার (New products or promotions)
ইমেইল: আপনার জন্য বিশেষ কিছু!

সেরা ইমেইল মার্কেটিং কৌশল

সফল ইমেইল মার্কেটিং সম্পন্ন করতে ক্যাম্পেইন ডিজাইন করার সময় বেশ কৌশলী হতে হবে। এখানে আমি ইমেইল মার্কেটিং করার সেরা কিছু কৌশল তুলে ধরছি।

১. সঠিক তালিকা তৈরির কৌশলগুলি ব্যবহার করুন

Email Marketing সাবস্ক্রাইবার তালিকার কোয়ালিটির উপর অনেক বেশি নির্ভরশীল। উদাহরণস্বরূপ, একটি ব্লগ সাবস্ক্রাইবার লিস্ট থেকে মেইল সংগ্রহ করে নতুন কোন ব্লগের জন্য সফল হলেও ই-কমার্স শপের জন্য অবশ্যই ফ্লপ করবে।

২. ইমেইল তালিকা আপডেট করুন

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ইমেইল মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি হলো প্রতিনিয়ত মেইল লিস্ট আপডেট করা। নিষ্ক্রিয় সাবস্ক্রাইবার ও মেইল এড্রেসকে বাদ দিয়ে আপনার প্রেরক রেপুটেশান বৃদ্ধি করতে পারেন।

৩. সাবস্ক্রাইবারদের আপডেট রাখুন

আপনার সাবস্ক্রাইবারদের সাথে সম্পর্ক ধরে রাখতে আপনার বিজনেস সম্পর্কে তাদের প্রতিনিয়ত আপডেট জানান। অর্থাৎ, বর্তমানে সাইটে নতুন কী এসেছে, কোন অফার চলছে, শপিং টিপস প্রভৃতি সম্পর্কে জানান। রেগুলার আপডেট দেওয়ার কারণে তাদের কাছে আপনার ব্রান্ড ভ্যালু ও পরিচিতি বাড়বে।

এছাড়া কোনো একটি মেইলে হয়তো আপনার কিছু ইন-অ্যাক্টিভ সাবস্ক্রাইবারদেরকেও অ্যাক্টিভ করতে পারবেন।

৪. নির্দিষ্ট বস্তুর উপর ফোকাস করুন

নির্দিষ্ট বিষয়কে ফোকাস করে ক্যাম্পেইন ডিজাইন করুন। ইমেইল মার্কেটিং দিয়ে এক ঢিলে দুই পাখি মারার মতো কিছু করার চিন্তা করতে যাবেন না। নয়তো আপনার গ্রাহক কনফিউজ হয়ে যাবে, যা কনভার্সন রেট কমে যাওয়ার কারণ হয়ে উঠতে পারে।

৫. ক্যাম্পেইন রেজাল্ট ট্র্যাক করুন

Email Marketing ক্যাম্পেইন কাস্টমারদের পাঠানো সাধারণ অন্য আট-দশটি মেইলের চেয়ে আলাদা। এটা নিয়ে পরবর্তীতে কাজ করার জন্য আপনাকে অবশ্যই মেইল রিসিভার এক্টিভিটি ট্র্যাক করতে হবে যা পরবর্তী ক্যাম্পেইনে কনভার্সন রেট বাড়াতে সাহায্য করবে।

সেরা ৭টি ইমেইল মার্কেটিং টুলস

ইমেইল মার্কেটিং কিন্তু গুগল বা ইয়াহু’র মেইল এড্রেস দিয়ে হবে না। এখানে মাত্র কিছু সংখ্যক মেইল-ই একসাথে পাঠানো যায়, যেখানে মার্কেটিং করার জন্য হাজার হাজার এড্রেসে বার্তা পাঠানোর দরকার হয়।

তাই ক্যাম্পেইন রান করা কিংবা ইমেইল লিস্ট তৈরি করার জন্য প্রথমেই একটি ইমেইল মার্কেটিং সার্ভিস প্রোভাইডার ( Email service Provider ) প্রয়োজন। জনপ্রিয় কিছু ইমেইল মার্কেটিং সার্ভিস প্রোভাইডার সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক:

1. Constant Contact:

  • ই-কমার্স শপের জন্য বেস্ট ফিচার
  • অটোমেটেড প্রোডাক্ট রিকমেন্ডেশন মেইল পারে
  • আনলিমিটেড মেইল
  • মূল্য: মাসিক নূন্যতম $২০

2. Sendinblue:

  • ছোট ব্যবসার জন্য Sendinblue সবচেয়ে ভালো।
  • প্রতিদিন ৩০০ মেইল পর্যন্ত ফ্রি
  • মূল্য: ফ্রি থেকে শুরু (১লাখ মেইলের জন্য মাসিক ২৫ ডলার)

3. Mailchimp:

  • অডিয়েন্স ম্যানেজমেন্ট টুল
  • ক্যাটেগরি বেজড লিস্ট
  • অটোমেটেড মার্কেটিং
  • আকর্ষণীয় ইমেইল টেমপ্লেট
  • মূল্য: ফ্রি (২০০০ গ্রাহক পর্যন্ত)

4. ConvertKit:

  • ব্লগারদের জন্য সেরা মার্কেটিং টুল
  • পারসোনালাইজড মেইল পাঠানোর সুবিধা
  • সিম্পল ইমেইল টেমপ্লেট
  • অটোমেশন
  • মূল্য: ফ্রি (১০০০ সাবস্ক্রাইবার পর্যন্ত)

5. AWeber:

  • ব্লগারদের জন্য আরেকটি সুবিধাজনক সার্ভিস প্রোভাইডার
  • ইমেইল অটোমেশন
  • ক্যাটেগরি বেজড লিস্ট
  • অটো নিউজলেটার
  • সেল ট্র্যাকিং
  • মূল্য: ফ্রি (৫০০ সাবস্ক্রাইবার)

কিভাবে মার্কেটিং ইমেইল লিখবেন?

আপনার ইমেইল মার্কেটিং লক্ষ্য যাই হোক না কেন, সবটাই আপনার লেখা ইমেইল মার্কেটিং কপি রাইটিং এর উপর নির্ভর করে। কিভাবে ইমেইল মার্কেটিং কপি লিখবেন?

এজন্য আপনাকে অবশ্যই ছোট আকারে তবে বেশ ভালভাবেসাজিয়ে লিখতে হবে, যা কিনা আকর্ষনীয় মনে হওয়ার পাশাপাশি ভিজিট করলে তিনি কি কি পেতে পারেন সেসম্পর্কে জানানোও জরুরী। নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করে একটি ভালো ইমেইল মার্কেটিং কপি লেখা সম্ভব।

১. শ্রোতা সম্পর্কে জানুন

আকর্ষণীয় ইমেইল মার্কেটিং কপি তৈরির প্রথম ধাপ হলো দর্শকদের সম্পর্কে জেনে নেওয়া। আর এটা জানার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো ক্যাটেগরি ভিত্তিক ইমেইল লিস্ট সংগ্রহ করা।ইমেইল মার্কেটিং শেখার সহজ উপায়

এখানে দেখুন, ৪টি অপশন রয়েছে। আপনার গ্রাহক চাইলে সবগুলোতেও ইন্টারেস্ট দেখাতে পারে, আবার নির্দিষ্ট এক-দুইটিও বাছাই কর নিতে পারে।

২. ইগনোর করতে পারবেনা এমন সাবজেক্ট লাইন তৈরি করুন

সাবজেক্ট লাইন ইমেইল কপির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান কারণ, এটি পাঠক আপনার ইমেইল খুলবে কিনা তা নির্ধারণ করতে সহায়তা করে। উপক্ষো করা কঠিন এমন সাবজেক্ট লাইন তৈরি করতে –

  • কীওয়ার্ড ব্যবহার করুন
  • উপকারিতা সম্পর্কে মেনশন করুন
  • Active Voice ব্যবহার করুন
  • যতটা সম্ভব personalize করুন
আরো পড়ুন:  মার্কেটিং কি | what is Marketing?

৩. প্রিভিউ টেক্সট

ইমেইল প্রিভিউ টেক্সট সাবজেক্ট লাইনের নিচে বা পাশে উপস্থিত হয়। সর্বাধিক ১৪০ অক্ষরের মধ্যে সীমাবদ্ধ এই অংশটুকু সাবজেক্ট লাইনের পর সবচেয়ে বড় ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে কাজ করে।

একটি অপ্টিমাইজড প্রিভিউ টেক্সট-এ আপনার সাবজেক্ট লাইনের এক্সটেনশন এবং ইমেইলটির ভ্যালু সম্পর্কে ধারণা দেয়।

৪. সহজ ভাষায় লিখুন, যেন পড়তে সহজ হয়

মানুষ ব্যস্ত। এজন্য আপনার ইমেইল কপি এমনভাবে লেখা উচিত যেন এটি পড়তে এবং বুঝতে সহজ হয়। ইমেইল কপিরাইটিং করার জন্য-

  • ছোট বাক্য এবং অনুচ্ছেদ ব্যবহার করবেন
  • জটিল শব্দ এবং বাক্য এড়িয়ে যান
  • বুলেট পয়েন্ট ব্যবহার করার চেষ্টা করুন

যদি পাঠক আপনার পাঠানো ইমেইলটি সহজে পড়তে পারে, তাহলে তিনি লিঙ্কে ক্লিক করবেন এই সম্ভাবণা বেড়ে যায়।

৫. স্টোরি টেলিং

গল্প মনোযোগ আকর্ষণ করার এবং লেখার সাথে এংগেজমেন্ট বৃদ্ধি করার একটি শক্তিশালী উপায়। এজন্য আপনার ই-মেইল কপিতে গল্প বলার সুবিধা নেওয়া উচিত।

ইমেইল মার্কেটিং শেখার সহজ উপায়

১. তালিকা তৈরি করুন

আপনি ই-মেইল পাঠানো শুরু করার আগে আপনাকে ই-মেইল পাঠানোর মতো কাস্টমার বা ভিজিটর প্রয়োজন। কিভাবে ইমেইল রিস্ট তৈরি শুরু করবেন? দুইভাবে করতে পারেন।

  1. পেইড: আপনার সাথে সম্পর্কিত ওয়েবসাইটের ইমেইল লিস্ট কিনে নিতে পারেন, অথবা কিছু এজেন্সি আছে, যারা ইমেইল লিস্ট বিক্রি করে, তাদের থেকেও কিনতে পারেন। তবে ব্যক্তিগতভাবে আমি এই পদ্ধতি প্রেফার করি না।
  2. ফ্রি: আপনার ওয়েবসাইটে একটি ব্যানার বা ফর্ম যোগ করে দিন এবং ভিজিটরকে সাবস্ক্রাইব করতে বলুন। তারপর, নিচের এই টিপসগুলি অনুসরণ করুন।

২. অফার চালু করুন

ইমেইল এড্রেসকে টাকার সাথে তুলনা করুন। আপনি নিশ্চয়ই কাউকে ফ্রিতে টাকা দিবেন না। তাই দ্রুত ইমেইল লিস্ট বাড়ানোর জন্য একটি অফার চালু করে দিন, যেখানে অফারের বিনিময়ে আপনাকে বার্তা পাঠানোর অনুমতি দিবে।

উদাহরণস্বরূপ, blog.hubspot.com তাদের ওয়েবসাইটের সুন্দর টেমপ্লেটটি ফ্রিতে দিচ্ছে। এখন তারা এটি কোথায় দিবে? এজন্য মেইল এড্রেস দিয়ে ফরম পূরণ করতে হয়।

আবার, shoutmeloud ব্লগে হার্শ আগারওয়াল তার লেখা ব্লগিং সংক্রান্ত বইটি ফ্রিতে মেইল করছেন।

৩. ইমেইল মার্কেটিং রুলস মেনে চলুন

ব্রান্ড ভ্যালু তৈরি করতে আপনি নিশ্চয়ই লোকাল রুলস এর পাশাপাশি CAN-SPAM and GDPR আইন মেনে চলবেন। এবং অবশ্যই সহজে আনসাবস্ক্রাইব করার ব্যবস্থা রাখবেন।

এসব নিয়ম আপনার ইমেইল মার্কেটিং সফল হতে বাধা দিবেনা, যদি আপনি নিশ্চিত করতে পারেন যে আপনি মেইল লিস্ট ক্রয় করেন নি।

৪. প্রতিশ্রুতি রক্ষা করুন

যদি আপনার কল টু অ্যাকশন শক্তিশালী হয়, এবং আপনার ফলো-আপ সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়, তাহলে আপনি একটি সফল ই-মেইল ক্যাম্পেইন আশা করতে পারেন।

ইমেইল মার্কেটিং এর সফলতা মানুষের প্রত্যাশা, আপনার দেওয়া প্রতিশ্রুতি এবং তা পূরণ করার উপর নির্ভর করে।

যদি আপনি প্রতি সপ্তাহে একটি ইমেইল পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দেন অথচ প্রতিদিন তাদের বার্তা পাঠাতে থাকেন, তাহলে আপনি ভুলভাবে আগাচ্ছেন।

বিপরীতভাবে, যদি কেউ দৈনিক আপডেট, নিউজলেটার, বা পণ্য আপডেট আশা করে থাকেন কিন্তু আপনি পাঠাচ্ছেন না, তাহলেও একইভাবে বিচলিত হতে পারে।

এই কারণেই আপনার ই-মেইল মার্কেটিং এ সাফল্যের জন্য প্রথম ফলো-আপ ইমেলটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

৫. ভালো কন্টেন্ট তৈরি করুন

আপনি ইমেইল লিস্ট কালেক্ট করলেন, ক্যাটাগরিতে ভাগ করলেন, নিয়মিত আপডেট দিচ্ছেন, কিন্তু তারপরেও ক্লিক, কনভার্সন রেট কম হচ্ছে?

তাহলে আপনার ইমেইল কপিরাইটিং ও কন্টেন্ট কোয়ালিটির দিকে নজর দেওয়া দরকার।

আপনার মতো আরো অনেক ওয়েবসাইট মালিক রয়েছে যারা একই সেবা দিচ্ছে। সুতরাং, পছন্দের তালিকায় থাকতে কোয়ালিটি ভালো করার বিকল্প নেই।

অন্যদিকে ইমেইল বডিতে যদি কপি রাইটিং আকর্ষণীয় না হয়, আপনার দেওয়া লিঙ্কটিতে কি আছে, কেন ক্লিক করবো এসব প্রশ্নের উত্তর যদি না দেওয়া থাকে, তাহলে কেন ক্লিক করবেন তিনি!

সুতরাং, কোয়ালিটি কন্টেন্ট তৈরি করে মানুষের প্রয়োজনকে হাইলাইট করুন, তাহলে সমাধান পেতে ক্লিক করতে তিনি নিজ থেকেই উৎসাহী হবেন।

৬. বিশ্লেষণ এবং বিভাজন

এখন যেহেতু আপনি একটি কার্যকর ইমেইল মার্কেটিংয়ের মূল বিষয়গুলো বুঝতে পেরেছেন, তাহলে এবার আসুন কীভাবে বিষয়গুলোকে পরবর্তী স্তরে নিয়ে যাওয়া যায় সে সম্পর্কে আলোচনা করা যাক।

মার্কেটিংকে পরিমার্জিত করার জন্য Analytics এবং Segmentation জরুরী। ‍সেগমেন্ট না করে সবার কাছে ক্যাম্পেইন মেইল পাঠানোর চেয়ে বিভাজন করে মার্কেটিং করলে বেশি ফলাফল পাওয়া যায়।

কিভাবে ইমেইল মার্কেটিং অ্যানালাইসিস করবেন?

আমরা ওয়েবসাইট ট্রাফিক বৃদ্ধিতে এনালাইটিক্স বিশ্লেষণের গুরুত্ব সম্পর্কে পূর্বে কথা বলেছি এবং ইমেলের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা একই।

যদিও এনালাইটিক্স রিপোর্টে পাওয়া সকল তথ্যই গুরুত্বপূর্ণ তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি রিপোর্ট হলো-

  • ইমেইল ওপেন রেট: এই রিপোর্ট থেকে জানা যায় যে, কতজন আপনার পাঠানো ই-মেইল ওপেন করেছেন।
  • ক্লিক-থ্রু রেট: আপনার পাঠানো বার্তার সাথে থাকা লিঙ্কে কতজন ক্লিক করেছে। যদি আপনার CTR খারাপ থাকে, তাহলে ধরে নিন হয় আপনার কপি রাইটিং গ্রাহককে আকৃষ্ট করতে পােরেনি, অথবা আপনার কন্টেন্ট তার কাছে প্রয়োজনীয় নয়।
  • আনসাবস্ক্রাইব: এই রিপোর্ট থেকে জানা যায়, ক্যাম্পেইনে পাঠানো ইমেইল গ্রাহকদের কতজন ‘unsubscribe’ বাটনে ক্লিক করেছে। যদি খুব বেশি হয়ে যায় তবে এর পিছনের কারণ খুঁজে বের করা গুরুত্বপূর্ণ।

কিভাবে ইমেইল মার্কেটিং লিস্ট ক্যাটেগরিতে ভাগ করবেন?

মার্কেটিং ইমেইল লিস্ট সেগমেন্ট বা ভাগ করার অর্থ হলো আপনার গ্রাহকদের বিভিন্ন ক্রাইটেরিয়ার উপর বিভক্ত করে রাখা যেন তাদের প্রয়োজনের বাইরে কোনো ইমেইল না যায়।

এখানে একটি বড় ইমেইল তালিকা বিভক্ত করার কয়েকটি উপায় উল্লেখ করা হলো:

  • গ্রাহকের তালিকা (যেসব নেতারা কেনেননি তাদের তুলনায়)
  • নিউজলেটার সাবস্ক্রাইবার
  • দৈনিক ই-মেইল তালিকা (সাপ্তাহিক, দ্বি-সাপ্তাহিক, মাসিক ইত্যাদির তুলনায়)
  • demographics যেমন বয়স, লিঙ্গ, অবস্থান, বা তাদের জব
  • আগ্রহ যেমন, মার্কেটিং ব্লগ বা নতুন শপিং আইটেম, অফার।

আপনার ইমেইল লিস্টের মূল্য কত?

আপনার ই-মেইল তালিকাটি আপনার সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদের মধ্যে একটি, এবং যদি আপনি এটিকে কীভাবে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারেন, তাহলে এটি আপনাকে অনেক বার অর্থ প্রদান করবে।

সময়ের সাথে সাথে আপনি আপনার ইমেইল লিস্টে থাকা লোকেরা গড়ে কত টাকা ব্যয় করছেন তা ট্র্যাক করতে পারবেন। সেই রিপোর্ট থেকেই জানতে পারবেন যে আপনার তালিকার মূল্য কত।

উদাহরণস্বরূপ, যদি ১০,০০০ জন লোকের একটি তালিকা নিয়ে মার্কেটিং করে $50,000 ডলার মূল্যের সেল করেন এবং প্রতি বছর দুটি ক্যাম্পেইন চালান, তাহলে বলতে পারেন যে প্রতিটি গ্রাহকের মূল্য বছরে ১০ ডলার।

ইমেইল মার্কেটিং সম্পর্কে প্রায়শই জিজ্ঞেসিত প্রশ্নসমূহ

ইমেইল মার্কেটিং এর সুবিধা কি?

ইমেইল মার্কেটিং ব্যবসাকে বহুসংখ্যক গ্রাহকের কাছে পৌঁছাতে, বিক্রয় বৃদ্ধিতে, পরিত্যক্ত কার্টগুলোকে পুনরুদ্ধার করতে এবং গ্রাহকদের সাথে সম্পর্ককে উন্নত করতে সহায়তা করতে পারে।

আমি কিভাবে একটি ই-মেইল তালিকা তৈরি করব?

আপনি একটি ডাউনলোডযোগ্য বিষয়বস্তুগুলো অফার করতে পারেন, একটি উপহার হোস্ট করতে পারেন, অথবা ই-মেইল একটি পেইড কোর্স বিনামূল্যে প্রদান করতে পারেন।

ইমেইল মার্কেটিং করার কি কোনো নিয়ম আছে?

ক্যান-স্প্যাম এবং জিডিপিআর (ইউরোপের জন্য) নিয়ম অনুযায়ী আপনাকে ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা রক্ষা করতে হবে এবং ক্রয়কৃত ই-মেইল লিস্টে বার্তা পাঠানো যাবেনা।

ইমেইল মার্কেটিং কি সেবিষয়ে পরিশেষ

ইমেইল মার্কেটিং কি, কিভাবে ইমেইল মার্কেটিং করতে হয়, ইমেইল মার্কেটিং শেখার সহজ উপায় ইত্যাদি বিষয় বোঝার জন্য রকেট সায়েন্স জানার দরকার নেই। তবে, ইমেইল মার্কেটিং করে আয় করার জন্য ইমেইল মার্কেটিং কোর্স করে নেওয়া বেশ ইফেক্টিভ হতে পারে। এজন্য বাংলাদেশী অনলাইন কোর্স করার সাইট ও ইংলিশে ফ্রি কোর্স করতে পারেন।

আপনি যদি এখনো ইমেইল মার্কেটিংকে গুরুত্ব না দেন, তবে আপনার ব্যবসার প্রসার বাড়াতে নিশ্চিতভাবেই দ্বিতীয়বার ভাবতে হবে।

মনে রাখবেন, আপনার গ্রাহকের ইনবক্সে আপনি একজন অতিথি মাত্র। আপনার থেকে মেইল না নিতে তাদের মাত্র একটি ক্লিক করতে হবে। তাই সেখানে প্রবেশের আগে অবশ্যই অনুমতি নিবেন। অর্থাৎ তারা যেন নিজ থেকে সাবস্ক্রাইব করে সেদিকে নজর দিন।

সুতরাং, প্রথমে ইমেইল পরিসেবা সিলেক্ট করুন, মেইল সংগ্রহ করে তাদের সেগমেন্ট অনুযায়ী সাজিয়ে নিন। এরপর গ্রাহক যেকারণে সাবস্ক্রাইব করেছে তার সেই প্রত্যাশা পূরণ করার চেষ্টা করুন।

এবার বলুন, কোন ই-মেইল মার্কেটিং কৌশলটি আপনার পাঠকদের সবচেয়ে বেশি এংগেজ রাখছে?

5 thoughts on “ইমেইল মার্কেটিং কি | ইমেইল মার্কেটিং শেখার সহজ উপায়”

  1. বেশ সুন্দর ও গোছানো লেখা। নতুন মার্কেটারদের কাজে আসবে।
    দেশীয় বেশ কিছু ইমেইল মার্কেটিং কোম্পানি এসেছে যারা বেশ ভাল করছে। probaho.com.bd এরকম একটা ইমেইল সার্ভিস প্রোভাইডার ব্রান্ড, যারা কম খরচে ভাল সেবা দেয়। এছাড়াও আছে ADN Digital. দেশি কোম্পানির ইনফো ব্লগে যোগ করলে ব্লগটি আরো সমৃদ্ধ হবে।

  2. আপনি অনেক সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন। অনেক সুন্দর ভাবে গুছিয়ে লিখেছেন। ধন্যবাদ এতো সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করার জন্য। আশা করি আরো সুন্দর সুন্দর ব্লগ আমাদের উপহার দিবেন।

    1. আপনার মন্তব্য আরো ভালো আর্টিকেল লিখতে নিশ্চিতভাবেই আমাকে অনুপ্রেরণা যোগাবে, ধন্যবাদ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top