ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেওয়ার নিয়ম এবং খরচ : পেইড মার্কেটিং টিউটোরিয়াল

ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেওয়ার নিয়ম

আপনি কি ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেওয়ার খরচ সম্পর্কে ‍বিস্তারিত জানতে চান? সকল ধরনের প্রফেশনাল বিজনেসে উন্নতি করার জন্য ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেওয়াটা এখন বেশ জরুরি।

বিজনেসে সফল হতে হলে অবশ্যই বিজ্ঞাপন দেওয়ার মাধ্যমে কাস্টমারের কাছে আপনার পণ্য বা সেবার সকল তথ্য পৌঁছে দিতে হবে। যাতে কাস্টমার আপনার পণ্য বা সেবা সম্পর্কে সঠিক ধারণা নিতে পারেন। সঠিকভাবে পণ্য বা সেবার তথ্য প্রচার করতে সক্ষম হলে আপনার পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি পাবে এবং সেল বাড়বে।

ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেওয়ার নিয়ম ও খরচ

প্রতিদিন ১.৫৬ বিলিয়ন একটিভ ইউজার, সবমিলিয়ে ৭.৭৫ কোটি মানুষের পৃথিবীতে ৫ বিলিয়ন এরও অধিক একাউন্ট (তথ্যসূত্র- ফেসবুক কোম্পানী ইনফো) যে সোশ্যাল মিডিয়ায়, সেক্ষেত্রে মার্কেটিং এর কাজে বর্তমানে ফেসবুকের চেয়ে ভালো প্লাটফর্ম আর কিই বা হতে পারে?

তাই নিশ্চিতভাবেই ডিজিটাল মার্কেটিং এর বড় একটি অংশজুড়ে ফেসবুক পেইড মার্কেটিং এর অবস্থান। দ্রুত প্রচার-প্রসার, সেল বৃদ্ধি কিংবা বিজনেস প্রফিট বাড়ানোর জন্য ফেসবুকে বিজ্ঞাপন প্রচার করা এখন সবচেয়ে লাভজনক উপায় বলে ধরা হচ্ছে।

বিজনেস করার ক্ষেত্রে আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিসগুলো অনলাইনে সকল কাস্টমারের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য ফেসবুক মার্কেটিং ( ফ্রি ) শেখাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ফেসবুক মার্কেটিংকে SMM মার্কেটিংও বলা হয়।

যেসকল বিষয়ে খেয়াল রেখে ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেওয়া উচিৎ

১) বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য প্রথমে আপনাকে একটি বিজনেস পেজ তৈরী করে নিতে হবে। ভালো কাভার ফটো এবং প্রোফাইল পিকচার সিলেক্ট করে নিবেন। কাভার ফটো ও প্রোফাইল পিকচারের জন্য যে সাইজ রিকমেন্ডেশন দেওয়া থাকবে সেই অনুযায়ী যাতে আপনার প্রোফাইলটি হয়, এই বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে।

২) ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেওয়ার ক্ষেত্রে সঠিক পণ্য বা সেবা বাছাই করে নেওয়া জরুরি। বাজারে কোন ধরনের পণ্য বা সেবার চাহিদা বেশি সেটি যাচাই করে নিবেন এবং বিজনেসের জন্য পারফেক্ট ও ডিফরেন্ট পণ্য খুঁজে বের করতে হবে। মানসম্মত পণ্যের বিজ্ঞাপন দিলে কাস্টমারের কাছে আপনার পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি পেতে থাকবে।

৩) মার্কেটে আপনার পছন্দ করা পণ্য বা সেবার কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী আছে কিনা সেটি খুঁজে বের করতে হবে। পণ্যের গুণগত মানের বিষয়টি খেয়াল রেখে বিজ্ঞাপন দিতে হবে।

৪) কত ডলার দিয়ে আপনি আপনার ক্যাম্পেইনটি রান করতে চাচ্ছে তা আগেই ঠিক করে নিবেন। এছাড়াও পণ্য বা সেবার সকল তথ্য গুছালো এবং প্রফেশনাল ভাবে উপস্থাপন করতে হবে।

৫) নিজের অ্যাক্টিভ কন্টাক্ট নাম্বার দিতে হবে এবং পণ্য ডেলিভারি সিস্টেম ঠিক আছে কিনা সে বিষয়ে খেয়াল রেখে ক্যাম্পেইনটি রান করতে হবে।

৬) আপনি যখন ক্যাম্পেইন নাম সেট করবেন তখন সেটি একটি মিনিংফুল নাম দিবেন। যাতে পরবর্তীতে আপনার বুঝতে সুবিধা হয়। আপনার বিজনেসের জন্য প্রোডাক্ট সার্ভিস প্রমোট করে সেল জেনারেট করতে অনেকবারই ক্যাম্পেইন রান করতে হতে পারে।

এই সবগুলো ক্যাম্পেইন আপনার অ্যাকাউন্টে জমা থাকবে। আপনি এই ক্যাম্পেইন গুলো কোন উপলক্ষে ডিসকাউন্টে দিয়েছিলেন সেটি পরবর্তীতে এই ক্যাম্পেইন গুলো দেখে খুব সহজেই মেজারমেন্ট করতে পারবেন।

ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য অর্থ ইনভেস্ট করা হয়। বিজ্ঞাপন দিয়ে কতটুকু আপনি বেনিফিট পাচ্ছেন সেটি যাতে মেজারমেন্ট করতে পারেন। বিভিন্ন সময়ে রান করা ক্যাম্পেইন গুলো আপনার একাউন্টে সেভ থাকবে। আপনি যদি সঠিকভাবে ক্যাম্পেইন গুলোর নাম সেট না করেন তাহলে পরবর্তীতে আপনার বুঝতে অসুবিধা হতে পারে।

৭) অডিয়েন্স অপশনটি অনেক গুরত্বপূর্ণ। আপনার কাছে যদি আগে থেকেই কিছু সংখ্যক কাস্টমারের লিস্ট থেকে থাকে তাহলে যারা অলরেডি অ্যাক্টিভ তাদের ফেসবুক আইডি দিয়ে তাদের ওয়ালে আপনার বিজ্ঞাপনটি শো করাতে পারবেন।

তাদের আইডি স্পেসিফিক করে দিলে আপনার বিজ্ঞাপন তাদের ওয়ালে শো করবে। এটি করতে পারলে আপনার প্রোডাক্ট বা সেবার রিসেল বেড়ে যাবে। একই কাস্টমারের কাছে আপনি বারবার সেল করতে পারবেন।

আরো পড়ুন:  ফেসবুকে ব্যবসা করার নিয়ম | ফেসবুকে অনলাইন ব্যবসা

৮) আপনি যদি নির্দিষ্ট লোকেশানে ক্যাম্পেইনটি করতে চান তাহলে আপনার পছন্দ অনুযায়ী লোকেশন সেট করে নিবেন। আপনি যদি সারা বাংলাদেশ আপনার বিজনেস কি করতে চান তাহলে নির্দিষ্ট লোকেশন সেট না করে বাংলাদেশ নাম দিয়ে সেট করলে সারা বাংলাদেশ আপনার ক্যাম্পেইনটি রান হবে।

৯) জেন্ডার এর দিক থেকে যদি আপনি শুধুমাত্র ছেলেদের প্রোডাক্ট নিয়ে বিজনেস করেন তাহলে Men অপশনটি সিলেক্ট করবেন। এটি তখন শুধু মাত্র ছেলেদের ওয়ালে শো করবে এবং আপনি কত এইজ (বয়স) এর মানুষকে টার্গেট করছেন সেই অনুযায়ী ক্যাম্পেইনটি রান করবেন।

তাছাড়া যদি মেয়েদের কোন প্রোডাক্ট নিয়ে বিজনেস করেন তাহলে উইম্যান অপশনটি সিলেক্ট করবেন, তখন আপনার ক্যাম্পেইনটি মেয়েদের ওয়ালে শো করবে।

আর যদি কমন প্রোডাক্ট সেল করে থাকেন যেটা ছেলে-মেয়ে উভয়ের ব্যবহার করে তাহলে অল অপশনটি সিলেক্ট করবেন।

১০) ডিটেলস টার্গেটিং অপশনটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ডেমোগ্রাফিক, ইন্টারেস্ট এবং বিহেভিয়ার এই তিনটি জিনিস দিয়ে আপনি আপনার কাস্টমারকে টার্গেট করতে পারবেন।

আপনি যে কি-ওয়ার্ড গুলো ইনপুট করবেন, এই কী-ওয়ার্ড গুলোর উপর বেইজ করে আপনার ক্যাম্পেইনটি ফেসবুক ও বিভিন্ন মানুষের ওয়ালে শো করবে।

ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেওয়ার খরচ

ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেওয়ার খরচফেসবুক বিজ্ঞাপন খরচ বেশ কিছু বিষয়ের উপর নির্ভর করে। এক ডলার দিয়ে ফেসবুক বিজ্ঞাপন ( পোস্ট বুস্ট ) দেওয়া শুরু করতে পারেন। পেজে লাইক, কমেন্ট দেখে আপনি পরবর্তীতে কম বা বেশি ডলার বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য অ্যাড করতে পারবেন।

ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেওয়ার খরচ কত করতে চান সেজন্য বাজেট এবং শিডিউলে যেয়ে আপনার ক্যাম্পেইনের জন্য বাজেট সিলেক্ট করে নিবেন। বাজেট সিলেক্ট করার জন্য আপনি দুটি অপশন পাবেন, ডেইলি বাজেট এবং লাইফ-টাইম বাজেট।

আপনি যদি ডেইলি বাজেট সিলেক্ট করেন তাহলে আপনি যে কয় ডলার দিবেন সেটি প্রতিদিন আপনার কার্ড থেকে চার্জ হবে।

যদি ৫০ ডলার করে দেন তাহলে প্রতিদিন কার্ডে ৫০ ডলার করে চার্জ হবে। এই ৫০ ডলারে প্রতিদিন কত মানুষের ফেসবুক ওয়ালে অ্যাডটি ডিসপ্লে হবে তা দেখতে পারবেন।

সর্বনিম্ন ৫০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৩ লাখ এর মাঝামাঝি একটি সংখ্যক মানুষের কাছে এই ক্যাম্পেইনটি শো করবে। আপনি যদি ৫ ডলার দেন তাহলে ৫ হাজার থেকে ৩১ হাজার মানুষের কাছে অ্যাডটি শো করবে।

আবার আপনি চাইলে লাইফটাইম বাজেট সেট করতে পারেন। ধরুন, একটি ক্যাম্পেইনের জন্য আপনি সর্বোচ্চ ৫০ ডলার খরচ করবেন এবং এটি প্রতিদিন না দিয়ে লাইফটাইম বাজেট সেট করবেন তাহলে আপনার অ্যাডটি ২ হাজার থেকে ১১ হাজার মানুষের ওয়ালে শো করবে।

এখান থেকে আপনি শিডিউলও করে দিতে পারবেন। কত তারিখ থেকে কত তারিখ পর্যন্ত আপনার অ্যাডটি শো করবে সেটি সেট করে নিতে পারবেন।

ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য পেমেন্ট সিস্টেম

বাংলাদেশে পেপাল অফিসিয়ালি না আসায় খুব কম মানুষই ব্যবহার করেন, ক্রেডিট কার্ড বা ভার্চুয়াল কার্ডই আমরা বেশি ব্যবহার করি।

বিজনেসের জন্য যাদের পার্সোনাল ক্রেডিট কার্ড আছে তারা নিজের কার্ড দিয়েই বিজ্ঞাপন দেন। আবার অনেকের ব্যক্তিগত কোনো কার্ড না থাকায় বিভিন্ন প্রতিনিধি বা ব্যক্তির কাছ থেকে বিজ্ঞাপন দিয়ে নিচ্ছেন।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ম্যাক্সিমাম ডলার কেনা হয় ৮৬ টাকা করে। বাংলাদেশের অনেক কোম্পানি ৯০ থেকে ১০০ টাকার বিনিময়ে ১ ডলার মূল্যের বিজ্ঞাপন সার্ভিস প্রোভাইড করে থাকেন।

ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেওয়া এবং সেল জেনারেট করার উপায়

আপনি হয়তো বুঝতে পারছেন না কিভাবে ফেসবুকে অ্যাড দিবেন এবং পণ্যের সেল জেনারেট করবেন? আসলে ফেসবুক আমাদের এমন অনেক অপশন দিয়ে রেখেছেন, যেগুলোর মাধ্যমে আমরা আমাদের প্রোডাক্ট বা সেবার সেল জেনারেট করতে পারি এবং ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে ব্রান্ডের প্রমোশন করাতে পারি।

ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে বর্তমান সময়ে যতগুলো লেটেস্ট টেকনিক আছে সব ধরণের টেকনিক আপনার বিজনেসের এপ্লাই করতে পারবেন।

ক্যাম্পেইনের অন্যতম প্রধান কারণ সেল জেনারেট করা। আপনার বিজনেস ওয়েবসাইট এ যেয়ে যাতে বিভিন্নভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারেন তার জন্য মূলত ফেসবুক আমাদেরকে এতগুলো অপশন দিয়ে রেখেছেন।

তবে ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য বা বুস্ট পোস্ট করার জন্য আপনারা অবশ্যই একটি ইন্টারন্যাশনাল ক্রেডিট কার্ড থাকতে হবে। যেটির মাধ্যমে আপনি ডলার এনডোর্স করে অ্যাড দিতে পারবেন। আপনি এটি ইবিএল ডুয়েল কারেন্সি কার্ড দিয়েও করতে পারবেন।

আরো পড়ুন:  ফেসবুকে কিভাবে টাকা আয় করা যায় | সেরা ৮ উপায় জেনে নিন

ফেসবুক পেইড মার্কেটিং কেন করবেন, কখন করবেন?

এখন আসুন জেনে নেয়া যাক কিভাবে ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেওয়া যায় (step-by-step), সেই সম্পর্কে-

১। ব্র্যান্ড অ্যাওয়ারনেস

ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য ক্রিয়েট অ্যাড অপশনটিতে যেতে হবে। এটি ক্লিক করলে যে অপশনটি প্রথমে আসবে সেটি হচ্ছে ব্র্যান্ড অ্যাওয়ারনেস।

ব্র্যান্ডের পরিচিতি বাড়ানোর জন্য সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর মাধ্যমে যে বিজ্ঞাপন প্রচার করা হয় তাকেই মূলত ব্র্যান্ড অ্যাওয়ারনেস বলে।

ফেসবুক যেহেতু বর্তমানে সকলের হাতে হাতে, যার কারণে এই ফেসবুক মার্কেটিং এর মাধ্যমে খুব সহজে টার্গেটেট কাস্টমারকে রিচ করা যায়।

এমন অনেক কোম্পানি আছে যারা বিভিন্ন ক্যাম্পেইন এর মাধ্যমে শুধুমাত্র তাদের ব্র্যান্ড অ্যাওয়ারনেস বৃদ্ধি করতে চান।

আপনিও যদি শুধুমাত্র আপনার ব্র্যান্ড সম্পর্কে মানুষকে জানাতে চান তাহলে এই অপশনটি ব্যবহার করে আপনার ব্র্যান্ড এর পরিচিতি বাড়াতে পারবেন।

২। রিচ

বিজ্ঞাপন দেওয়ার ক্ষেত্রে দ্বিতীয় যে অপশনটি আপনি পাবেন, সেটি হচ্ছে রিচ। রিচ বলতে মূলত কাস্টমারদের কাছে পৌছানো কে বুঝানো হয়।

এই রিচ অপশনটির মাধ্যমে আপনার প্রোডাক্ট বা সেবাকে সকল কাস্টমারের কাছে খুব সহজে পৌঁছে দিতে পারবেন।

বিশ্বে অনেক ধরনের প্রোডাক্ট আছে। আপনি যেকোনো একটি পছন্দ করে বিজনেস রান করতে পারেন।

আপনার এই প্রোডাক্ট বা সেবা কাস্টোমারের কাছে পৌঁছানোর জন্য রিচ অপশনটি ব্যবহার করে ক্যাম্পেইনটি রান করতে পারবেন।

৩। ট্রাফিক

রিচ এর পরে যে অপশনটি আছে সেটি হচ্ছে ট্রাফিক। ট্রাফিক বলতে মূলত ভিজিটর বা কাস্টমারদের বুঝানো হয়। প্রত্যেকটি ট্রাফিকই একেকজন কাস্টমার।

আপনি যদি আপনার ওয়েবসাইটে ট্রাফিক সেন্ড করতে চান তাহলে ফেসবুকে যে ট্রাফিক বা ভিজিটররা আছে তাদেরকে আপনার ওয়েবসাইটে নিয়ে আসতে পারবেন এই ট্রাফিক অপশনটি ব্যবহার করার মাধ্যমে। এই অপশনটি সিলেক্ট করে সেই অনুযায়ী আপনার ক্যাম্পেইনটি সেট করে দিতে পারবেন।

৪।  এংগেজমেন্ট

চতুর্থ নাম্বার অপশনটিতে আছে এংগেজমেন্ট। এংগেজমেন্ট বলতে মূলত লাইক, কমেন্ট, শেয়ার এগুলোকে বুঝানো হয়।

আপনার ফেসবুক অ্যাড এ যদি বেশি মানুষের লাইক, কমেন্ট, শেয়ার চান তাহলে এই এনগেজমেন্ট অপশনটি ব্যবহার করবেন।

আপনি এনগেজমেন্ট অপশনটি বাছাই করে যখন ক্যাম্পইন রান করবেন তখন, ফেসবুক আপনার বিজ্ঞাপনটি এমনভাবে মানুষের কাছে পৌঁছে দেবে যাতে, আপনার অ্যাডটিতে মানুষ বেশি লাইক, কমেন্ট ও শেয়ার করে।

ফেসবুক পেইড মার্কেটিং

ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য এংগেজমেন্ট অপশনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটির মাধ্যমে কোন প্রোডাক্ট বা সেবা বুস্ট করলে সেগুলো ডিসপ্লেতে ভালোভাবে শো করবে এবং অ্যাডটিতে লাইক, কমেন্ট ও শেয়ার বৃদ্ধি পাবে।

৫।  অ্যাপ ইনস্টল

অ্যাপ ইনস্টল এই অপশানটি মুলত অ্যাপ ডেভলপারদের জন্য। অনেক অ্যাপ ডেভলপার আছেন যারা অ্যান্ড্রয়েড ও আইওএস এই ধরনের অ্যাপ ডেভেলপ করছেন। এই অপশনটি মূলত তারা ব্যবহার করে করে থাকেন।

ধরে নিন আপনি একজন অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ ডেভলপার, আপনি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ তৈরি করতে পারেন। আপনি যদি একজন অ্যান্ড্রয়েড বা আইওএস ডেভলপার হন তাহলে গুগল প্লে বা অ্যাপেল স্টোরে অবশ্যই আপনার একটি অ্যাপস আছে, যে অ্যাপসটি আপনি ফেসবুকে মার্কেটিং করতে চান।

যারা ফেসবুকে ইউজার আছে তারা যেন আপনার অ্যাপটি ডাউনলোড করে ব্যবহার করতে পারে। সেক্ষেত্রে আপনি এই অ্যাপ ইনস্টল অপশনটি ব্যবহার করবেন।

এই অপশনটি ব্যবহার করে ক্যাম্পেইনটি সেট করলে ফেসবুক এই অ্যাডটিকে ফেসবুক ইউজারদের ওয়ালে এমনভাবে নিয়ে যাবে এবং তাদেরকে বলবে এই অ্যাপসটি ইন্সটল করে নেওয়ার জন্য।

৬। ভিডিও ভিউস

অ্যাপস ইনস্টলের পরে আছে ভিডিও ভিউজ অপশনটি। আপনি এই ভিডিও ভিউজ অপশনটি ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনার কমার্শিয়াল ও প্রফেশনাল যেকোন ভিডিও প্রমোট করতে পারবেন।

আপনার প্রোডাক্ট বা ব্রান্ডের প্রমোশন করাতে পারবেন। অধিকাংশ কোম্পানি এই ভিডিও ভিউজ এর মাধ্যমে তাদের ভিডিও মার্কেটিং করে থাকেন।

যেকোনো ধরনের ভিডিও কনটেন্ট ও ভিডিও মার্কেটিং করার জন্য এই ভিডিও ভিউজ অপশনটি ব্যবহার করতে পারবেন। এটি ব্যবহারের মাধ্যমে ফেসবুকে আপনার ভিডিওটি বেশি ভিউ হবে।

ফেসবুক আপনার ক্যাম্পেইনটি এমনভাবে রান করবে যাতে আপনার ভিডিওটি বেশী সংখ্যক মানুষ দেখতে পায়।

৭। লিড জেনারেশন

এরপর যে অপশনটি পাবেন সেটি হচ্ছে লিড জেনারেশন। আপনি যদি প্রথম টার্গেট হিসেবে আপনার ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে সেল জেনারেট করতে চান, তাহলে লিড জেনারেশন অপশনটি ব্যবহার করবেন।

আরো পড়ুন:  মার্কেটিং কি | what is Marketing?

লিড জেনারেশন এর মাধ্যমে আপনি সেল জেনারেট, সাইনআপ, অ্যাপ ইন্সটল সবগুলো জেনারেট করতে পারবেন। এটি সম্পূর্ণ আপনার টার্গেট এর উপর নির্ভর করবে।

আপনি কি আপনার ওয়েব সাইটে সাইন আপ করাতে চান, নাকি অ্যাপস ইনস্টল করাতে চান, নাকি সেল জেনারেট করাতে চান, এই সকল কারণে লিড জেনারেশন অপশনটিকে দেওয়া হয়েছে।

এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে যদি কমপক্ষে ১০০ জন মানুষের ওয়ালে আপনার অ্যাডটি পৌঁছায় এবং এই ১০০ জন থেকে দশজন আপনার ক্যাম্পেইনটি কিনে নেয়, তাহলে আপনার ১০% লিড জেনারেশন হবে।

আবার আপনি যদি মনে করেন যে, এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে আপনি কোন জেনারেট করতে চান না। শুধুমাত্র আপনার ওয়েবসাইটে মানুষ যেন সাইনআপ করে এটি চান তখন, আপনি আপনার ওয়েবসাইটে মানুষ ফ্রিতে সাইনআপ করতে পারবে এমন ক্যাম্পেইন রান করতে পারেন।

৮।  মেসেজেস

ফেসবুকে বিজ্ঞাপন রান করার জন্য আরো একটি অপশন হচ্ছে মেসেজেস। ম্যাসেজ এর মাধ্যমে মূলত কাস্টমার দের কাছ থেকে মতামত বা ফিডব্যাক পাওয়া যায়। আপনি কাস্টমারদের ফিডব্যাক জানার জন্য এই মেসেজেস অপশনটি পছন্দ করতে পারেন।

আপনি যখন কোনো ক্যাম্পেইন রান করবেন তখন ফেসবুক তাদের ব্যবহারকারীদের ওয়ালে আপনার অ্যাডটি এমন ভাবে পৌঁছে দিবে, যাতে মানুষ একটি দেখে আপনার পেজে মেসেজ করতে পারেন।

আপনি চাচ্ছেন কাস্টমারের মতামত জানতে, যে কোন কারনে আপনি একটি সার্ভিস বা পূর্ণ সেল করছেন কিন্তু আপনি জানেন না যে কাস্টমাররা এটি সম্পর্কে আসলে কি ধারণা পোষণ করছে, সে কারণে আপনি কাস্টমারদের একটু রিসার্চ করতে চাচ্ছেন, যাতে আপনি আপনার অন্যান্য ক্যাম্পেইন গুলো আরো ভালোভাবে রান করতে পারেন।

বিভিন্ন কোম্পানিতে কাস্টমারের ফিডব্যাক জানার জন্য আলাদা ফরম থাকে যেটা পূরণ করতে হয়, এটিকে বলা হয় কাস্টমার ফিডব্যাক।

আপনি সরাসরি কাস্টমারদের কাছ থেকে মতামত নিতে চাইলে এই মেসেজের অপশনটি সিলেক্ট করে ক্যাম্পেইন রান করতে পারেন। কাস্টমারের মতামত জানতে এই মেসেজ অপশন টি বেস্ট।

৯।  কনভার্সেশন

ফেসবুকে যে সকল ভিজিটর আছে বা ইউজার আছে তাদেরকে কাস্টমার হিসেবে কনভার্ট করে নিয়ে আসা বা তাদের আপনার ওয়েব সাইটে সাইন আপ করতে চাওয়া এটি মূলত কনভার্সেশন।

এই কনভার্সেশন অপশনের মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই ফেসবুক থেকে কাস্টমারদের আপনার ওয়েবসাইটে নিয়ে আসতে সক্ষম হবেন এবং আপনার প্রোডাক্ট কাস্টমারের কাছে সেল করতে পারবেন।

আপনি যদি ফেসবুক ভিজিটরদের আপনার ওয়েবসাইটে নিয়ে আসতে চান তাহলে এই কনভারসেশন অপশনটি বেছে নিবেন।

১০। ক্যাটালগ সেলস

আপনি যখন ক্যাটালগ সেলস অপশনটি চুস করে বুস্ট করবেন তখন আপনার প্রোডাক্টের যে ক্যাটালগগুলো আছে সেগুলো ফেসবুক আপনার অডিয়েন্সের কাছে এগুলো ডিসপ্লে করবে, যাতে কাস্টমাররা খুব সহজে আপনার পণ্য বা সেবা পছন্দ করে কিনতে পারে।

ক্যাটলগ দেখলে ভিজিটর বা কাস্টমাররা আপনার পণ্য বা সেবা সম্পর্কে সঠিক তথ্য নিতে পারে। কাস্টমারদের যদি এই ক্যাটলগ পছন্দ হয়ে যায় তাহলে আপনার পণ্য বা সেবার সেলও বৃদ্ধি পাবে।

আপনি যদি প্রোডাক্টের ভালো সেল জেনারেট করতে চান তাহলে এই ক্যাটালগ সেল অপশনটি বেছে নিবেন।

১১। স্টোর ভিজিটস

ওয়েবসাইটে যতবেশি ভিজিটর আসবে তত বেশি সেল জেনারেট হবে। আপনার বিজনেসের যে ওয়েবসাইটটি আছে সেটিতে যদি ফেসবুকে যে ভিজিটর আছে তারা আপনার ওয়েবসাইটে ভিজিট করে, তাহলে আপনার প্রোডাক্টের সেল বৃদ্ধি পাবে।

আপনি যদি ওয়েবসাইটে ভিজিটর নিয়ে আসতে চান তাহলে স্টোর ভিজিট অপশনটি বেছে নেবেন এবং এটির মাধ্যমে আপনার ক্যাম্পেইনটি রান করবেন।

শেষ কথা

এতক্ষণে নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন ফেসবুকে কিভাবে বিজ্ঞাপন দিবেন এবং সেল জেনারেট করবেন। ফেসবুকে সঠিকভাবে বিজ্ঞাপন দেওয়ার মাধ্যমে আপনার বাণিজ্যিক প্রসার ঘটাতে পারেন।

আপনি যদি নিজে এই বিষয়ে দক্ষ হন তাহলে নিজেই ফেসবুকে নতুন পেইজ তৈরি করে বিজ্ঞাপন দিতে পারেন। তা না হলে কোন প্রতিনিধির সাহায্য নিতে পারেন।

যারা একেবারে বিজনেসে নতুন, তাদের ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য প্রথমে কম বাজেটে শুরু করা উচিত। আপনার ওয়ালে এংগেজমেন্ট বাড়তে থাকলে তখন আপনি বাজেট বাড়িয়ে নিতে পারেন।

সঠিকভাবে যদি আপনি বিজ্ঞাপনটি দিতে পারেন তাহলে আপনার ওয়ালে ভিজিটর বেশি আসবে এবং লাইক, কমেন্ট, শেয়ার বেশি পাবেন। আপনার পণ্য বা সেবার ভালো সেল জেনারেট করতে পারবেন।

তবে যদি কোনো প্রতিনিধি বা ব্যক্তির কাছ থেকে বিজ্ঞাপন দেন তবে অবশ্যই কত ডলারের বিজ্ঞাপন দিতে চাচ্ছেন সেটা আগে ঠিক করে নিবেন এবং ভালো প্রতিনিধি সিলেক্ট করবেন। যাতে তার কাছে বিজ্ঞাপন দিয়ে আপনার বিজ্ঞাপনটি সঠিকভাবে জেনারেট হয় এবং এঙ্গেজমেন্ট এর সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।

2 thoughts on “ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেওয়ার নিয়ম এবং খরচ : পেইড মার্কেটিং টিউটোরিয়াল”

  1. আপনার কিছু লেখা আংশিক ইংরেজিতে অনুবাদ করে পোস্ট করা যাবে কি?

    1. কোন ওয়েবসাইট, ব্লগে পোস্ট করা ডিজিটাল মিডিয়া অ্যাক্টের আওতায় নিষিদ্ধ।
      সোশ্যাল মিডিয়াতে পোস্ট করতে পারবেন, তবে অবশ্যই সোর্স যুক্ত করতে হবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top