বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম একদমই সিম্পল। এখন ঘরে বসেই অ্যাপের মাধ্যমে বিকাশ একাউন্ট খোলা যায়। ঘরে বসে বিকাশ একাউন্ট খোলার জন্য শুধুমাত্র একটি স্মার্টফোন এবং ভোটার আইডি কার্ড প্রয়োজন। এছাড়া আরো বিভিন্ন উপায়ে বিকাশ একাউন্ট খোলা যায়। আমরা অনেকেই আছি যারা বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম জানিনা, যার কারণে প্রায়শই টাকা-পয়সা লেনদেন করতে অনেক হিমশিম খেতে হচ্ছে।
আপনিও কি একটি বিকাশ পার্সোনাল কিংবা এজেন্ট একাউন্ট খোলার কথা ভাবছেন! বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম ২০২৩ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান?
আপনি যদি এখনো বিকাশ একাউন্ট খুলে না থাকেন, তাহলে বিকাশ একাউন্ট খোলার সাথে সাথেই ২০০ টাকা বোনাস পেয়ে যাবেন, সেইসাথে কেনাকাটা ও পেমেন্ট এর উপর বিভিন্ন অফার তো থাকেছেই।
তাই, এসব সুবিধা এবং অফার যেন আপনি মিস না করেন, সেজন্য আজ আমরা বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম ২০২৩ সম্পর্কে আলোচনা করবো যেন আপনি আজকের আর্টিকেলটি পড়া শেষে নিজেই ঘরে বসে বিকাশ একাউন্ট খুলতে পারেন।
একনজরে সম্পূর্ণ আর্টিকেল
বিকাশ কি
বিকাশ বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় মোবাইল-ফোন ভিত্তিক টাকা স্থানান্তর (এমএফএস) বা মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান। বিকাশ বর্তমানে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় মোবাইল ব্যাংকিং সেবা।
ডাচ বাংলা ব্যাংক বাংলাদেশের প্রথম মোবাইল ব্যাংকিং সেবা রকেট নিয়ে আসার কিছুদিন পর বিকাশের আবির্ভাব ঘটে। তবে বিভিন্ন সুবিধা এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলেও পর্যাপ্ত এজেন্ট পয়েন্ট থাকায় জনপ্রিয়তায় সবাইকে ছাপিয়ে যায় বিকাশ।
বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম ২০২৩ | How to open bKash Account
বিকাশ একাউন্ট খোলার ৪ টি নিয়ম রয়েছে, যথা-
- বিকাশের মোবাইলের অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে একাউন্ট খোলা
- বিকাশ এজেন্ট এর মাধ্যমে একাউন্ট খোলা
- ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন পয়েন্টের মাধ্যমে একাউন্ট খোলা, এবং
- বিকাশ গ্রাহক কেন্দ্রে গিয়ে একাউন্ট খোলা যাবে।
বিকাশ একাউন্ট খোলার জন্য কি কি প্রয়োজন?
- NID (জাতীয় পরিচয় পত্র)/ ড্রাইভিং লাইসেন্স/ পাসপোর্ট, কিংবা Birth Certificate (জন্ম নিবন্ধন সার্টিফিকেট)
- স্মার্টফোন, তবে বাটন মোবাইলেও বিকাশ একাউন্ট খোলা যায়।
- পাসপোর্ট সাইজ ছবি (
অ্যাপ দিয়ে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম
পনি চাইলে নিজে নিজে আপনার বিকাশ একাউন্ট খুলে নিতে পারেন। বিকাশ অ্যাপ দিয়ে ঘরে বসে বিকাশ একাউন্ট খোলা যায়।
অ্যাপ দিয়ে বিকাশ একাউন্ট খোলার জন্য যা যা লাগবে:
- স্মার্টফোন
- মূল ভোটার আইডি কার্ড
ঘরে বসে বিকাশ অ্যাপ দিয়ে একাউন্ট খোলার নিয়ম:
- প্রথমে আপনার মোবাইলের প্লেস্টোর অথবা অ্যাপস্টোর থেকে বিকাশের অফিসিয়াল অ্যাপ্লিকেশনটি ডাউনলোড করে নিন।
- এবার বিকাশ অ্যাপ্লিকেশন-টি আপনার মোবাইলে ওপেন করুন।
- এরপর লগিন/রেজিস্ট্রেশন এ ট্যাপ করুন।
- আপনি যে নাম্বারে বিকাশ একাউন্ট খুলতে চান সেই নাম্বার-টি সঠিকভাবে বসিয়ে লিখে নিন।
- এরপর যে মোবাইল অপারেটরের সিম ব্যবহার করছেন সেটি সিলেক্ট করে দিন, যেমন: রবি, গ্রামীণফোন।
- এবার আপনার মোবাইলে ৬ ডিজিটের একটি ওটিপি (ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড) পাঠানো হবে, ৬ ডিজিটের গোপন নাম্বারটি সঠিকভাবে সাবমিট করুন।
- এরপর, বিকাশের নিয়ম এবং শর্তাবলী দেখে এবং সম্মতি দিয়ে পরবর্তী ধাপে এগিয়ে যেতে হবে।
- রেজিস্ট্রেশন শুরু করার জন্য আপনার অরিজিনাল এনআইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয় পত্রের সামনের অংশ ও পেছনের অংশয়ের ছবি ভালোভাবে তুলে সাবমিট করতে হবে।
- আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রে উল্লেখ করা নাম, ঠিকানা ও অন্যান্য তথ্য ঠিক আছে কি না তা যাচাই করুন।
- এবার আপনার নিজের ছবি বা সেলফি তুলে সাবমিট করতে হবে। ছবি তোলার সময় ডানে, বামে তাকাবেন এবং দুই থেকে তিনবার দ্রুত চোখ খুলবেন এবং বন্ধ করবেন।
- রেজিস্ট্রেশনের সকল তথ্য যাচাই করে সাবমিট করুন।
- এরপর কনফার্মেশন এসএমএসের জন্য অপেক্ষা করুন, এসএমএস পেলে লগইন করুন।
বিকাশ একাউন্ট পাসওয়ার্ড সেট করার নিয়ম:
- একাউন্ট কনফার্মেশন মেসেজ পাওয়ার পর পুণরায় বিকাশ অ্যাপটি ওপেন করুন।
- আপনার বিকাশ একাউন্টের নাম্বারটি বসিয়ে পরবর্তী ধাপে এগিয়ে যান।
- আবারও মোবাইল সিম অপরেটর সিলেক্ট করুন।
- আপনার মোবাইলে আসা ৬ ডিজিটের ওটিপি (ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড) নাম্বারটি লিখে সাবমিট করুন।
- এবার আপনি আপনার পছন্দমত ৫ ডিজিটের গোপন নতুন পিন কোড সেট করুন। (১২৩৪৫ বা ২৩৪৫৬ এমন সহজ পিন কোড দেওয়া থেকে বিরত থাকবেন) ।
- পূর্বে সাবমিট করা ৫ ডিজিটের গোপন পিনটি পুণরায় লিখে কনফার্ম করুন।
বিকাশ একাউন্ট সাজানোর নিয়ম:
- পিন সেট করার পর আপনার বিকাশ নাম্বার এবং গোপন পিন কোড দিয়ে বিকাশ একাউন্টে লগইন করুন।
- এরপর আপনার নাম সেট করুন এবং পরবর্তী ধাপে আপনার ছবি সিলেক্ট করে সেভ করুন।
এখন আপনার বিকাশ একাউন্ট টি সফলভাবে সক্রিয় হয়ে গিয়েছে, আপনি চাইলে আপনার প্রয়োজনীয় লেনদেন চালু করতে পারেন।
এজেন্টের মাধ্যমে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম
বাটন মোবাইলে বিকাশ একাউন্ট খোলার জন্য নিকটস্থ এজেন্ট পয়েন্টে যেতে পারেন। তাছাড়া, স্মার্টফোন থাকা সত্ত্বেও যদি আপনার বিকাশ একাউন্ট খুলতে কোন সমস্যা হয়, তাহলেও এজেন্ট পয়েন্ট থেকে সম্পূর্ণ ফ্রিতে বিকাশ একাউন্ট খুলে নিতে পারবেন।
বিকাশ এজেন্টের কাছে একাউন্ট খোলার জন্য যা যা লাগবে:
- NID (জাতীয় পরিচয় পত্র)/ ড্রাইভিং লাইসেন্স/ পাসপোর্ট এর মূল কপি এবং ফটোকপি
- একটিভ মোবাইল, এবং
- পাসপোর্ট সাইজ ছবি (১কপি)
এজেন্ট পয়েন্টে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম:
- প্রথমে এজেন্টের কাছে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র অথবা জাতীয় পরিচয় পত্রে এককপি ফটোকপি সাথে নিয়ে যেতে হবে।
- জাতীয় পরিচয় পত্র সাথে অবশ্যই দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ফটোকপি নিয়ে যেতে হবে।
- এরপর এজেন্ট আপনার কাছে একটি সক্রিয় মোবাইল নাম্বার চাইবে।
- বিকাশের এজেন্ট যখন আপনার সকল তথ্য সাবমিট করবে, এবং সাবমিট করার কনফার্মেশন এসএমএসের জন্য অপেক্ষা করতে হবে । এরপর আপনার বিকাশ নাম্বারে নিশ্চিতকরণ এসএমএস আসবে।
- এবার আপনাকে ৫ ডিজিটের গোপন পিন সেট করে বিকাশ একাউন্ট-টি সক্রিয় করতে হবে।
জন্ম নিবন্ধন দিয়ে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম
আপনার বয়স ১৮ বছর এর কম হলে আপনি ন্যাশনাল আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয় পত্র পাবেন না। ফলে, বিকাশ এপ্লিকেশনের মাধ্যমে বিকাশ একাউন্ট খুলতে পারবেন না। অথচ, আপনার একটি বিকাশ একাউন্টের খুবই প্রয়োজন, এখন কি করেবেন? কোন সমস্যা নেই, আপনার জন্ম নিবন্ধন দিয়েও বিকাশ একাউন্ট খুলে নিতে পারেন।
জন্ম নিবন্ধন দিয়ে বিকাশ একাউন্ট খুলতে আপনার সদ্যতোলা দুইকপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি, জন্ম নিবন্ধন ফটোকপি নিয়ে আপনাকে যেকোন বিকাশ এজেন্ট অথবা নিকটস্থ বিকাশের কাস্টমার কেয়ার অফিসে যেতে হবে।
ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন পয়েন্টের মাধ্যমে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম
আপনি যদি ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন পয়েন্ট থেকে বিকাশ একাউন্ট খুলতে চান, তবে কি কি প্রয়োজন হবে, তা দেখে নেওয়া যাক:
- স্মার্টফোন অথবা ফিচারফোন এবং
- ভোটার আইডি কার্ডের মূল কপি।
নিয়মাবলীঃ
- আপনার মোবাইল নাম্বার এজেন্টকে দিন এবং মোবাইল নাম্বার ও অপারেটর সম্পর্কে জানান।
- আপনার নাম্বারে পাঠানো রেফারেন্স কোড এজেন্টকে দিন।
- এজেন্ট আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের উভয় পাশের ছবি তুলবেন।
- কেওয়াইসি এন্ট্রি সম্পন্ন করার জন্য এজেন্ট আপনার ছবি তুলে নিবেন।
- কনফার্মেশন সফল হলে আপনি একটি এসএমএস পাবেন।
- এরপর আপনি আপনার ইচ্ছামতো ৫ ডিজিটের গোপন পিন সেট করে নিন।
বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম
যারা বিকাশের এজেন্ট একাউন্ট খুলতে চান তাদের জন্য এই অংশটুকু বেশ গুরুত্বপূর্ণ। বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম এখন অনেকেই জানলেও কিভাবে বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খুলতে হয়, তা খুব কম লোকই জানি। বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার যোগ্যতা, কোথায় গিয়ে এজেন্ট একাউন্ট খুলতে হয় এবং কি কি কাগজ পত্রের প্রয়োজন হতে পারে সেসম্পর্কেও জানা দরকার।
বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার জন্য যা যা লাগবে:
- জাতীয় পরিচয়পত্র / ড্রাইভিং লাইসেন্স।
- ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
- একটি সক্রিয় মোবাইল নাম্বার।
- ট্রেড লাইসেন্স।
- আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম।
বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম:
- কাগজপত্র নিয়ে নিকটস্থ বিকাশের কাস্টমার কেয়ার অফিস অথবা এজেন্টের কাছে যেতে হবে।
- কাস্টমার এজেন্ট কিংবা বিকাশ এজেন্ট আপনাকে একটি ফরম দিবে।
- আপনার কাগজ-পত্রের সাথে মিল রেখে ফরম-টি পূরণ করে জমা দিন।
- কাগজপত্র যাচাই পূর্বক আপনাকে বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খুলে দিবে।
বিকাশ একাউন্ট চেক করার নিয়ম
অ্যাপ দিয়ে বিকাশ একাউন্ট দেখার নিয়ম:
- বিকাশ ব্যালেন্স চেক করতে চান তাহলে আপনার স্মার্টফোনের বিকাশ অ্যাপ ওপেন করুন
- এরপর আপনার বিকাশ নাম্বার এবং ৫ ডিজিটের গোপন পিন নাম্বার টি বসিয়ে লগইন করুন।
- এরপর অ্যাপ ওপেন হলে “ট্যাপ ফর ব্যালেন্স” বাটনে ক্লিক করলেই আপনার বিকাশ একাউন্টে কত টাকা আছে দেখতে পারবেন।
ইউএসএসডি পদ্ধতিতে বিকাশ একাউন্ট দেখার নিয়ম:
- মোবাইল ড্যায়াল প্যাড থেকে *২৪৭# ড্যায়াল করুন
- ৮ নম্বর অপশন বা My bKash অর্থাৎ ৮নং অপশন সিলেক্ট করার জন্য ৮ লিখে রিপ্লাই দিন।
- এবার বিকাশ একাউন্ট ব্যালেন্স চেক করার জন্য ১ লিখে রিপ্লাই দিন।
- গিয়ে চেক ব্যালান্সে ক্লিক করে আপনার বিকাশ একাউন্টের টাকা দেখতে পাবেন।
- এরপর আপনার ৫ ডিজিটের পিন লিখে রিপ্লাই দিলেই আপনার বিকাশ একাউন্ট চেক করতে পারবেন।
বিকাশ ক্যাশ আউট খরচ
বিকাশ ক্যাশ আউট খরচ |
|
মাধ্যম | ক্যাশ আউট চার্জ |
এটিএম বুথ | ১৪.৫ টাকা |
ইউএসএসডি মেথড | ১৮.৫ টাকা |
বিকাশ অ্যাপ | ১৮.৫ টাকা |
প্রিয় এজেন্ট | ১৪.৫ টাকা |
এছাড়া, বিকাশে ১০০ টাকা পর্যন্ত ফ্রি সেন্ড মানি করা যায়। তবে ১০০ টাকার বেশি পরিমাণ টাকা পাঠানোর জন্য ৫ টাকা ফি প্রযোজ্য হবে।
তবে ৫টি প্রিয় নাম্বারে প্রতি মাসে ২৫০০০ টাকা পর্যন্ত ফ্রি সেন্ড করা যায়। খরচ কমানোর উপায় সম্পর্কে জানতে বিকাশ ক্যাশ আউট ও সেন্ড মানি খরচ সম্পর্কিত আর্টিকেলটি পড়ে নিন।
বিকাশ একাউন্টের সুবিধা অসুবিধা
বিকাশ একাউন্ট খোলার বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে। বিকাশের মাধ্যমে সহজে একস্থান থেকে অন্য স্থানে খব সহজে টাকা-পয়সা লেনদেন করা যায় এছাড়াও, বিকাশ একাউন্টের মাধ্যমে আরো বেশ কিছু সুবিধামূলক কাজ করা যায়।
বিকাশ একাউন্টের সুবিধা সমূহ:
- বিকাশের মাধ্যমে খুব সহজে টাকা-পয়সা লেনদেন করা যায়।
- বিকাশের মাধ্যমে মোবাইল রিচার্জ করা যায়।
- মোবাইলের মাধ্যমে ব্যাংকিং ব্যবস্থা আছে।
- বিদেশ থেকে রেমিটেন্স নিয়ে আসার সুযোগ।
- বিকাশের মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিল, পানির বিল, গ্যাসের বিল, টিউশন ফি পরিশোধ ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ফি পরিশোধ করা সম্ভব।
- বিকাশ একাউন্ট খুলতে অতিরিক্ত কোন ব্যাংক একাউন্ট খোলার প্রয়োজন হয় না।
- বিকাশের পার্সোনাল একাউন্টে প্রতিদিন সর্বোচ্চ ২৫,০০০ টাকা উত্তেলন করা সম্ভব।
- ব্যাংক থেকে বিকাশে টাকা আনা যায়।
- প্রিয় এজেন্ট এর কাছে বিকাশ ক্যাশ আউট চার্জ মাত্র ১৪.৫০ টাকা।
বিকাশ একাউন্টের অসুবিধা:
বিকাশ একাউন্ট খোলার বেশ কিছু সুবিধা থাকলেও নগদ এবং রকেট এর তুলনায় অনেকগুলো অসুবিধাও রয়েছে, যেমন:
- বিকাশের মাধ্যমে সেন্ড মানি করতে গেলে অত্রিরক্ত টাকার প্রয়োজন হয়ে থাকে।
- প্রতি হাজারে টাকা উত্তোলন করার সময় ১৮.৫০ টাকা খরচ হয়, যা অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকগুলোর তুলনায় অনেকটা বেশি।
- পার্সোনাল একাউন্ট থেকে প্রতিদিন মাত্র ২৫,০০০ টাকা উত্তেলন করা যায়।
বিকাশ একাউন্ট খোলার বোনাস
বর্তমান সময়ে বিকাশে একাউন্ট খোলার জন্য বোনাস দিচ্ছে। প্রথমবার বিকাশ একাউন্ট খোলার ওয়েলকাম বোনাস হিসাবে পাচ্ছেন ২০০ টাকা, আর এই টাকাগুলো আপনি ৮ সপ্তাহের মধ্য কালেক্ট করতে পারবেন।
- প্রথমবার বিকাশ অ্যাপে লগ ইন করলে ২০ টাকা বোনাস
- ১ম সপ্তাহে ৩ বার অ্যাপে লগ ইন করলেই বোনাস পাবেন ১০ টাকা
- ২য় সপ্তাহে মোবাইল রিচার্জ করলে ১৫ টাকা বোনাস পাওয়া যাবে
- ৩য় সপ্তাহে এসে বিকাশে কুইজ খেলে সঠিক উত্তর দিলেই পাবেন আরো ১০ টাকা বোনাস
- ৪র্থ সপ্তাহে ১৫ টাকা সেন্ড মানি করার জন্য পাবেন ১৫ টাকা বোনাস
- ৫ম সপ্তাহে যেকোনো লেনদেনের জন্য থাকছে ২৫ টাকা বোনাস
- ৬ষ্ঠ সপ্তাহে পেমেন্ট করার জন্য বোনাস পাওয়া যাবে ৩০ টাকা
- ৭ম সপ্তাহে বিল পে করার জন্য আরো ৩৫ টাকা বোনাস, এবং
- ৮ম সপ্তাহে আবারো যেকোন লেনদেনের জন্য ৪০ টাকা বোনাস পাবেন।
বিকাশ একাউন্ট নাম্বার পরিবর্তন করার নিয়ম
অনেকের মনে এই প্রশ্নটা আসতে পারে যে, বিকাশের কি একাউন্ট নাম্বার পরিবর্তন করা সম্ভব? না, সরাসরি সম্ভব না। তবে, বর্তমান বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করে অন্য নাম্বারে একাউন্ট করতে পারবেন।
আপনার এখন যে নাম্বার দিয়ে বিকাশ একাউন্ট খুলেছেন সেই নাম্বার থেকে বিকাশ কল সেন্টারে ফোন করে বর্তমান বিকাশ একাউন্টটি বন্ধ করে নিতে হবে, এরপর আপনি যে নাম্বার দিয়ে বিকাশ একাউন্ট খুলতে চান সেই নাম্বার দিয়ে পুনরায় বিকাশ একাউন্ট খুলতে পারবেন।
বিকাশ একাউন্ট মালিকানা পরিবর্তন করার নিয়ম
বিকাশের মালিকানা পরিবর্তন করতে চাচ্ছেন? ধরুন, আপনি এখন যে বিকাশ একাউন্টটি ব্যবহার করছেন সেটি আপনার বাবার তথ্য এবং ভোটার আইডি কার্ড দিয়ে বিকাশ একাউন্ট খোলা, এখন বিকাশ একাউন্টটি আপনার নিজস্ব তথ্য এবং এনআইডি দিয়ে আপডেট করে মালিকানা পরিবর্তন করতে চান। এমতাবস্থায়, মালিকানা পরিবর্তন করতে নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন:
- যার নামে বিকাশ একাউন্ট রয়েছে তাকে স্ব-শরীরে এনআইডি কার্ডসহ বিকাশের কাস্টমার অফিসে নিয়ে যেতে হবে।
- নতুন যার নামে বিকাশ একাউন্ট খোলা হবে তার এনআইডি কার্ডের ফটোকপি এবং পাসপোর্ট সাইজের ছবি সাথে করে নিয়ে যেতে হবে।
- বিকাশ একাউন্টের ব্যালেন্স ০ (শূন্য) করে নিতে হবে।
- এরপর আপনার ID কার্ড, আপনার ছবি, আপনার সিম এর তথ্য তারা চেক করবে।
- সব কিছু ঠিক থাকলে বিকাশ কাস্টমার সেন্টারের প্রতিনিধি আপনার পুরাতন একাউন্টি বন্ধ করে দিবে। আর এর মাধ্যমে আপনার মোবাইল নাম্বারটি যেকোন এনআইডি কার্ড দিয়ে বিকাশ একাউন্ট খোলার জন্য উন্মুক্ত হয়ে গেল। এখন আপনি আপনার এই ID ব্যাবহার করে অন্য যে কোন নাম্বারে বিকাশ খুলতে পারবেন।
- আপনি বিকাশ কাস্টমার অফিসারকে জানালে আপনার নতুন নাম্বারে বিকাশ একাউন্ট খুলে দিবে। তাছাড়া, চাইলে উপরে উল্লেখ করা বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম দেখেও পরবর্তীতে যেকোন সময় বিকাশ একাউন্ট খুলতে পারবেন। আর এভাবেই বিকাশের মালিকানা পরিবর্তন করা সম্ভব হবে।
বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার নিয়ম
আপনার প্রয়োজনে বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করতে নিচের পদ্ধতি অনুসরণ করুন:
- আপনার বিকাশের ব্যলান্সের টাকা ০ (শুন্য) করে নিন।
- বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার জন্য প্রথমে বিকাশ হেল্পলাইন নাম্বার ১৬২৪৭ এ কল দিন।
- আপনার যে নাম্বারে বিকাশ একাউন্ট খোলা রয়েছে সেই নাম্বার ব্যবহার করে ফোন করুন।
- এবার, আপনি তাদের বলবেন যে “আমি আমার বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করতে চাই”
- কাস্টমার প্রতিনিধি রআপনার কাছ থেকে একাউন্ট সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য জানতে চাইবে, যেমন: আপনার নাম, বিগত কিছু লেনদেনের হিসাব, আপনার এনআইডি নাম্বার ইত্যাদি।
সবকিছু ঠিক থাকলে আপনার বিকাশ একাউন্টের বন্ধের কাজ প্রসেসিং হবে, এবং সফলভাবে বিকাশ একাউন্টটি বন্ধ হয়ে যাবে। বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করা সম্পর্কে বিস্তারিত আরও পড়ে আসতে পারেন ।
বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম নিয়ে শেষ কথা
বিকাশ মোবাইল ব্যাংকিং সেবাটি গ্রহনের ফলে আমরা সবাই খুব কম সময়ে এবং খুব দ্রুতই দেশে-বিদেশে টাকা লেনদেন করতে পারছি। আমরা আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে জানানোর চেষ্টা করেছি বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে। আশা করছি এই আর্টিকেল পড়ার মাধ্যমে আপনি বিকাশ একাউন্ট খুলতে পেরেছেন।