জীব বিজ্ঞান নিয়ে আমাদের যে ভয়, তার ২টি কারণ। প্রথমত জীব বিজ্ঞান প্রথম প্রত্রের ১ম অধ্যয়: কোষ ও কোষের গঠন এবং জীব বিজ্ঞান ২য় পত্র তথা প্রাণি বিজ্ঞান এর প্রথম অধ্যয়: প্রাণীর বিভিন্নতা ও শ্রেণিবিন্যাস। এই অধ্যয়ের পর্ব, উপ-পর্ব, কোষ, উদ্ভুত অঙ্গানু মনে রাখা বেশ কঠিন। কিন্তু, ছন্দ দিয়ে মনে রাখলে বেশ সহজ হয়ে যায়।
যে বউ যেভাবে বশ মানে আর কি! চলো আর একবার চেষ্টা করে দেখি প্রাণি বিজ্ঞান তোমার বশ মানে কি না।
একনজরে সম্পূর্ণ আর্টিকেল
প্রাণি বিজ্ঞান – প্রাণীর বিভিন্নতা ও শ্রেণিবিন্যাস
প্রানিজগতের প্রধান ৯টি পর্ব মনে রাখার ছন্দ
“পনিপ্লানে এনিআর একাইমকো”
- প = Porifera
- নি = cnidaria
- প্লা =Platyhelminthes
- নে =Nematoda
- এ =Annelida
- আর = Arthropoda
- একাই = Echinodermata
- ম = Mollusca
- কো = Chordata
প্রাণিজগতে সর্বমোট ৩৩টি পর্ব রয়েছে। এদেরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে;
- Major phyla
- Minor phyla
উপরে বর্ণিত ৯টি পর্ব হলো Major phyla বাকী ২৪টি হল Minor phyla
বিভিন্ন প্রাণীর লার্ভার নাম: (পর্ব = লার্ভার নাম)
- Annelida = Trochophore (ট্রোকোফোর)
- Cnidaria / Jellyfish = Ephyra (এফাইরা)
- Lampreys = Ammoecete (এ্যামোওসিট)
- Echinodermata = Ariculariun (অরিকুলারিয়ান)
ভ্রুণীয় মেসোডার্ম উদ্ভুত অঙ্গানু মনে রাখার ছন্দ :
“ড্যাডি পেরেক সংযোজন করে”
- ড্যা = ডেন্টিন
- ডি = ডার্মিস
- পে = পেশী , পৌষ্টিক নালীর বহিরাবরণ
- রে = রেচন তন্ত্র
- ক = কংকাল তন্ত্র
- সং = সংবহন তন্ত্র
- যো = যোজক কলা
- জন = জনন তন্ত
Vertebrata উপ-পর্বের নাম মনে রাখার ছন্দ :
“কোনদিন একটি আরশোলা আমি রেধেছিলাম, অভি মামা”
- কোনদিন – chondrichthyes
- একটি – Actinopterigii
- আরশোলা – SArcopterygii
- আমি – Amphibia
- রেধেছিলাম – Reptilia
- অভি – Aves
- মামা – Mammalia
প্রাণীর পরিচিতি মনে রাখার ছন্দ – প্রাণি বিজ্ঞান
[quads id=6]
তেলাপোকার রেচনতন্ত্রের অংশ মনে রাখার টেকনিক
“সেই মা কি নেই”
- সে = স্নেহবস্তু
- ই = ইউরিকাসের গ্রন্থি
- মা = মালপিজিয়ান নালিকা
- কি = কিউটিকল
- নেই = নেফ্রোসাইট
তেলাপোকার সয়ংক্রিয় স্নায়ুর অংশসমুহ মনে রাখার ছন্দ
“ফ্রন্টি হাই! ইংলিশ পড়ে মরি”
- ফ্রন্টি=ফ্রন্টাল
- হাই=হাইপোসেরেব্রাল
- ইংলিশ=ইংগ্লুভিয়াল
- পড়ে=প্রোভেন্ট্রিকুলার
- ম=মধ্যরেখিয়
- রি=রিট্রো
হাইড্রা |
হাইড্রার এপিডার্মিস এর কোষগুলো মনে রাখার সহজ ছন্দ
“নিজ পইসা সংগ্রহ”
- নি – নিডোসাইট
- জ – জনন কোষ
- প- পেশি আবরণি কোষ
- ই – ইন্টারস্টিশিআল
- সা – স্নায়ু কোষ
- সং- সংবেদি কোষ
- গ্রহ – গ্রন্থি কোষ
রক্ত ও সঞ্চালন অধ্যয় সহজে মনে রাখার উপায়
রক্ত সঞ্চালন |
মানবদেহের লোহিত রক্তকণিকার কাজ মনে রাখার ছন্দ
“O2 বস”
- 02= অধিক পরিমানে অক্সিজেন পরিবহণ
- ব= বাফাররূপে অম্ল ক্ষারের ভারসাম্য রক্ষা করা
- ব= ব্লাড গ্রুপিং
- ব= বিলিরুবিন ও বিলিভার্ডিণ উৎপাদন
- স= সান্দ্রতা ও ঘনত্ব রক্ষা করা
লসিকার কাজ মনে রাখার ছন্দ
“অপলক”
- অ = 0২ পরিবহণ
- প= প্রোটিন পরিবহণ
- প= পুষ্টি পদার্থ পরিবহণ
- প= প্রতিরক্ষা ও প্রতিরোধ
- ল= লিপিড পরিবহণ
- ক= কলার গাঠনিক অখন্ডতা রক্ষা করা
লসিকা নিয়ে আরো কিছু তথ্য
- আপেক্ষিক গুরুত্ব = ১.০১৫১
- এতে রক্ত জমাট বাধার উপাদান থাকেনা
- ৯৪% পানি ও ৬% কঠিন পদার্থ থাকে
- লসিকা H+ আয়নের ঘনত্ব নিয়ন্ত্রণ করে।
রক্ত জমাট বাঁধার প্রধান (চারটি) ফ্যাক্টর মনে রাখার উপায়
ফুল পড়ে টুপ করে
- ফুল=ফিব্রিনোজেন
- পড়ে=প্রোথম্বিন
- টুপ=টিস্যু থ্রম্বোপ্লাস্টিন
- করে=Ca2
হ্নৎপিন্ডের স্থিতিকাল মনে রাখার কৌশল
“অডাসি”(৮৭১)
- অ =অলিন্দ (০.৮ সেকেন্ড )
- ডা =ডায়াস্টোল (০.৭ Sec)
- সি =সিস্টোল (০.১ sec)
“নিডাসি”(৮৫৩)
- নি =নিলয় (০.৮ sec)
- ডা =ডায়াস্টোল(০.৫ sec)
- সি =সিস্টোল(০.৩ sec)
ধমনী – শিরার পার্থক্য
হৃৎপিণ্ডকে তুলনা করা যায় রক্ত পাম্প করার মেশিন হিসেবে। আর ফুসফুস হল রক্ত বিশুদ্ধকরণ ফ্যাক্টরি। দূষিত রক্ত শিরার মাধ্যমে হৃৎপিণ্ড হয়ে ফুসফুসে যায় সেখান থেকে বিশুদ্ধ কাঁচামাল (অক্সিজেনযুক্ত রক্ত) আবার হৃৎপিণ্ড হয়ে সারা শরীরে যায়।
(ব্যতিক্রম-পালমোনারী ধমনী ও শিরা)
১) সম্পূর্ণ শরীর থেকে রক্ত উপরে আনতে অভিকর্ষজ ত্বরণ g এর বিরুদ্ধে কাজ করতে হবে! (হার্ট ত উপরে, পা থেকে রক্ত উপরে উঠানোর কথা চিন্তা কর) তাই রক্ত যাতে পরে না যায়।
২) শিরাতে কপাটিকা থাকে
৩) একই কারণে শিরাতে রক্তচাপ কম হবে (নিচ থেকে উপরে আনলে বেগ কমে যায় না)
৪) শিরার প্রাচীর পুরু হয় না। যেহেতু রক্তচাপ কম,পুরু প্রাচীরের দরকার নেই।
৫) রক্ত ত সব জায়গা থেকেই টানতে হবে নাকি? এ কারণে এদের অবস্থান দেহের পরিধির দিকে (স্কিনের দিকে)
৬) শিরাতে দূষিত রক্ত থাকে। তাই, একটু নীলচে বর্ণের রক্ত পরিবহণ করে।
৭) শিরাতে রক্তচাপ কম, তাই ছিদ্র বড়! (স্বাভাবিক)
৮) রক্তপ্রবাহের দিক ( ১ এর টা স্প্লিট কর )
এবার আসি ধমনীতে, ধমনীতেরক্ত নামবে g এর প্রভাবে + হার্টপাম্প (ঠেলা) দেবে। ফলে, কপাটিকার দরকার নাই। রক্তচাপ বেশি। প্রেসার সামলানোর জন্য পুরু প্রাচীর। দেহের কেন্দ্রের দিকে অবস্থান করে। বিশুদ্ধ রক্ত, লালচে বর্ণের।
চাপ সামলানোর জন্য মোটা প্রাচীর আছে, ছিদ্র ছোট হলেও সমস্যা নেই।
জীব বিজ্ঞানের প্রাণি বিজ্ঞান অংশের তিনটি অধ্যয় কিভাবে সহজে মনে রাখা যায় তা আমরা ছন্দ দিয়ে শিখে নিলাম। আশা করি, জীব বিজ্ঞান ২য় পত্রের তিনটি অধ্যয় যথাক্রমে- প্রাণির বিবিন্নতা এবং শেণীবিন্যাস, প্রাণির পরিচিতি এবং রক্ত সঞ্চালন নিয়ে আর কোন ঝামেলায় পরতে হবে না। ভাল লাগলে বন্ধুদেরকেও শেখার সুযোগ করে দিবে।