মানবদেহের ২০৬ টি হাড়ের নাম | মানব দেহের অস্থি মনে রাখার কৌশল

মানব দেহের অস্থি

মানবদেহের ২০৬ টি হাড়ের নাম এবং মানব দেহের অস্থি মনে রাখার কৌশল জানতে চাও? এতগুলো হাড় মনে রাখার জন্য কৌশল ও ছন্দ ব্যবহার করে না শিখলে পরীক্ষার উত্তর করা বেশ কঠিন।

জীব বিজ্ঞান ২য় পত্রের কোন অধ্যয়টি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ? প্রাণি বিজ্ঞান অংশের তথা পুরো জীব বিজ্ঞানেরই বস অধ্যয় মানব শারীরতত্ত্ব: চলন ও অঙ্গচালনা। জীব বিজ্ঞান এর প্রাণি অংশে যদি কোন তালা ঝুলানো থাকতো, তাহলে চাবি হতো মানব শারীরতত্ত্ব: চলন ও অঙ্গচালনা অধ্যয়। যেকোন পরীক্ষায় জীব বিজ্ঞান এর প্রশ্ন থাকলে চলন অধ্যয় থেকেও প্রশ্ন থাকবে।

যারা মেডিকেলে পড়বে, তাদের তো এই অধ্যয়কে প্রতিদিন আদর যত্ন করা উচিৎ (পড়তে হবে আর কি!!!)। চলন ও অঙ্গচালনা আমরা কিভাবে করি এবং মানুষের কয়টি হাড় আছে, কোথায় কয়টি হাড় আছে, হাড়গুলোর নাম সহজে মনে রাখার জন্য সুন্দর সুন্দর ছন্দ দিয়ে অধ্যয়কে নতুন আঙ্গিকে সাজানো হয়েছে। চলো তাহলে মানবদেহের ২০৬ টি হাড়ের নাম এবং মানব দেহের অস্থি মনে রাখার কৌশল জেনে নেওয়া যাক।

মানবদেহের ২০৬ টি হাড়ের নাম | মানব দেহের অস্থি মনে রাখার কৌশল

৭টি টার্সাল অস্থি মনে রাখার উপায়

” কাল কি কোন নেভি টানবে ? “

  1. কাল = ক্যালকেনিয়াস
  2. কি = কিউবয়েড
  3. কোন = কুনিফর্ম (৩টি)
  4. নেভি  =নেভিকুলার
  5. টানবে = ট্যালাস

কার্পালগুলোর নাম মনে রাখার সহজ উপায়

“She looks too pretty, try to catch her”

  • She – স্ক্যাফয়েড
  • Looks – লুনেট
  • Too – ট্রাইকুয়েট্রাল
  • Pretty – পিসিফর্ম প্রান্তের দিকে
  • Try – ট্রাপেজিয়াম
  • To – ট্রাপেজয়েড
  • Catch – ক্যাপিটেট
  • Her – হ্যামেট
চলন, জীব বিজ্ঞান, প্রাণি বিজ্ঞান, চলন অধ‌্যয়, মানবদেহ,
মানবশরীরতত্ত্ব -জীব বিজ্ঞান ২য় পত্র;
আরো পড়ুন:  প্রাণীর বিভিন্নতা ও শ্রেণিবিন্যাস, প্রাণীর পরিচিতি : পর্ব মনে রাখার ছন্দ

 করোটিকার ৮টি অস্থি মনে রাখার সূত্র

“eh Full STOP kor”

  • A- এথময়েড
  • Full- ফ্রন্টাল
  • S-স্ফেনয়েড
  • T-টেম্পোরাল (দুটি)
  • O- অক্সিপিটাল
  • P-প্যারাইটাল(দু টি)

অস্থির ইয়াং এজ কে বলা তরূণাস্থি, যেহেতু সে ইয়াং, তাই বুড়াদের ( অস্থি) মত সে দৃঢ় নয়, স্থিতিস্থাপক। বুড়া অস্থির মত এর কোন হ্যাবারশিয়ান তন্ত্র, ভ্যাকম্যান নালী নাই, অধিকাংশ তরূণাস্থি অল্প বয়সে পেঁকে গেলে অস্থি হয়ে যায়, but কিছুর ভাগ্য খুব ভালো, তারা সারা জীবন তরূণই থেকে যায়, যেমন, স্তন্যপায়ীর নাক, শ্বাসনালী, স্বরযন্ত্র।

তরূণাস্থির যেকোন কিছুর নামের পূর্বে, কণ্ড্রো উপসর্গ যুক্ত থাকে। যেমন,

  1. তরূণাস্থির আবরণ- পেরিকণ্ড্রিয়াম
  2. কোষ- কণ্ড্রোসাইট
  3. প্রোটিন- কন্ড্রোমিউকয়েড
  4. কণ্ড্রোঅ্যালবুনয়েড

ভাই-বোনঃ এরা তিন ভাই, এক বোন –

১. হায়ালিন= একে নিম্নোক্ত জায়গায় পাওয়া যায়।

Tips- “শ্বাসনালী, ব্যাঙ, হাঙ্গর”

শ্বাসনালী এর-

  • শ তে শ্বাসনালী
  • স তে – স্বরযন্ত্র
  • না তে – নাক

এবং

  • ব্যাঙ, হাঙ্গরের ভ্রুণ ও দেহ

[quads id=6]

২. স্থিতিস্থাপক বা Elastic, একে পাওয়া যায়-

Tips- Elastic এর জন্য 3E

  • E for eustechian tube ( ইউস্টেশিয়ান নালী)
  • E for epiglotis ( উপজিহ্বা)
  • E for external ear ( বর্হিকর্ণ বা পিনা)

৩. শ্বেত তন্তু (white fibre) – একে পাওয়া যায়- মেরূদণ্ডের কশেরূকা গুলোর মাঝখানে, ইণ্টার ভার্টিব্রাল ডিক্সে ।

৪. চুনময় বা ক্যালসিফাইড, এই সেই বোন, কারণ এ শুধু বোনস এর (bones) মাথায় থাকে, বড় বড় হাড়ের মাথায় একে পাওয়া যায় ।

যেমন- হিউমেরাস, ফিমারের মাথায়

অনৈচ্ছিক পেশীর  অবস্থান

ছন্দ : “সাগর পিশি লজ্জা পায়”

  • সা – শ্বাস নালী
  • সা – সিলিয়া পেশী (চোখের)
  • গ – গ্রন্থি নালী
  • গ- গ্রাসনালী
  • র – রক্ত নালী
  • র – রেচন নালী
  • ল – লসিকা নালী
  • জ – জরায়ু
  • জ -জনন নালী
  • পা – পৌষ্টিক নালী , পিত্ত থলী

মুখমন্ডলীয় অস্থি মনে রাখার টেকনিক

”মামার জানালাই ভ্রমর পাই”

  • মা = maxilla
  • মা = mandible
  • জা = zygomatic
  • না = nasal
  • লা = lacrymal
  • ই = inferior nasal
  • ভ্রমর = vomer
  • পাই =palatine

টেমপোরাল অস্থির চারটি অংশ মনে রাখার কৌশল

তার আগে আসো তোমাদের একটা গল্প শুনিয়ে দেই ;

মনে কর তুমি (টিনের) নতুন বাড়ি বানিয়েছ, বাড়িটি দেখতে (গম্বুজাকার ),একদিন হঠাৎ করে ঝড় আসলো, তোমার টিন খুলে (মাটিতে )পড়ে গেল, এখন তোমার বাড়ির সব টিন যদি মাটিতে পড়ে যায় তাহলে তো তোমার ছাদ (খোলা) আকাশে থাকবে তাই না ???

আরো পড়ুন:  কেমন হয় মৌমাছিদের জীবনধারা, সমাজব্যবস্থা? (প্রাণীর আচরণ, জীববিজ্ঞান ২য় পত্র)

টেমপোরাল অস্হির ৪ টি অংশ

  1. খোলা-খোলসাকূতির
  2. গম্বুজ-গম্বুজাকার
  3. মাটি-ম্যাস্টয়েড
  4. টিন-টিমপ্যানিক

কি সহজ হয়ে গেল না !!!!

মানবদেহের ২০৬টা হাড়

মানুষের নাকি ২০৬ টা হাড়। সত্যিই তাই? শোনা কথায় বিশ্বাস কি,  চলো গুনে দেখি!

 প্রথমেই পা

  •  ফিমার = ১ টি
  •  প্যাটেলা= ১ টি
  •  টিবিয়া = ১ টি
  •  ফিবুলা = ১ টি
  •  টারসাল= ৭ টি
  • মেটাটারসাল= ৫ টি
  •  ফ্যালানজেস= ১৪ টি

মোট= ৩০ টি, দুই পা এ হবে তাহলে= ৬০ টি হাড়!

এবার আসা যাক হাত এ-

  • হিউমেরাস= ১টি
  • রেডিয়াস= ১টি
  • আলনা = ১টি
  • কারপাল= ৮টি
  • মেটাকারপাল= ৫ টি
  • ফ্যালানজেস= ১৪ টি

মোট= ৩০টি, দুই হাতে হবে তাহলে= ৬০ টি

বুক হাতিয়ে দেখি এবার, কি বলো? 

  • রিব = ২৪ টি(দুই পাশে ১২ টি করে)
  • স্টারনাম = ১ টি(মাঝখানে)
  • ক্ল্যাভিকল = ২টি(দুইপাশে)
  • স্কাপুলা = ২টি(দুই পাশে পেছন দিকে)

মোট= ২৯ টি

মেরুদন্ড  দেখবো এবার!

(মেরুদন্ডের প্রত্যেক হাড়কে কশেরুকা বলা হয়)

  • সারভাইকাল(ঘাড়) = ৭ টি
  • থোরাসিক(বুক বরাবর পিঠে) = ১২ টি
  • লাম্বার(পেট ও কোমড় বরাবর পিঠে) = ৫ টি
  • স্যাক্রাম(লাম্বারের নিচে) = ১টি (৫টি কে ১ টি ধরা হয়)
  • কক্কিক্স(স্যাক্রামের নিচে) = ১টি(৪ টি কে ১ টি ধরা হয়)

মোট= ২৬ টি

হিপবোন= ২ টি

সবশেষে মাথায় আসা যাক

  • খুলি  =২২ টি
  • কানের ভেতরে ৩ টি করে দুইপাশে মোট = ৬ টি
  • হাইওয়েড (গলার উপরের দিকে থাকে) = ১টি

মোট= ২৯ টি

এবার গণনা করা যাক = ৬০+৬০+২৯+২৬+২+২৯ = ২০৬ টি হাড় । কি? মিললো তো! আচ্ছা বলো তো তোমার কয়টি হাড়? স্পর্শ করে করে গণনা করবে কিন্তু!!!! এবং অবশ‌্যই আমাকে বলতে ভুলবেনা, কোথায় – কয়টা কম বা বেশি হলো ।

মানব দেহ

  • মুখমন্ডলীর অস্থির সংখ্যা -১৪ টি।
  • মেরুদণ্ডে কশেরুকা আছে – ৩৩।
  • গ্রীবাদেশীয় কশেরুকা – ৭ টি।
  • বক্ষদেশীয় কশেরুকা- ১২ টি।
  • কটিদেশীয় কশেরুকা- ৫ টি।

 জীব বিজ্ঞান -চলন অধ্যয়ের কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন:

  • জবটুরেটর ফোরামেন পাওয়া যায় শ্রেণীচক্রে।
  • কংকাল গঠিত হয় – অস্থি ও তরুণাস্থি দিয়ে ।
  • লোহিত অস্থি মজ্জা থেকে উৎপন্ন হয়- R.B.C।
  • অস্থিসন্ধির গহ্বরে তৈলাক্ত পদার্থকে বলে- সাইনোভিয়াল রস।
  • প্রথম- কশেরুকার নাম অ্যাটলাস।
  • কংকাল বিশেষ ধরনের – যোজক কলা।
  • দ্বিতীয় গ্রীবাদেশীয় কশেরুকার নাম- অ্যাক্সিস।
  • মানুষের অক্ষীয় কংকালে – ৮০ টি অস্থি থাকে।
  • উপাক্ষীয় কংকালে অস্থির সংখ্যা -১২৬ টি।

প্রাণি বিজ্ঞান তথা জীব বিজ্ঞানের খুবই গুরুত্বপূর্ণ অধ্যয় মানব শারীরতত্ত্ব: চলন অঙ্গচালনা। পড়ার সময় ছন্দগুলো মনে রাখতে পারলে মাল্টিপল কোয়েশ্চেনে ভুল হবে না। জীব বিজ্ঞানে ভাল মার্কস পেতে মুখস্থবিদ্যায় পারদর্শীতার সাথে ট্রিক্স, ছন্দ তৈরি করাও শিখতে হবে।

আশা করি, মানব দেহের অস্থি মনে রাখার কৌশলগুলো রপ্ত করতে পারলে মানবদেহের ২০৬ টি হাড়ের নাম মনে রাখতে আর কোন সমস্যা হবে না ইন-শা-আল্লাহ

5 thoughts on “মানবদেহের ২০৬ টি হাড়ের নাম | মানব দেহের অস্থি মনে রাখার কৌশল”

  1. 206 টি হাড় মানব দেহে মনে রাখার সহজ কৌশল জানানোর জন্য ধন্যবাদ🙏

  2. গাজী তাওহীদ হাসান

    কার্পাল অস্থির নামগুলো মনে রাখতে পারছিলাম না। গুগল করে এই আর্টিকেলটা পেলাম। অনেক উপকার হয়েছে। আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দিক।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top