মধুর ইংরেজি প্রতিশব্দ Honey. এটি একটি মিষ্ট স্বাদের তরল পদার্থ। এর ঘনত্ব পানির তুলনায় অনেক বেশি। মধু ও চিনি উভয়ই খেতে মিষ্টি হলেও মধুর উপকারিতা ও রূপচর্চায় ব্যবহারের কারণে কারণে সবসময়ই মধুর কদর বেশি।
মৌমাছিরা সারাদিন ঘুরে ঘুরে হাজারো ফুলের মধু সংগ্রহ করে মৌচাকে জমা করে। তারপর কখনো নিজেদের প্রয়োজনে নিজেরাই মৌচাক ছেড়ে অন্যত্র যাত্রা করে কিংবা কখনো মানুষ নিজেদের প্রয়োজনে মৌচাক থেকে ধোঁয়ার সাহায্য মৌমাছি বিতাড়িত করে মৌচাকের দখল নেয় এবং মধু সংগ্রহ করে।
আজকে আমরা মধুর আশ্চর্য গুণাগুণ ও উপকারিতা, খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানবো। এছাড়াও, প্র্যতাহিক রূপচর্চার অংশ হিসেবে ত্বক ও চুলের যত্নে মধুর ব্যবহার এবং কিছু ঘরোয়া টোটকা জেনে নিবো।
আপনি যদি মধু সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে সময় নষ্ট না করে ঝটপট পড়ে নিন প্রতিবর্তনের এই প্রবন্ধটি।
মধুর উপাদান সমুহ
মধু বা Honey হলো একটি অলরাউন্ডার ভেষজ তরল। যা খেতে যেমন সুমিষ্ট, তেমনি এর উপাদানগুলোও বেশ ঈর্ষণীয়। একমাত্র স্নেহ জাতীয় পদার্থ ও প্রোটিন ব্যতীত আর সবই আপনি পাবেন এই মধুতে। চলুন জেনে নেই প্রতি ১০০ গ্রাম মধুতে থাকা কোন কোন পুষ্টি উপাদান রয়েছে:
উপাদান |
পরিমাণ |
শক্তি |
৩০৪ কিলো.ক্যালরি |
শর্করা |
৮২.৪ গ্রাম |
চিনি |
৮২.১২ গ্রাম |
ফাইবার |
০.২ গ্রাম |
ফ্যাট |
০ গ্রাম |
প্রোটিন |
০.৩ গ্রাম |
পানি |
১৭.১০ গ্রাম |
রিবোফ্লাভিন (বি২) |
০.০৩ মি.গ্রা |
নায়াসিন ( বি৩) |
০.১২১মি.গ্রা |
প্যানটোথেনিক এসিড ( বি ৫) |
০.০৬৮ মি.গ্রা |
ভিটামিন বি৬ |
০.০২৪ মি.গ্রা |
ফোলেট (বি৯) |
২ মাইক্রোগ্রাম |
ভিটামিন সি |
০.৫ মি.গ্রা |
ক্যালসিয়াম |
৬ মি.গ্রা |
আয়রন |
০.৪২ মি.গ্রা |
ম্যাগনেসিয়াম |
২ মি.গ্রা |
ফসফরাস |
৪ মি.গ্রা |
পটাশিয়াম |
৫২ মি.গ্রা |
সোডিয়াম |
৪ মি.গ্রা |
জিংক |
০.২২ মি.গ্রা |
গ্লুকোজ |
২৫-৩৭% |
ফ্রুক্টোজ |
৩৪-৪৩% |
সুক্রোজ |
০.৫ – ৩.০ % |
মল্টোজ |
৫-১২% |
অ্যামাইনো এসিড |
২২% |
খনিজ লবণ |
২৮% |
এনজাইম |
১১% |
মধুর উপকারিতা সমূহ
মধুর উপকারিতা নিয়ে একটি প্রবন্ধে সবকিছু জানানো বেশ কঠিন। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন উপকারিতা মধুর নামের সাথে যুক্ত হচ্ছে।
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বর্ণিত একটি হাদিসে আছে, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, তোমরা দুটি শেফাদানকারী বস্তুকে নিজেদের জন্য আবশ্যকীয় করে নাও। একটি মধু এবং অপরটি কোরআন।
মধু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
নিয়মিত মধু খাওয়ার অভ্যাস শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে অনেক গুণ বৃদ্ধি করে। মধু হলো নানা ধরনের ভিটামিন, মিনারেলস ও অ্যান্টি অক্সিডেন্টের আধার।
আপনি যদি নিয়মিত মধু খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন তবে এই উপাদানগুলোও আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির দায়িত্ব নিজেদের করে নেবে।
ওজন কমাতে সহায়ক মধু
শরীরের অতিরিক্ত ওজনের জন্য দায়ী করা হয় ফ্যাট বা চর্বিকে। মধুতে ফ্যাটের পরিমাণ জিরো হওয়ায় এটি শরীরের ওজন কমাতে বেশ সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
যারা স্লিম ফিগার ধরে রাখতে চান তাদের উচিত নিজেদের খাদ্যতালিকায় মধুকে অপরিহার্য করে তোলা।
যাদের শরীরে ইতোমধ্যেই চর্বি জমে গেছে, পেটের চর্বি কমাতে তারা যদি নিয়মিত গরম পানিতে লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে খেতে পারেন, তাহলে নিশ্চিতভাবে উপকার পাবেন।
এটি খাওয়ার নিয়ম হলো সকালের প্রথম খাবার হিসেবে ১ গ্লাস কুসুম গরম পানিতে ১/২ টেবিল চামচ লেবুর রস এবং ১/২ টেবিল চামচ মধু মিশাতে হবে। তারপর খেয়ে ফেলতে হবে।
নিয়মিত এটা ফলো করতে পারলে মুটিয়ে যাওয়া শরীর আবার কাঙ্খিত অবস্থায় ফিরে আসবে। তবে হ্যাঁ! নিজের রসনাও সামলে রাখতে হবে!
অনিদ্রা বা ইনসমনিয়ায় মধুর উপকারিতা
ঘুম শরীরের জন্য বিশেষ প্রয়োজন। কিন্তু কেমন লাগে যখন কোনো শারীরিক বা মানসিক কারণে এই ঘুম রীতিমতো ডুমুরের ফুল হয়ে যায়! নানা কারণে জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে মানুষ এই অনিদ্রা বা ইনসমনিয়ায় আক্রান্ত হতে পারে।
আপনি কি অনিদ্রায় ভুগছেন? তাহলে আপনার জন্য পরামর্শ হলো দয়া করে ডাক্তারের কাছে দৌঁড়িয়ে সময়, শ্রম ও অর্থ অপচয় করবেন না। বরং নিয়মিত মধু খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
প্রতিদিন রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে এক গ্লাস সাধারণ তাপমাত্রার পানিতে এক চামচ মধু গুলে খেয়ে নিন। এই শরবত আপনাকে শান্তিপূর্ণ গভীর ঘুম উপহার দেবে।
এখানে একটি কথা আছে, তা হলো বিষয়টা এমন না যে এক দুইদিন খেলেই আপনার ঘুম হবে, এটি যেহেতু ভেষজ, তাই একটু সময়সাপেক্ষ হবে এটা নিশ্চিত থেকেই আপনার এই পদ্ধতি ফলো করতে হবে। যদি ধৈর্য সহকারে নিয়মিত এটি মেইনটেইন করতে পারেন তাহলে শতভাগ উপকৃত হতে পারবেন ইন-শা-আল্লাহ।
পেটের নানাবিধ সমস্যার সমাধানে মধু
মধুতে আছে নানা ধরনের এন্টিঅক্সিডেন্ট ও এন্টিব্যাকটেরিয়াল এজেন্ট। এই এজেন্ট গুলো পাকস্থলীতে কার্যকর থেকে খাদ্য হজমে সহায়তা করে।
একই সাথে ডায়রিয়া, আমাশয়, প্রদাহজনিত সমস্যা, গ্যাস্ট্রিক এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যাকে নিয়ন্ত্রনে রাখে।
আপনি যদি নিয়মিত মধু খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন তাহলে আপনিও মধুর এই গুণাগুণ দ্বারা উপকৃত হতে পারবেন।
রক্ত উৎপাদনে সহায়ক
খাদ্য তালিকায় নিয়মিত মধুর উপস্থিতি আপনাকে এনিমিয়া থেকে দূরে রাখবে। মধুতে থাকা আয়রন ও অন্যান্য খনিজ উপাদান আপনার শরীরে নিয়মিত রক্ত উৎপাদন করে শরীরকে সুস্থ রাখবে।
ঠান্ডা সারাতে মধু
যাদের কোল্ড এলার্জির সমস্যা আছে ঠান্ডা কাশির ব্যামো তাদের বছর জুড়েই থাকে। মধুতে আছে তারও সমাধান।
১ গ্লাস কুসুম গরম পানিতে ২ টেবিল চামচ মধু ও অর্ধেকটা লেবুর রস ও সামান্য আদার রস মিশিয়ে প্রতিদিন দুইবার করে খেতে হবে। এতে কাশি নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
হার্টের সুস্থতায় মধু
মধুর উপাদানগুলো শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল অর্থাৎ, লো ডেনসিটি কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমায় প্রায় ১০% পর্যন্ত।
এই লো ডেনসিটি কোলেস্টেরলই হার্টের শিরা উপশিরায় জমে থেকে হার্টে রক্ত সঞ্চালনের পথ সরু করে ফেলে, যার ফলে হার্ট অ্যাটাক কিংবা ফেইলিউরের মতো সাংঘাতিক রোগ হয়ে যেতে পারে।
আপনি যদি মধুকে আপনার ডায়েটের নিত্যসঙ্গী করতে পারেন, তবে মধুও আপনাকে নিরাশ করবে না।
তারুণ্য ধরে রাখতে মধু
তারুণ্য ধরে রাখতে কে না চায়! এজন্য কত রকম ডায়েটই না মানুষ ফলো করে থাকে। নিয়মিত মধু খাওয়ার অভ্যাস আপনাকে দেবে দীর্ঘদিন তরুণ থাকার প্রতিশ্রুতি।
মধু আপনার ত্বক, নখ, চুল সুন্দর রাখতে সাহায্য করবে। প্রতিরোধ করবে বয়সের কারণে পড়ে যাওয়া বলিরেখাও।
হাড় ও দাঁতের সুস্থতায় মধু
মধুতে আছে নানা ধরনের ভিটামিন ও মিনারেলস। এসব উপাদান আমাদের শরীরের হাড় ও দাঁতের সুস্থতায় অতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে হাড়ের স্থিতিস্থাপকতা ও শক্তি কমে আসে। গিটে গিটে ব্যাথা দেখা দেয়।কিন্তু আপনি যদি পূর্ব থেকেই নিয়মিত মধু খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন তবে বৃদ্ধ বয়সে এই সব যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাবেন।
মধু খাওয়ার নিয়ম
মধুর উপকারিতা সম্পর্কে অনেক তো জানলেন। এবার চলুন জেনে নেই মধু খাওয়ার দুইটি সহজ নিয়ম।
প্রথম পদ্ধতি: ১ গ্লাস গরম দুধে ২ চা চামচ মধু ও ৩-৪ টা জাফরান মিশিয়ে খেতে পারেন। এটি ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে বেশ সহায়ক।
দ্বিতীয় পদ্ধতি: সমপরিমাণ মধু ও লেবুর রস মিশিয়ে নিতে হবে একদম পানি ছাড়া। সকালের ভরপেট নাস্তার পর নিয়মিত এটা খেতে পারলে বেশ উপকার পাওয়া যায়।
মধু খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা: স্বাভাবিক তাপমাত্রা মধু হাজার বছর ভালো থাকে। খাওয়ার জন্য কিংবা সংরক্ষণের জন্য এটাকে গরম বা ঠান্ডা করার কোনো প্রয়োজন নাই। গরম করলে মধুর খাদ্য গুণাগুণ লোপ পায়। যারা চায়ে চিনির বদলে মধু ব্যবহার করেন তাদের প্রতি পরামর্শ একদম গরম চায়ে মধু দিবেন না, বরং একটু ঠান্ডা হয়ে এলে তারপর মধু যোগ করবেন।
রূপচর্চায় মধুর ভূমিকা
অত্যন্ত প্রাচীন কাল থেকে রূপচর্চার গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে মধু ব্যবহৃত হয়ে আসছে। মধুতে থাকা বিভিন্ন এন্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদানের জন্যই মূলত মানুষ এটি ব্যবহার করে থাকতো।
ত্বকের যত্নে মধুর ভূমিকা ও বিভিন্ন ধরনের ত্বকের জন্য কার্যকরী কিছু ফেসপ্যাক:
তৈলাক্ত ত্বকের জন্য মধুর ফেসপ্যাক
তুলসি পাতা ও মধুর মিশ্রণে তৈরী ফেসপ্যাক তৈলাক্ত ত্বকের জন্য বেশ উপকারী।
- এজন্য প্রথমেই ১ কাপ পরিমাণ তুলসি পাতা থেকে রস বের করে ছেঁকে নিতে হবে।
- এই রস প্রথমে টোনার হিসেবে ত্বকে ব্যবহার করতে হবে।
- মিনিট ১০-১৫ পর মুখ ধুয়ে রস নিংড়ানো পাতার সাথে ১ চা চামচ মধু মিশিয়ে ত্বকে প্রয়োগ করতে হবে এবং ভালোমতো শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
- তারপর সাধারন পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে। সপ্তাহে ২ বার এই ফেসপ্যাক ইউজ করলে বেশ উপকার পাওয়া যায়।
যাদের ত্বকে ব্রণের সমস্যা আছে তাদের জন্য এই প্যাকটি বেশ জাদুকরী ভূমিকা রাখে।
শুষ্ক ত্বকের জন্য মধুর ফেসপ্যাক
শুষ্ক ত্বকে মধু ব্যবহারের দুইটি পদ্ধতি আছে।
প্রথম পদ্ধতি:
- ১ চা চামচ চন্দন গুড়ার সাথে পরিমাণমতো দুধ ও কয়েক ফোটা মধু মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরী করুন।
- তারপর সমস্ত মুখে মেখে ২০ মিনিট অপেক্ষা করে সাধারণ পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
সপ্তাহে দুইবার এই প্যাকটি ব্যবহারে বেশ উপকার পাওয়া যায় বলে প্রমাণিত।
দ্বিতীয় পদ্ধতি:
- প্রাথমিক কাজ হিসেবে কাঁচা হলুদের রস ঘন করে জ্বাল দিয়ে নিন।
- মিশ্রনের জন্য নিতে হবে ১ চা চামচ কাঁচা হলুদের রসের সাথে একটি ডিমের কুসুম এবং আধা চা চামচ মধু।
- সব উপাদান একসাথে মিশিয়ে মুখে মাখিয়ে ২০ মিনিট রেখে সাধারণ পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
সপ্তাহে এই প্যাকটি ২-৩ দিন ব্যবহারে আপনি সুফল পাবেন।
মিশ্র ত্বকের জন্য মধুর ফেসপ্যাক
মিশ্র ত্বকের ফেসপ্যাকের জন্য প্রথমে পুদিনা পাতা নিতে হবে ১ কাপ পরিমাণ। এর থেকে রস বের করে একটি ফেস টোনার তৈরী করতে হবে।
টোনার তৈরীর নিয়ম হলো:
- সম্পূূর্ণ রসের সাথে ১ চা চামচ মধু ও ১/২ চা চামচ গোলাপজল মিশিয়ে টোনার বানাতে হবে।
- টোনারটি মুখে লাগিয়ে শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
- টোনার শুকিয়ে গেলে মুখ ভালো করে ধুয়ে তারপর ফেসপ্যাকটি অ্যাপ্লাই করতে হবে।
ফেসপ্যাক বানানোর নিয়ম:
- রস ছেকে নেয়ার পর অবশিষ্ট পুদিনা পাতার পেস্ট থেকে ১ টেবিল চামচ পরিমাণ পাতা নিন।
- সাথে নিতে হবে ১ টেবিল চামচ পরিমাণ মুলতানি মাটির গুড়া এবং ১ চা চামচ মধু।
- সব উপাদান একসাথে মিশিয়ে মুখে ২০ মিনিটের মতো মাখিয়ে রাখুন।
- তারপর সাধারণ পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
সপ্তাহে ২ দিন ব্যবহারে উপকার পাওয়া যাবে।
সুস্থ, সুন্দর রেশমী চুল কে না চায়! আপনি শুধু চাইলেই তো হবে না এজন্য আপনাকেও এক্সট্রা কিছু দিতে হবে চুলকে।
চুলের নানা ধরনের সমস্যার বেশ সুন্দর ও সহজ কিছু সমাধান আছে মধুর তৈরী হেয়ারপ্যাকে। চলুন! এবার জেনে নেই চুলের যত্নে মধুর ভূমিকা ও কার্যকরী কিছু হেয়ারপ্যাক সম্পর্কে :
গরম মধু ও অলিভ অয়েলের হেয়ারপ্যাক
- ১/২ কাপ মধু + ১/৪ কাপ অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিতে হবে।
- তারপর মিশ্রণটি হালকা গরম করে চুল ও স্ক্যাল্পে ভালোভাবে ম্যাসাজ করতে হবে।
- ২৫-৩০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করে ফেলতে হবে।
সপ্তাহে একবার ব্যবহারে আপনি পাবেন স্মুথ, সিল্কি ও শাইনি চুল।
মধু, নারকেল তেল ও টকদইয়ের হেয়ারপ্যাক
২ চা চামচ টক দই+ ১/২ চামচ মধু+ ১/২ চামচ নারিকেল তেল একসাথে মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরী করতে হবে। তবে মিশ্রণের পরিমাণ বাড়াতে চাইলে উপকরণের অনুপাত ঠিক রেখে বাড়ানো যাবে।
এই প্যাকটির একটি বিশেষ দিক হলো এতে থাকা টকদই। যাদের স্ক্যাল্পে কোনো সমস্যা আছে তাদের জন্য টকদইয়ের ল্যাকটিক এসিড একটি কার্যকরী সমাধান।
এই মিশ্রণটি চুলে অ্যাপ্লাই করে ১৫-২০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করে ফেলতে হবে। সপ্তাহে ১ বার ব্যবহারে উপকার পাওয়া যাবে।
শুষ্ক চুলের জন্য ডিম ও মধুর প্রোটিন প্যাক
যাদের চুল অত্যন্ত ড্রাই, চুলের ড্রাইনেস কমানোর জন্য তাদের সর্বপ্রথম যে হেয়ার ট্রিটমেন্ট নিতে হয় তা হলো প্রোটিন প্যাকের ব্যবহার। এজন্য পার্লারে বা গিয়ে নিজে ঘরে বসেই তৈরী করে নিতে পারেন মধু ও ডিমের কার্যকরী প্রোটিন প্যাক।
- এই প্যাকটি তৈরী করতে লাগবে একটি ডিমের কুসুম, ১ চামচ মধু ও ১ চামচ বাদাম তেল।
- সমস্ত উপাদান একসাথে মিশিয়ে তৈরীকৃত মিশ্রণটি চুলে লাগিয়ে ৩০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করে ফেলতে হবে।
- সপ্তাহে ২ বার ব্যবহার করলেই কার্যকরী সমাধান পাওয়া যায়।
তবে যাদের চুল অয়েলী তারা এই প্যাকটি থেকে দূরত্ব বজায় রাখবেন।
মধুর উপকারিতা নিয়ে শেষ কথা
আর্টিকেলটি থেকে আমরা মধুর উপকারিতা, ফেসপ্যাক বানানোর নিয়ম ও মধু খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিলাম।
আপনি যদি আমাদের পুরো প্রবন্ধটি পড়ে থাকেন তাহলে এতক্ষণে নিশ্চয় নিয়মিত মধু খাওয়ার নানাবিধ মধুময় উপকারিতা সম্পর্কে জেনে গেছেন। তাহলে আর অপেক্ষা না করে আজ থেকেই মধুর উপকারিতা নেওয়া শুরু করুন।
কৃতজ্ঞতা
অসাধারণ পোস্ট, সত্যিই অনেক তথ্যবহুল এবং উপকারী একটি লেখা। পোস্টটি পড়ে মনে হল মধুর এ জীবনে মধুর গুণাবলী বলে আদৌ শেষ করা সম্ভব নয়। ধন্যবাদ Salsabil Jannat এমন সুন্দর একটি পোস্ট উপহার দেয়ার জন্য।