ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট এর লোডিং স্পিড বাড়ানোর উপায় জানতে চান! ব্লগ সাইট স্পিড বৃদ্ধি করা প্রত্যেক ব্লগারেরই মাথাব্যথার কারণ। ফাস্ট লোড নেয় এমন ওয়েবসাইটগুলো ব্যবহারকারীকে উন্নত অভিজ্ঞতা দেয়। ওয়ার্ডপ্রেস স্পিড অপটিমাইজেশন অফপেজ এসইওর জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া, বর্তমানে ওয়েবসাটের পেজ লোডিং স্পিড Google Ranking Factor হিসেবেও ধরা হচ্ছে।
এই আর্টিকেলে আমরা ওয়ার্ডপ্রেস সাইটের পারফরম্যান্স বৃদ্ধিতে সবচেয়ে কার্যকরী পেজ লোড স্পিড অপটিমাইজেশন প্রসেস সম্পর্কে বেশ কিছু টিপস শেয়ার করবো।
‘ওয়েবসাইট স্পিড বাড়ানোর সেরা ক্যাশিং প্লাগইন’ কিংবা ‘স্পিড বাড়ানোর এক্স সংখ্যক উপায়’ এর পরিবর্তে ওয়ার্ডপ্রেস সাইটের স্পিড বাড়ানোর উপর এটি একটি বিস্তৃত গাইড।
আমরা এখানে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করবো যেমন, কেন ওয়েবসাইট স্পিড বৃদ্ধি করা কেন গুরুত্বপূর্ণ, কী কারণে ওয়ার্ডপ্রেস সাইটের স্পিড কমে যায়?, এবং কোন কোন পদক্ষেপ নিলে সাইটের স্পিড অপটিমাইজ করা যায়।
একনজরে সম্পূর্ণ আর্টিকেল
ওয়েবসাইটের পেজ লোডিং স্পিড বৃদ্ধি বা ফাস্ট করা কেন গুরুত্বপূর্ণ?
২০০৬ থেকে ২০১৬ সালের মাঝে করা একটি স্টাডি থেকে দেখা যায় human attention span পূর্বে ছিল গড়ে ১২ সেকেন্ড কিন্তু বর্তমানে ৭ সেকেন্ডে নেমে গেছে। অর্থাৎ আমরা এখন আর কোনো বিষয়ে মনোযোগ ধরে রাখতেই পারছি না।
তার মানে কি দাড়ালো? ভিজিটরসকে আকৃষ্ট করে ওয়েবসাইটে ধরে রাখার জন্য আপনার হাতে মাত্র কয়েক সেকেন্ড রয়েছে।
স্লো ওয়েবসাইট ভিজিট করতে গিয়ে বেশিরভাগ ভিজিটরস ফুল লোড হওয়ার আগেই ওয়েবসাইট ছেড়ে চলে যাবে।
একটি কেইস স্টাডি থেকে বলা যায়, পেজ লোড নিতে ১ সেকেন্ড বেশি সময় প্রয়োজন হলে ৭% ভিজিটরস ড্রপ করতে পারে, ১১% পেজ ভিউ, এবং ১৬% ভিজিটরস স্যাটিসফ্যাকশান লস হয়।
এসবেরও বাইরে ভয়ঙ্কর ব্যাপার হলো, গুগল এবং অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিন স্লো পেজ লোড নেয় এমন সাইটগুলোকে বিভিন্নভাবে পেনাল্টি দেওয়া শুরু করেছে যেমন, সার্চ রেজাল্ট পজিশন নামিয়ে দেওয়া, যার অর্থ হলো আরো কম অর্গানিক ট্রাফিক।
সুতরাং সারমর্ম হলো আপনি যদি ওয়েবসাইটে আরো বেশি ট্রাফিক, সাবস্ক্রাইবার এবং অবশ্যই সাইট থেকে ভালো পরিমাণ revenue চান, তবে আপনার ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট স্পিড ফাস্ট করতেই হবে।
কীভাবে ওয়ার্ডপ্রেস সাইটের স্পিড টেস্ট করা যায়?
প্রায়শই নতুন ব্লগাররা চিন্তা করেন যে তার ব্লগটির স্পিড ঠিকই আছে, এর পছনে মূল কারণ কম্পিউটারে স্লো লোডিং স্পিড ঠিক বোঝা যায় না। এবং এটাই সবচেয়ে বড় ভুল।
আপনি যদি কোনো সাইট মাঝে মাঝেই ভিজিট করেন, তবে ভালো ওয়ব ব্রাউজারগুলো ওয়েবসাইটের cache জমা রাখে এবং পুনরায় সাইটে প্রবেশ করতে গেলে কিছু স্টেপ বাদ দিয়েই লোড নিতে পারে, এজন্য ওয়েবপেজটি দ্রুত লোড নেয়।
কিন্তু যখন কোনো নতুন ভিজিটর ওয়েবসাইটটিতে প্রবেশ করে, তখন কিন্তু তার কাছে ওয়েব ব্রাউজারে কোনো ক্যাশ থাকেনা, যার কারণে তিনি একইরকম ফাস্ট লোডিং স্পিড পান না।
ঠিক এই কারণেই আমরা পরামর্শ দেই যে, ওয়েবসাইট লোডিং স্পিড টেস্ট করুন। অনলাইনে WordPress speed test করার জন্য অনেক টুলস রয়েছে, যা সম্পূর্ণ ফ্রিতে ব্যবহার করা যায়।
ওয়েবপেজ লোডিং স্পিড টেস্ট করার পর আপনি হয়তো চিন্তায় পরে যাবেন যে, একটি ভালোমানের ওয়েবসাইট লোড নেওয়ার সময় কত হওয়া দরকার?
উত্তর হলো, এসইও অপটিমাইজড সম্পূর্ণ সাইট লোড নেওয়ার জন্য ২ সেকেন্ড বা তার কম সময় নেওয়া উচিৎ তবে, ৩ সেকেন্ড পর্যন্ত ভালো স্পিড ধরা হয়।
মোট কথা হলো আপনি যত বেশি দ্রুত লোড করাতে পারবেন, সাইট এবং ট্রাফিকের জন্য ততোই ভালো।
ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইটের লোডিং স্পিড কমে যায় কেন?
ওয়েবসাইট স্পিড টেস্ট রেজাল্টের সাথেই উন্নতি করার জন্য বিভিন্ন recommendations রিপোর্ট দেয়। কিন্তু এগুলো বেশ টেকনিক্যাল রিপোর্ট যা একজন নতুন ওয়ার্ডপ্রেস ইউজারের জন্য বুঝে ওঠা কঠিন।
কি কারণে ওয়েবসাইট স্পিড কমে যাচ্ছে তা বুঝে ওঠাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ এবং একইসাথে পেজ লোড দ্রুত করার পথে সবচেয়ে বড় পদক্ষেপ।
একটি ওয়ার্ডপ্রেস সাইট স্পিড কমে যাওয়ার পিছনে যেসব কারণ থাকতে পারে:
- Web Hosting – একটি কোয়ালিটি শূন্য বাজে ওয়েব হোস্টিং পুরো সাইটের অবস্থা খারাপ করার জন্য যথেষ্ট। ওয়েবসাইটের ভিতরে যতো ভালো অপটিমাইজ-ই করুন না কেন, সার্ভার খারাপ হলে কোনো লাভ নেই।
- WordPress Configuration – যদি ওয়ার্ডপ্রেস সাইট cached pages দেখাতে না পারে, তবে ট্রাফিক বেশি থাকলে সার্ভার অভারলোড হয়ে যাবে, যা সাইট স্লো করার পাশাপাশি সম্পূর্ণ crashও করতে পারে।
- Page Size – ইমেজ সাইজ যদি অপটিমাইজ না করা হয়, তবে পেজ সাইজ বেড়ে যাওয়ার কারণে সাইটের স্পিড কমে যায়।
- Bad Plugins – খারাপ কোয়ালিটির কোড ব্যবহার করে ডেভেলপ করা কোনো প্লাগইন ব্যবহার করলে পেজ লোডিং স্লো হয়ে যাবে।
- External scripts –সাইটের বাইরের অন্য কোনো সার্ভার থেকে লোড নিতে হয় এমন কোনো কনটেন্ট এর কারণে পেজ লোডিং স্পিড কমে যায়। যেমন এডসেন্স একাউন্ট থেকে আসা বিজ্ঞাপন, font loaders, কিংবা লোকাল বিজ্ঞাপন বা ব্যানার ব্যবহার করলে ওয়েসাইটের পারফম্যান্সে বড় ধরনের তারতম্য ঘটে।
এখন আপনি জানেন কি কারণে আপনার ওয়ার্ডপ্রেস সাইট লোড নিতে দেরি হচ্ছে। চলুন এবার তাহলে ওয়েবসাইট লোডিং স্পিড কিভাবে বাড়ানো যায় ( how to increase website loading speed in Bangla ) তা জেনে নেই।
ভালো ওয়ার্ডপ্রেস হোস্টিং এর গুরুত্ব
ওয়েবসাইটের পারফরম্যান্সের সাথে ওয়ার্ডপ্রেস হোস্টিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভালোমানের ওয়ার্ডপ্রেস হোস্টিং প্রোভাইডার সাইটের পারফরম্যান্স বৃদ্ধিতে অতিরিক্ত গুরুত্ব দেয়।
শেয়ারড হোস্টিং এ অনেকগুলো সাইট একইসাথে সার্ভার রিসোর্স ব্যবহার করে। আপনি যদি শেয়ারড হোস্টিং প্যাকেজ ব্যবহার করেন এবং সার্ভারে যুক্ত অন্য কোনো সাইট অনেক বেশি ট্রাফিক পায় তবে সার্ভার লোড বেশি থাকার কারণে আপনার সাইট স্পিড কমে যাবে।
অন্যদিকে ম্যানেজড ওয়ার্ডপ্রেস হোস্টিং সার্ভিস আপনাকে ওয়ার্ডপ্রেস সাইট রান করানোর জন্য একটি অপটিমাইজড সার্ভার কনফিগারেশন দিবে।
তাছাড়া ম্যানেজড সার্ভার প্যাকেজে automatic backups, automatic WordPress updates এবং নিরাপত্তা বৃদ্ধি করার জন্য আরো অনেক সুবিধাও পাাওয়া যায়।
এজন্য হোস্টিং সার্ভার কেনার আগে আপনাকে ভালোভাবে অনেকগুলো বিষয় দেখে নিতে হবে। বিশ্বের সেরা ওয়েব হোস্টিং কোম্পানী থেকে হোস্টিং প্যাকেজ কেনার চেষ্টা করুন।
না পারলে অন্তত দেশের সবচেয়ে ভালো হোস্টিং কোম্পানী খুঁজে দেখুন। স্বস্তা খুঁজতে গিয়ে বাজে কোনো কোম্পানীর ঝামেলায় পরবেন না।
ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইটের লোডিং স্পিড বৃদ্ধি করার উপায়
আমরা জানি website configuration পরিবর্তন করা একজন নন-টেকনিক্যাল সাইট মালিকের জন্য অনেক কঠিন বিষয়, বিশেষ করে আপনি যদি নতুন ব্লগিং শুরু করে থাকেন।
কিন্তু চিন্তার কারণ নেই, আপনি অবশ্যই একা নন, আপনার ওয়েবসাইটের পারফরম্যান্স উন্নতি করার জন্য প্রতিবর্তন.কম সবসময় আপনার সাথে আছে।
আমরা এখন দেখবো কিভাবে মাত্র কয়েকটি ক্লিক করে ওয়ার্ডপ্রেস সাইটের স্পিড বৃদ্ধি করা যায়। এরপর আপনি নিজে নিজেই সাইটে গিয়ে অ্যাপ্লাই করতে পারবেন ইনশা’আল্লাহ।
WordPress Caching Plugin ইনস্টল করুন
ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবপেজগুলো অনেক dynamic হয়। ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে তৈরি সাইটে অনেক বেশি ডিজাইন করার সুযোগ রয়েছে। যার ফলে যখন কোনো ভিজিটরের কাছে পেজ শো করতে হয়, তখন বিভিন্ন জায়গা থেকে রিসোর্স নিয়ে একসাথে করে তারপর দেখায়।
এই প্রসেস সম্পন্ন করতে অনেকগুলো স্টেপস পার করতে হয়, যা ব্লগের পেজ লোডিং স্পিড কমানোর জন্য যথেষ্ট।
ঠিক একারণেই আমরা caching plugin ব্যবহার করতে recommend করছি। Caching যেকোনো সাইট ২ থেকে ৫ গুণ পর্যন্ত ফাস্ট করে ওয়েবসাইট স্পিড অপটিমাইজেশন করতে পারে।
কিভাবে caching কাজ করে?
প্রতিবার পুরো পেজ রিসোর্স লোড নেওয়ার জন্য স্টেপস নেওয়ার পরিবর্ত ক্যাশিং প্লাগইন প্রথমবার লোড নেওয়ার সময় রিসোর্স কপি করে রাখে।
এরপর থেকে আবার ভিজিট করতে আসলে কপি করা ফাইল থেকে রিসোর্স নিয়ে পেজ শো করে, যা ব্লগের পেজ লোডিং স্পিড বাড়িয়ে দেয়।
যেমনটা আপনি উপরের ছবিতে দেখছেন, যখন কোনো ব্যবহারকারী ওয়ার্ডপ্র্রেস সাইট ভিজিট করে, সাইটটি MySQL database এবং PHP files থেকে ইনফরমেশন নিচ্ছে। এরপর এসব তথ্য HTML content নিয়ে ভিজিটরসকে দেখাচ্ছে।
যা অনেক লম্বা প্রসেস, কিন্তু এসব স্টেপের অনেকগুলো স্কিপ করা সম্ভব যদি caching প্লাগইন ব্যবহার করা হয়।
ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট স্পিড অপটিমাইজেশন করার জন্য অনেক ক্যাশ প্লাগইন রয়েছে যেমন, WP Rocket (premium), WP Super Cache (free), W3 Total Cache plugin ইত্যাদি।
ওয়েবসাইট স্পিড বৃদ্ধি করার জন্য Image অপটিমাইজেশন করুন
ইমেজ কনটন্ট ভ্যালু যোগ করে এবং engagement বৃদ্ধি করে। রিসার্চ থেকে জানা যায়, কন্টেন্ট এ ভিজুয়াল ছবি বা ভিডিও থাকলে ৮০% পাঠক পড়তে পছন্দ করে।
কিন্তু, যদি আপনার ইমেজ অপটিমাইজ করা না থাকে তবে হেল্প করার চেয়ে ক্ষতিই বেশি করবে। মূলত non-optimized images ওয়েবসাইট স্পিড স্লো করার পিছনে মূল কারণ।
সরাসরি আপনার মোবাইল বা ক্যামেরা থেকে ছবি আপলোড করার পরিবর্তে আমরা পরামর্শ দেই কোনো ছবি ওয়েব ইমেজ অপটিমাইজেশন ইডিটিং টুলস ব্যবহার করে তারপর আপলোড করুন।
অরিজিনাল ইমেজ সাইজ হিসেবে অনেক বড় হয়। কিন্তু কোনো ইমেজ কম্প্রেসর টুলস ব্যবহার করবেন তখন ৫গুণ পর্যন্ত সাইজ কমিয়ে ফেলা সম্ভব।
আমরা যদি প্রতিবর্তন এর কথা বলি, সাধারণত দুই ধরনের ইমেজ ব্যবহার করি: JPEG and PNG
আমাদের পরামর্শ হলো ব্লগ সাইটসাইট স্পিড ঠিক রাখার জন্য গড়ে ৪০ কেবি সাইজের ছবি আপলোড করুন, এবং কোনোভাবেই ৫০ কেবি সাইজের চেয়ে বড় কোনো ছবি ব্যবহার করবেন না।
যেমনটা দেখতে পাচ্ছেন, কম্প্রেস করলে সাইজ কতটা কমানো সম্ভব! নিশ্চয়ই বুঝতেই পারছেন। ওয়ার্ডপ্রেস এসইও এবং পারফরম্যান্সে ছবির ফরম্যাট ও সাইজ বড় ধরনের পার্থক্য তৈরি করতে পারে।
কপিরাইট ফ্রি ছবি ডাউনলোড করার অনেক সাইট রয়েছে যেগুলো থেকে আপনি অপটিমাইজড করা ছবি ডাউনলোড করতে পারবেন, যেমন পিক্সেলস ডট কম।
WordPress Speed Optimization Best Practices
একটি caching plugin এবং ছবি অপটিমাইজ করার পরই দেখতে পারবেন আপনার সাইটটি অনেক দ্রুত লোড নিচ্ছে।
কিন্তু আপনি যদি সাইটকে যতটা সম্ভব আরো ফাস্ট করতে চান, তবে আপনাকে সাইট স্পিড বাড়ানোর জন্য নিচের best practices গুলো চেষ্টা করতে হবে।
না, এসব প্রাকটিস করার জন্য আপনাকে কোনো কোডিং জানতে হবেনা। কিন্তু এগুলোর ব্যবহারে কমন সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে যা কিনা website slow down করার জন্য দায়ী।
ওয়ার্ডপ্রেস সাইট আপডেটেড রাখুন
well maintained ওপেন সোর্স প্রজেক্ট হিসেবে ওয়ার্ডপ্রেস সফটওয়্যার প্রায়ই আপডেট করা হয়। প্রত্যেক আপডেটে শুধু যে নতুন ফিচার আসে তা কিন্তু নয়, বরং নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা এবং কোনো bugs ঠিক করার জন্যও আপডেট আনা হয়। একই কারণে WordPress theme এবং plugins গুলোও আপডেট করা হয়।
ওয়েবসাইটের মালিক হিসেবে WordPress site, theme, and pluginsগুলো আপডেটেড রাখা আপনার দায়িত্ব।
যদি আপনি না করেন তবে ওয়েবসাইট স্পিড স্লো হওয়া এমনকি অপ্রবেশযোগ্য হয়ে উঠতে পারে। তাছাড়া নিরাপত্তা ঘাটতিও দেখা দিতে পারে।
Optimize Background Processes
আমাদের ওয়েবসাইটগুলো ব্যাকগ্রাউন্ডেও বিভিন্ন কাজ করতে থাকে, যা আমরাই শিডিউলড করে রাখি যেমন, ওয়েবসাইট ব্যকআপ নেওয়া।
ওয়েবসাইট ব্যকআপ নেওয়ার সময় সার্ভার ব্যস্ত থাকায় সাইট লোড নেওয়ার জন্য বেশি সময় নেয়। তাই নিশ্চিত করে নিন, যখন ট্রাফিক কম থাকে তখনই যেন ব্যকআপ নেওয়া হয়।
তাছাড়া আপনার সাইটে যদি ডেইলি অটো ব্যকআপ করা থাকে অথচ আপনি সপ্তাহে একটি বা ২টি পোস্ট করেন, তবে আরেকবার চিন্তা করুন প্রতিদিন ব্যকআপ নিবেন কিনা।
হোমপেজ এবং আর্কাইভ পেজে Excerpts ব্যবহার করুন
বাই ডিফল্ট ওয়ার্ডপ্রেস হোম পেজ এবং আর্কাইভ পেজগুলো ফুল কনটেন্ট শো করে। যার মানে হোমপেজ, ক্যাটেগরি, ট্যাগস এবং অন্যান্য আর্কাইভ পেজ স্লো লোড নিবে।
আরো একটি খারাপ দিক হলো ভিজিটরস তার জন্য সঠিক আর্টিকেল খুঁজে পেতে ঝামেলায় পরে যাবে। যার কারণে আপনার পেজ ভিউ, এবং ভিজিটরস spending time কমে যাবে।
ওয়েবসাইট স্পিড অপটিমাইজেশন করার জন্য হোম পেজ এবং আর্কাইভ পেজগুলোতে সম্পূর্ণ কনটেন্ট না দেখিয়ে excerpts দেখাতে পারেন।
এজন্য Settings » Reading পেজে যেতে হবে। এরপর “For each article in a feed, show: Summary” সিলেক্ট করে দিন।
Split Comments into Pages
আপনার সাইটে কী অনেক কমেন্ট পাচ্ছেন? Congratulations! আপনার ওয়েবসাইট এখন ভিজিটরসদের সাথে আরো বেশি engaged হচ্ছে।
কিন্তু একইসাথে খারাপ দিক হলো, এই কমেন্টসগুলো লোড নিতে সার্ভারের এক্সট্রা সময় প্রয়োজন হচ্ছে। যার কারণে সাইটের পেজ লোডিং স্পিড কমে যাচ্ছে।
চিন্তার কারণ নেই, ওয়ার্ডপ্রেস বিল্ট-ইন এসইও তেই এর সমাধান রয়েছে। Settings » Discussion পেজে চলে আসলে Break comments into pages অপশনটি দেখতে পাবেন। এই বক্সটি ‘চেক‘ (টিক মার্ক) করে দিন।
এখন থেকে সব কমেন্ট একপেজে না এসে Lode more comments অপশন আসবে।
সরাসরি অডিও/ভিডিও আপলোড করবেননা
আপনি সরাসরি ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইটে ভিডিও আপলোড করতে পারেন যা HTML5 player এ দেখানো হবে।
তবে আপনার কখনোই এটি করা উচিৎ নয়।
অডিও ভিডিও হোস্টিং করতে গেলে আপনার ব্যান্ডউইথ নষ্ট হবে। এজন্য আপনার অতিরিক্ত ফি দেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অথবা তারা আপনার সাইটটিকেই বন্ধ করে দিতে পারে, যদিওবা আপনার আনলিমিটেড প্যাকেজ নেওয়া থাকে।
তাছাড়া অডিও/ভিডিও হোস্ট করালে ব্যকআপ ফাইল সাইজ অনেক বেশি হয়ে যাবে, ওয়ার্ডপ্রেস ব্যকআপ নিয়ে রিস্টোর করা আপনার জন্য কঠিন হয়ে যাবে।
সুতরাং এর পরিবর্তে আপনার একটি অডিও বা ভিডিও হোস্টিং সার্ভার বেছে নেওয়া উচিৎ যেমন YouTube, Vimeo, DailyMotion, SoundCloud, etc. তাদের এজন্য নিজস্ব ব্যান্ডউইথ আছে, তাদেরটা ব্যবহার করুন।
ওয়ার্ডপ্রেস সাইটে built-in embed feature সিস্টেম রয়েছে। সুতরা, আপনাকে শুধু ভিডিও ইউআরএল কপি করে পেস্ট করতে হবে, অটোম্যাটিক্যালি এমবেড হয়ে যাবে।
ওয়েবসাইট লোডিং স্পিড অপটিমাইজড থিম ব্যবহার করুন
ওয়েবসাইট দ্রুত লোড নেওয়ার জন্য থিম সিলেক্ট করার সময় আপনাকে অবশ্যই গুরুত্ব দিতে হবে। এমন কিছু থিম পাওয়া যায় যেগুলো দেখতে খুবই কালারফুল এবং লুকটাও ইম্প্রেসিভ।
কিন্তু আদতে এগুলোর বেশিরভাগই poorly coded থিম, যা আপনার সাইট স্পিড slow down করে দিবে।
সাধারণত, কোনো অপ্রয়োজনী ফিচারযুক্ত থিমের পরিবর্তে সিম্পল থিম বেছে নেওয়াই উত্তম। আপনি এসব ফিচার কোনো ভালো প্লাগইন ব্যবহার করেও পেয়ে যাবেন, কিন্তু থিম খারাপ হলে সাইটের গতি বৃদ্ধি করতে বেশ সমস্যায় পরতে হবে।
জেনারেটপ্রেস কিংবা আস্ট্রা থিম ব্যবহার করার পরামর্শ দিবো আমরা। দুটো থিমের লোডিং টাইমই অনেক ফাস্ট, সেইসাথে সবচেয়ে জনপ্রিয় ও টপ রেটেড থিমও বটে।
ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট স্পিড অপটিমাইজেশন (Advanced)
ওয়েবসাইট স্পিড ফাস্ট করার উপরের ব্যাসিক এবং বেস্ট প্রাক্টিসগুলো করার মাধ্যমে আপনার সাইটে বেশ ভালো একটা পরিবর্তন নিশ্চয়ই লক্ষ্য করবেন।
কিন্তু পেজ লোড স্পিড যেখানে সেকেন্ডে কাউন্ট করা হয়, সেখানে আসলে fraction of a secondও অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
যদি আপনি যতটা সম্ভব ওবেসাইট লোড নেওয়ার জন্য very fastest speed চান, তবে আরো কিছু পরিবর্তন করতে হবে।
আহ! প্রবলেম ইজ এগুলো কিছুটা টেকনিক্যাল। বেশ কিছু ফাইলে পরিবর্তন আনতে হবে, PHP সম্পর্কে সামান্য জানাশোনা না থাকলে একটু কঠিন মনে হতে পারে।
তাই সাবধানতার জন্য ফাইলে হাত দেওয়ার আগে ব্যকআপ নিয়ে নিতে ভুলবেন না।
বড় পোস্টকে পেজে ভাগ করে দিন
পাঠক বড় এবং ইন ডেপথ পোস্ট পছন্দ করে। তাছাড়া বড় পোস্ট সার্চ ইঞ্জিনে higher rank করার প্রবণতাও রয়েছে।
যদি অনেক ছবিযুক্ত খুব বেশি বড় আর্টিকেল পোস্ট করেন, তবে আপনার সাইট লোডিং টাইমের জন্য ক্ষতিকর হয়ে যেতে পারে।
তাই, একপেজে না দিয়ে পেজটাকে ভাগ করে নতে পারেন, যেন প্রথমবারেই সকল কনটেন্ট লোড নিতে না হয়। এটা খুব সহজেই করা যায়।
Shift+Alt+P
আপনাকে যা করতে হবে তা হলো যেখানে গিয়ে নেক্সট পেজে নিতে চান সেখানে উপরের কমান্ডটা দিতে হবে। যদি তৃতীয় কোনো পেজে ভাগ করতে চান তাহলে আবারো সেই জায়গায় গিয়ে কমান্ড দিবেন।
WordPress Database Optimize করে নিন
কিছুদিন ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করার পর ডাটাবেজে অনেক ফাইল জমে যায়। এসবের মাঝে এমন অনেক ফাইল রয়েছে যা কখনোই আপনার দরকার হবেনা।
খুব সহজেই অতিরিক্ত ডাটাবেজ মুছে ফেলে ওয়েবসাইট স্পিড অপটিমাইজ করতে পারেন। এজন্য আপনাকে WP-Sweep pluginটি ইনস্টল করতে হবে।
প্লাগইনটি মাত্র এক ক্লিকে ডাটাবেজে থাকা ডিলিট করা পোস্ট, রিভিশন, অব্যবহৃত ট্যাগ, ইত্যাদি ডিলিট করে দিবে। ইচ্ছা করলে কাজ শেয়ে আবার আন-ইনস্টল করে দিতে পারবেন।
Post Revisions Limit করে দিন
পোস্ট রিভশন ওয়ার্ডপ্রেস ডাটাবেজ স্পেস নেয়। যদি আপনি পোস্ট রিভিশন লিমিট করে না দেন তবে, যখন অনেকগুলো আর্টিকেল লিখে ফেলবেন তখন দেখবেন অনেকটা ডেটাবেজ স্পেস নিয়ে নিয়েছে।
তারচেয়ে বড় সমস্যা, বেশি পোস্ট রিভিশন থাকলে পেজ লোড নেওয়ার সময় এসব তথ্য খুঁজতে গিয়ে অতিরিক্ত সময় প্রয়োজন হয়, ওয়েবসাইট স্পিড কমে যায়।
এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে খুব সহজেই পোস্ট রিভিশন লিমিট করে দেওয়া যায়। এজন্য আপনার থিম কিংবা সি-প্যানেলের wp-config.php ফাইলে যেতে হবে।
এবার define( 'WP_DEBUG', false ); খুঁজে বের করুন। লাইনটির পর নিচের লাইন পেস্ট করে দিন।
define( 'WP_POST_REVISIONS', 4 );
এখানে 4 হলো রিভিশন নাম্বার, অর্থাৎ শেষ ৪টা রিভিশন সেভ রাখবে। আপনি আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী কম বেশি করে নিতে পারেন। পেস্ট করার পর সেভ করে দিন। আপনার কাজ শেষ!
তবে যদি এটি আপনার জন্য কঠিন মনে হয় তবে WP Revisions Manager প্লাগইন ইনস্টল করেও কাজটি করতে পারবেন।
আপনার পূর্বের সকল পোস্ট রিভিশান ডিলিট করার জন্য WP-Sweep প্লাগইন ব্যবহার করতে পারেন। ক্লিন করার পর প্লাগইনটি ডিলিট করে দিতে পারেন।
Disable Hot-linking and Leaching of Your Content
আপনি যদি নিয়মিত কোয়ালিটি কনটেন্ট তৈরি করতে থাকেন, তবে কখনো না কখনো আপনার কনটেন্ট চুরির হুমকিতে পরবে। তারচেয়ে বড় সমস্যা হলো যদি কেউ ছবি সেভ করে আপলোড করার পরিবর্তে সরাসরি আপনার ছবির লিঙ্ক যুক্ত করে দেয়।
প্রশ্ন হচ্ছে এটা করলে কি সমস্যা?
আমরা ইউটিউব থেকে ভিডিও এমবেড করতে বলেছিলাম ব্যান্ডউইথ সেফ করতে। আপনার ছবি যদি লিঙ্ক করে যুক্ত করে দেয় তবে ছবি তার সাইটে দেখালেও ব্যান্ডউইথ আপনার খাবে।
যা আপনার সাইট স্পিড কমিয়ে ফেলার কারণ হয়ে উঠতে পারে।
ওয়েবসাইট পেজ লোডিং স্পিড ঠিক রাখার জন্য নিচের কোডটি কপি করে .htaccess file এ অ্যাড করে দিতে হবে।
#disable hotlinking of images with forbidden or custom image option RewriteEngine on RewriteCond %{HTTP_REFERER} !^$ RewriteCond %{HTTP_REFERER} !^http(s)?://(www\.)?pratiborton.com [NC] RewriteCond %{HTTP_REFERER} !^http(s)?://(www\.)?google.com [NC] RewriteRule \.(jpg|jpeg|png|gif)$ – [NC,F,L]
নোট: কোড যুক্ত করার সময় অবশ্যই ডোমেইন নেম পরিবর্তন করে নিবেন।
যদিও চুরি করার জন্য তিনি পেনাল্টি খাবেন, কিন্তু নিজে নিজে সতর্ক হওয়াইতো ভালো, কি বলেন?
Use Lazy Loading
যদি আর্টিকেলে অনেক ইমেজ, এমবেডেড ভিডিও বা ফটো গ্যালারি থাকে তবে lazy loading ফিচারটি ব্যবহার করা উচিৎ।
সকল ছবি, ভিডিও, কমেন্টস, এভাটার ইত্যাদি একসাথে লোড নেওয়ার পরিবর্তে শুধুমাত্র ব্যবহারকারীর স্ক্রিনের মাঝে যতগুলো ছবি ভিডিও আছে সেগুলো প্রথমে আসবে, এরপর স্ক্রলিং করার সাথে সাথে অন্যগুলোও visible হবে।
এভাবে আপনার ওয়েবসাইটের পেজ লোডিং স্পিড অপটিমাইজ করতে পারবেন।
Latest PHP Version ব্যবহার করুন
ওয়ার্ডপ্রেস মূলত PHP programming language দিয়ে লেখা। ভালো ওয়ার্ডপ্রেস হোস্টিং কোম্পানী সবসময়ই লেটেস্ট ভার্সন PHP ব্যবহার করে।
তবে এটা হতে পারে যে আপনার সাইটটি তুলনামূলক আগের কোনো PHPভার্সনে রান হচ্ছে।
নতুন PHP 7 আগের যেকোনো PHP 7 এর চেয়ে দুইগুণ বেশি গতিশীল। যা ওয়েবসাইট পারফরম্যান্সে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে পারে। আপনার অবশ্যই এই সুবিধা মিস করা উচিৎ নয়।
তাই আপনার ওয়ার্ডপ্রেস সাইটটি যদি লেটেস্ট PHP ভার্সনে না থাকে, হোস্টিং প্রভাইডারকে আপডেট করে দিতে বলুন।
শেষ কথা
আশা করি এই আর্টিকেলটি থেকে আপনি জানতে পেরেছেন যে কিভাবে ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট স্পিড বৃদ্ধি করতে হয় এবং পারফরম্যান্স অপটিমাইজেশন করা যায়।
এসব টেকনিক এপ্লাই করার আগে অবশ্যই ওয়েবসাইট স্পিড টেস্ট করে নিবেন। উপরে উল্লিখিত টেকনিক ফলো করার পর অবশ্যই ওয়েবসাইটের স্পিড দেখে আশ্চর্য্য হয়ে যাবেন।
আর্টিকেলটি ভালো লাগলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। চাইলে আমাদের ফেসবুক পেজ, টুইটার, ব্লগার ফোরাম এ যুক্ত হতে পারেন।
আপনার পোস্টটি যথেষ্ট ভালো লেগেছে এবং অনেক গোছানো ছিল। আপনার নিকট আমার একটি প্রশ্ন এবং সেটি হলো আমি যদি ক্লায়েন্টের কাজ করি সেক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় প্রিমিয়াম প্লাগিনগুলো কি আমাকে দিতে নাকি ক্লায়েন্টকে বলতে হবে। আশা করি আপনার থেকে সঠিক উত্তর পাবো।
ভালো থাকুন
দুইরকম ই হতে পারে। আপনি প্রোভাইড করলে তো জিপিএল লাইসেন্স করবেন। তবে ক্লায়েন্ট যদি জিপিএল লাইসেন্স না নিতে চায়, সেক্ষেত্রে কিনে দিতে বলবেন।
সম্পূর্ণ লেখাটি পড়ে খুব ভালো লাগলো। ওয়েবসাইটের পেজ লোডিং স্পিড অপটিমাইজেশন করার পদ্ধতি সম্পর্কিত অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেয়া হয়েছে; যা কিনা অন্য কোথাও এর আগে খুঁজে পাইনি। আপনাকে ধন্যবাদ, এমন একটি তথ্যবহুল লেখা উপহার দেয়ার জন্য।
আপনার মতামত আমাদের আরো ভালো কনটেন্ট উপহার দিতে অনুপ্রেরণা যোগাবে।