ইজোয়িক নাকি অ্যাডসেন্স? Ezoic বনাম Adsense

ইজোয়িক নাকি অ্যাডসেন্স

ইজোয়িক নাকি অ্যাডসেন্স এর সাথে ব্লগ রিভিনিউ আনবেন, সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না? আচ্ছা বলুন তো  ইজোয়িক আসলে কী? Ezoic একটি এড টেস্টিং এবং অপটিমাইজেশন প্লাটফর্ম। এটি একটি অ্যাড ম্যানেজমেন্ট কোম্পানী, Ezoic কোনো অ্যাড নেটওয়ার্ক নয়। ইজোয়িকের একটি একাউন্ট দিয়ে আপনার ওয়েবসাইটে বিভিন্ন অ্যাড নেটওয়ার্ক কোম্পানীর বিজ্ঞাপন দেখানো সম্ভব।

ইজোয়িক প্লাটফর্মের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের বিজ্ঞাপন কোম্পানী এবং বিজ্ঞাপনের ধরন, sizes, colours, এবং প্লেসমেন্ট নিয়ে টেস্ট করা যায়।

ইজোয়িক artificial intelligence ব্যবহার করে ভিজিটরের তথ্য কালেক্ট করে সেই অনুযায়ী বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করে। যেকারণে ইউজার এক্সপেরিয়েন্স উন্নত হওয়ার পাশাপাশি ওয়েবসাইটের ইনকামও বৃদ্ধি পায়।

তাছাড়া বিজ্ঞাপন দেখানোর লোকেশন পরিবর্তন করে এক্সপেরিমেন্ট করতে পারবেন যে, কোন কোম্পানীর বিজ্ঞাপন কোথায় বসালে বেশি ইনকাম হচ্ছে।

ইজোয়িক নাকি গুগল অ্যাডসেন্স?

ezoic ad কি? ইজোয়িক এমন একটি অ্যাড অপটিমাইজিং কোম্পানী যারা এড বসানো, সেটআপ করা থেকে আপনার বিজ্ঞাপন মেইনটেইন করার সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিবে।

অর্থাৎ ইজোয়িকের সাথে বিজ্ঞাপন দেখালে অ্যাড লোকেশন, অপটিমাইজেশন, কিভাবে revenue বৃদ্ধি পাবে, তথা বিজ্ঞাপন ম্যানেজমেন্ট নিয়ে কোনো চিন্তাই করতে হবে না।

ইজোয়িক অ্যাডসেন্স এর সার্টিফাইড পাবলিশার পার্টনার হওয়ার পর থেকেই ইজোয়িক ব্যবহারকারীদের গুগলের সবচেয়ে ভালো প্রাকটিসগুলো বেছে বেছে উপহার দিচ্ছে, যা পারফম্যান্স এবং ইনকাম বৃদ্ধির জন্য খুবই কার্যকরী।

গুগল এডসেন্স বনাম ইজোয়িক

Ezoic এবং Google Adsense এর মধ্যে পার্থক্য জেনে চলুন দেখে নেওয়া যাক কোনটি আপনার জন্য বেশি লাভজনক হবে, কোনটি ব্যবহার করা উচিৎ।

  • যদিও ইজোয়িক এবং গুগল এডসেন্স দুটোই ফ্রি প্লাটফর্ম, তবে ইজোয়িক এপ্রুভাল পাওয়ার জন্য ব্লগে মাসিক কমপক্ষে ১০,০০০ ভিজিটর থাকতে হবে।
  • অ্যাডসেন্স ড্যাশবোর্ডে বিভিন্ন ধরনের রিপোর্ট আছে যেমন, clicks on ads, Cost per Click (CPC),  click through rate (CTR), কিন্তু ইজোয়িক একাউন্টে এসব কিছুই নেই। Ezoic শুধুমাত্র প্রতি ১০০০ ভিউ এর জন্য কতটাকা ইনকাম হলো তাই জানায়, যাকে EPMV বলা হয়।
  • গুগল এডসেন্স এবং ইজোয়িক উভয়ই মাসিক পেমেন্ট দেয়। অ্যাডসেন্স পেমেন্ট পাওয়ার জন্য যেখানে একাউন্টে ১০০ ডলার থাকতে হয়, সেখানে ইজয়িক পেমেন্ট নিতে ২০ডলার থাকলেই উইথড্র করা যায়।
  • গুগল অ্যাডসেন্স অটো অ্যাড ব্যবহার করার জন্য অনেক সময় অতিরিক্ত অ্যাড চলে আসে, যার কারণে এডসেন্স এড লিমিট থেকে শুরু করে একাউন্ট সাসপেন্ড কিংবা ব্যান পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে, এছাড়া এডসেন্স এর পাশাপাশি অ্যাডসেন্স বিকল্প নেটওয়ার্ক থেকে বিজ্ঞাপন দেখালেও অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। কিন্তু, ইজোয়িক বিজ্ঞাপন অপটিমাইজিং কোম্পানীর সার্ভিস নিলে একাধিক কোম্পানীর বিজ্ঞাপন দেখানে বা বিজ্ঞাপন সংখ্যা নিয়ে আপনার কোনো চিন্তাই করতে হবে না, কারণ কোথায় বিজ্ঞাপন দেখানো allowed তা তাদের সিস্টেমই ঠিক করে দেয়।
  • অ্যাডসেন্স অটো অ্যাড সাধারণত যেখানে ফাঁকা পায় সেখানেই বিজ্ঞপন বসিয়ে দেয়। কিন্তু অ্যাডসেন্সের সাথে ইজোয়িকের পার্থক্য হলো আপনি Ezoic বিজ্ঞাপনগুলো আপনার নিজের মতো কন্ট্রোল করতে পারবেন।
  • গুগল অ্যাডসেন্স ব্যবহার করলে সাধারণভাবেই আমাদের সাইট স্পিড কমে যায়, যার কারণে পেজ ভিউ কমে যাওয়ায় বাউন্সরেট বেড়ে যায়। কিন্তু ইজোয়িক আপনার সাইটে caching এবং cloudflare CDN ব্যবহার করায় সাইট লোডিং স্পিড বৃদ্ধি পায়।
  • গুগল এডসেন্স সন্দেহজনক কিছু দেখলে কোনো রকম ওয়ার্নিং ছাড়াই অ্যাডসেন্স একাউন্ট ব্যান্ড করে দেয়। কিন্তু, ইজোয়িক এমন কিছু বুঝতে পারলে আপনাকে লিখিত আকারে জানাবে, আপনার রেস্পন্স না পেলে ওয়ার্নিং দিবে কিংবা একাউন্ট বন্ধ করে দিবে।
  • যদি Ezoic এবং Google Adsense এর মধ্যে ইনকাম নিয়ে পার্থক্য করি, তাহলে ইজোয়িক কোম্পানী কয়েককগুণ এগিয়েই থাকবে। কারণ তারা ব্যবহারকারীর জন্য বিভিন্ন এড নেটওয়ার্ক থেকে বিজ্ঞাপন নিয়ে তার জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় এড দেখায়। তাছাড়া ইজোয়িক পেজ ভিউ এর উপর পেমেন্ট দেয়। অর্থাৎ আপনার পেজ ভিউ হলেই ইনকাম আসছে, যা গুগল এডসেন্স এর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। গুগল অ্যাডসেন্সের ইনকাম মূলত অ্যাড ক্লিক এর উপর নির্ভর করে।
আরো পড়ুন:  গুগল এডসেন্স পাওয়ার উপায়

Ezoic এপ্রুভাল পাওয়ার উপায়

১) ইজোয়িকের জন্য সবচেয়ে বড় প্রশ্ন ল্যাঙ্গুয়েজ নিয়ে। বাংলা ভাষায় ইজোয়িক থেকে অনুমোদন পাওয়া যায় কি না। যি, বাংলা ভাষায় ব্লগিং করলেও ইজোয়িক সেবা নিতে পারবেন।

২) একইসাথে ওয়েবসাইটে প্রতিমাসে ১০,০০০ ভিজিটরস থাকতে হবে। যদি ইউরোপ বা আমেরিকা থেকে আসা ভিজিটরসের পরিমাণ কম থাকে তবে অনুমোদন পাওয়ার জন্য আরো কিছু বেশি থাকলে ভালো হয়।

৩) অ্যাডসেন্স এপ্রুভাল থাকতে হবে। যদি না থাকে, তবে গুগল অ্যাডসেন্স পলিসি অনুযায়ী ব্লগ সাজাতে হবে, অর্থাৎ ইউনিক কনটেন্ট, টার্মস এন্ড কন্ডিশন ঠিক রাখতে হবে, যেন Adsense অনুমোদনযোগ্য হয়।

শেষ কথা

যদি আপনি আমাকে ইজোয়িক এবং অ্যাডসেন্স এর মধ্যে কোনো একটিকে বেছে নিতে বলতেন, তবে আমি অবশ্যই Ezoic বেছে নিতাম। তবে ইজোয়িকে গেলেও কিন্তু এডসেন্স থেকে বিজ্ঞাপন আসবেই। যদি না অন্য কোনো কোম্পানী Google Adsense এর বিজ্ঞাপনকে বিড করে হারিয়ে দেয়।

সুতরাং আপনার ব্লগ যদি হয় ইংরেজিতে, সেইসাথে বাকী সকল রিকুয়ারমেন্টও পূরণ হয়ে থাকে, তবে ইজোয়িক বেছে নিন, এবং ব্লগ থেকে আরো বেশি টাকা ইনকাম করুন।

2 thoughts on “ইজোয়িক নাকি অ্যাডসেন্স? Ezoic বনাম Adsense”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top