ফেসবুকে ব্যবসা করার নিয়ম | ফেসবুকে অনলাইন ব্যবসা

ফেসবুকে ব্যবসা করার নিয়ম

বর্তমানে ফেসবুকে অনলাইন ব্যবসা করে বেশ ভালো ইনকাম করা সম্ভব। আপনিও এফ কমার্স এর মাধ্যমে স্বাবলম্বী হতে চান? তাহলে ফেসবুকে ব্যবসা করার নিয়ম সম্পর্কে অবশ্যই ভালোভাবে জানতে হবে।

পড়াশোনা ও নিজের হাতখরচ চালানোর জন্য অনেকেই পড়াশোনার পাশাপাশি পার্ট টাইম চাকরি খোঁজেন। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে, যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি মিলে না অথবা চাকরির রিকোয়ারমেন্ট অনুযায়ী নিজের যোগ্যতা বা দক্ষতা মিলে না।

এসব ছাড়াও ভালো লাগাটাও একটা ফ্যাক্ট। কারণ বেতন যতই ভালো হোক, কাজের প্রতি ভালোবাসা না থাকলে সেই চাকরি করে মজা পাওয়া যায় না। কিন্তু যদি আপনি চাকরি না করে ফেসবুকে অনলাইন ব্যবসা করেন, তাহলে ব্যাপারটা সম্পূর্ণ অন্যরকম হবে।

এই আর্টিকেলটিতে আমরা জনপ্রিয় সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে অনলাইন ব্যবসা করার নিয়ম, সুবিধা, টিক্সস এন্ড টিপস সম্পর্কে জানবো।

ফেসবুক অনলাইন ব্যবসা বা এফ কমার্স কি?

ফেসবুকে অনলাইন ব্যবসাই-কমার্স সম্পর্কে আমরা অনেকেই হয়তো জানি যে এটা হচ্ছে অনলাইন নির্ভর কেনাবেচা। কিন্তু ক্রয়-বিক্রয় যদি হয় ফেসবুক নির্ভর, তাহলেই সেটাকে এফ কমার্স বলে।

ফেসবুকের মাধ্যমে কেনাবেচা এখন বর্তমানে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন দেশীয় পণ্য নিয়ে ইতিমধ্যেই অনেকে ব্যবসা করে সফল হচ্ছেন। যেমন- বিভিন্ন দেশীয় মৌসুমি ফল, দেশীয় শাড়ি, শাল, আঞ্চলিক খাবার ইত্যাদি৷

যদি আপনার বিশেষ কোনো স্কিল থাকে যেমন- পেইন্টিং, ক্রাফটিং, রান্না-বান্না বা কোনো ডিজিটাল স্কিল ইত্যাদি তাহলে সে-সম্পর্কিত একটি ফেসবুক গ্রুপ খুলুন আর গ্রুপের মেম্বার বাড়ানোর সাথে সাথে ছোট ছোট ভিডিও এর মাধ্যমে সেগুলো সম্পর্কে মানুষকে বিভিন্ন ধরণের টিপস দিতে পারেন।

এভাবে মোটামুটি পরিচিতি অর্জন করে ফেলতে পারলে তারপর এসব সংক্রান্ত বিভিন্ন কোর্স লঞ্চ করতে পারেন। অনলাইন টাই-ডাই প্রশিক্ষণ, বাটিক প্রশিক্ষণ, বাচ্চাদের ছবি আঁকা, হাতের লেখা, আর্টিকেল বিক্রি, আবৃত্তি ইত্যাদি সংক্রান্ত শত শত কোর্স করিয়ে বর্তমানে অনেকেই সফল হচ্ছেন।

আপনার যদি এরকম ইউনিক কোনো স্কিল থাকে কিংবা আপনার এলাকায় কোন সিগনেচার প্রোডাক্ট থাকে তাহলে, আপনিও ফেসবুকে অনলাইন ব্যবসা করতে পারেন।

সিগনেচার পণ্য কী?

বর্তমান সময়ে আরেকটি সুন্দর মাধ্যম ফেসবুকে অনলাইন ব্যবসার ক্ষেত্রে। সিগনেচার পণ্য হলো কোনো ব্রান্ডের সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রোডাক্ট।

যেমন বগুড়ায় অনেক ভালো ভালো খাবার থাকলেও দই সবচেয়ে বিখ্যাত। তাই দই হলো বগুড়ার সিগনেচার প্রোডাক্ট। অনেকেরই নিজস্ব সিগনেচার পণ্য নিয়ে কাজ করার স্বপ্ন থাকে।

তাই ব্যবসা শুরু করতে পারেন আপনার এলাকার কিংবা বিখ্যাত ব্রান্ডের সিগনেচার প্রোডাক্ট নিয়ে। যার সারাদেশে চাহিদা আগে থেকেই রয়েছে।

ফেসবুকে ব্যবসা করার নিয়ম | Facebook for business

আমরা যারা ইতিমধ্যে ফেসবুক ব্যবহার করি তারা প্রায়ই দেখি ফেসবুকে নিউজ ফিডে স্ক্রল করার সময় বিভিন্ন পেইজ থেকে তাদের পণ্যের একটা বিজ্ঞাপন সামনে আসে।

শুধু যে বিজ্ঞাপনটাই সামনে আসে তাই নয়। কিভাবে আপনি পণ্যটি কিনবেন, পণ্যটি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য ও গুণাবলি, কিভাবে আপনাকে পণ্যটি পৌছে দেওয়া হবে এবং শেষমেশ আপনি কিভাবে অনলাইনে বা ঘরে বসেই পেমেন্ট করে দিতে পারেন তা সম্পর্কেও সকল তথ্য দেওয়া থাকে।

আরো পড়ুন:  অনলাইন বিজনেস আইডিয়া : ২৮ টি সেরা ব্যবসা

আপনার ফেসবুক ব্যবসাও যদি লাখ লাখ মানুষের কাছে পৌঁছাতে চান তাহলে, ফেসবুকে ব্যবসা করার নিয়মগুলো জেনে নিন।

১) ফেসবুকে পেজ তৈরি করুন

ফেসবুকে ব্যবসা করার নিয়মগুলোর মাঝে ১ম ধাপ হলো পেজ তৈরি করা। আপনার ব্যবসাটি যদি অনলাইনে নিয়ে আসতে চান তবে প্রথমত আপনাকে ঐ প্লাটফর্মটির সাথে যুক্ত হতে হবে। অর্থাৎ ফেসবুকে একাউন্ট তৈরী করতে হবে।

আপনি এমন একটি পেইজ ফেসবুকে তৈরী করুন যেখানে আপনি আপনার অনলাইন ব্যবসায়ের সকল পণ্যগুলো ক্রেতাদের জন্য উন্মুক্ত রাখবেন।

ক্রেতা বা ভোক্তারা আপনার পন্যগুলো ফেসবুক পেইজের মাধ্যমে তাদের নিউজ ফিডে দেখতে পারবে এবং সেখান থেকে সরাসরি কেনাকাটা করতে পারবেন।

অনলাইন ব্যবসা বলতে আপনার ব্যবসায়ের সকল কার্যাবলী অনলাইনেই হবে। শুধু আপনি আপনার পণ্যগুলো অনলাইনে তুলে ধরবেন, ক্রেতা দেখবে, অনলাইনে অর্ডার করবে এবং আপনিও অনলাইনেই অর্ডার গ্রহন করবেন। এতে অফলাইনে শুধু দুটি কাজ হবে।

  1. আপনার পণ্যটি অনলাইনে অর্ডার হলেও ক্রেতার নিকট পণ্যটি কেউ একজন (ডেলিভারি ম্যান) পৌছে দিবেন।
  2. চাইলেই কেউ আপনার নিজ ঠিকানায় এসেও পণ্য নিতে পারেন।

২) প্রোডাক্ট / সার্ভিস ক্যাটালগ তৈরি করুন

ফেসবুকে ব্যবসা করার নিয়ম হলো আপনার প্রোডাক্ট সম্পর্কে গ্রাহককে জানার সুযোগ করে দেওয়া। ফেসবুক পেজ তৈরি করার পর আপনার প্রোডাক্ট কিংবা সার্ভিস সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানিয়ে প্রোডাক্টগুলো ক্যাটালগে এড করে দিন। প্রোডাক্ট প্রাইস, ফিচার, কন্ডিশন, ডেলিভারী টাইম প্রভৃতি প্রয়োজনীয় তথ্য উল্লেখ করুন।

৩) স্প্রেডশীট তৈরি করুন

আপনার প্রতিটি গ্রাহকের তথ্য আপনার ফেসবুক ব্যবসার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কেননা, আপনার কাস্টমার আপনাকে ভুলে যেতেই পারে, কিন্তু তাকে আপনার কথা মনে করিয়ে দিতে হবে।

আর এজন্য যোগাযোগের তথ্য জমা রাখতে হয়। এই কাজের জন্য একটি স্প্রেডশীট তৈরি করুন এবং সেখানে প্রতিটি গ্রাকরে তথ্য লিখে রাখুন।

পরবর্তীতে কোন অফার বা নতুন প্রোডাক্ট নিয়ে আসলে ফোন, মেইল কিংবা মেসেঞ্জারে জানিয়ে দিতে পারবেন। এভাবে আপনার ফেসবুক ব্যবসার মার্কেটিং করা সম্ভব হবে।

৪) ট্রেড লাইসেন্স করুন

ব্যবসার অফিসিয়াল বৈধতা হলো ট্রেড লাইসেন্স। আপনার ফেসবুক ব্যবসা ট্রেড লাইসেন্স থাকলে গ্রাহক আপনাকে সহজে বিশ্বাস করতে পারবে। তাছাড়া, ফেসবুকে প্রোডাক্ট বুস্ট করার জন্যও আপনার ট্রেড লাইসেন্স দরকার হবে।

৫) ফেসবুকে এড দিন

ফেসবুক বিজনেস পেইজগুলো বিজ্ঞাপনের সুযোগ তৈরী করে দেয় পেইজ বা পোস্ট বুস্ট। নতুন অবস্থা কিংবা পুরাতন, ফেসবুক ব্যবসায় গ্রাহক বৃদ্ধি করার সেরা উপায় পেইড বুস্টিং।

ফেসবুকে পেইজের সবখানেই বুস্ট অপশনটি দেখতে পারবেন। ফেসবুক পোস্ট বুস্ট করলে আপনার পোস্টটি তারাও দেখতে পারবে যারা আপনার পেইজে সাথে আগে যুক্ত ছিলেন না।

তবে এখানে বিজ্ঞাপন তথা পোস্ট বুস্টের জন্য ফেসবুককে কিছু ডলার দিতে হবে। আপনি যদি চান শুধু আপনার এলাকার মানুষ আপনার এডটি দেখবে তবে লোকেশনে আপনার এলাকা দিতে পারবেন।

যদি চান যে, ২/৩ দিন আপনার এড টি ফেসবুকে থাকুক তাও কাস্টমাইজড করা যাবে। এমনকি আপনি ছেলে-মেয়ে বা কত বছর বয়সীদের নিকট এডটি দেখাতে চান তাও নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।

৬) ডেলিভারী পার্টনার ঠিক করুন

আপনি যদি ডিজিটাল সার্ভিস ছাড়া ফিজিক্যাল প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করেন, তাহলে গ্রাহকের কাছে প্রোডাক্ট পৌঁছানোর জন্য ডেলিভারী পার্টনার ঠিক করে নেওয়া জরুরী।

আরো পড়ুন:  ছাত্রদের জন্য অনলাইনে আয় করার ১০ উপায় 2023

বর্তমানে বিভিন্ন কুরিয়ার সার্ভিস এসব ডেলিভারীর জন্য আলাদা সেক্টর চালু করেছে, যেখানে ক্যাশ অন ডেলিভারী সার্ভিস দেয়।

৭) ফেসবুক গ্রুপ তৈরি করুন

আপনার গ্রাহকদের নিজ নিজ মতামত, চাহিদা ও প্রোডাক্ট সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য দেওয়ার জন্য সুযোগ করে দিন। এজন্য ফেসবুক গ্রুপের চেয়ে ভালো কিছু আর কি হতে পারে!

ফেসবুক গ্রুপ আপনার ফেসবুক পেজের চেয়ে বেশি একটিভ থাকে। যার কারণে গ্রাহক এংগেজমেন্ট, কাস্টমার এবং সর্বোপরি আপনার বিক্রি বৃদ্ধি পাবে।

ফেসবুকে ব্যবসা করে সফলতা পেতে করণীয়

ফেসবুকে ব্যবসা করার নিয়ম শেখার মূল উদ্যেশ্যই হলো নতুন গ্রাহক বৃদ্ধি এবং পুরাতন গ্রাহক ধরে রাখার কৌশল সম্পর্কে শেখা, অর্থাৎ ব্যবসায় সফলতা অর্জন করা। তো, চলুন সেই মূল কাজটি কিভাবে করা যায়, সেসম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।

১। প্রোডাক্ট রিসার্চ:

ফেসবুকে অনলাইন বিজনেস করবেন আর প্রোডাক্ট রিসার্চ করবেন না, তা কি হয়? অবশ্যই না। আপনাকে যথাসম্ভব প্রোডাক্ট রিসার্চ করতে হবে।

অবশ্যই সেসব পণ্য নির্ধারণ করতে হবে যেগুলোর পাবলিক ডিমান্ড বেশি। কারণ যেসব পণ্যের চাহিদা বেশি সেগুলো নিয়ে কাজ করলে দ্রুত লাভবান হওয়ার আশা রাখতে পারেন। তবে অবশ্যই সেই প্রোডাক্টটি সম্পর্কে আপনার ধারণা থাকতে হবে ক্রিস্টাল ক্লিয়ার।

মৌসুমী চাহিদাসম্পন্ন পণ্য নিয়েও কাজ করতে পারেন। অর্থাৎ একটি পণ্য নিয়ে সারামাস না বসে থেকে বছরের যে সময়ে যে পণ্যের চাহিদা বেশি থাকবে ঐ সময়ে ঐ পণ্যটি নিয়ে কাজ করতে পারেন। এছাড়াও ফেসবুক বিজনেস আইডিয়া পেতে ২৮টি অনলাইন ব্যবসা ও ২০টি ই-কমার্স বিজনেস আইডিয়া দেখে নিন।

২। কনটেন্ট ডেভেলপমেন্ট:

ফেসবুক মার্কেটিং এর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হচ্ছে কনটেন্ট ডেভেলপমেন্ট । এবিষয়ে যার যত জ্ঞান থাকবে সে তত বেশি এগিয়ে যাবে।

৩। লিড নার্সিং:

সেই সাথে পেইজের লিড নার্সিং করতে হবে। অর্থাৎ তাদের এংগেজমেন্ট যেন ঠিক থাকে সে ব্যাপারে লক্ষ্য রাখুন।

৪। রিচ বৃদ্ধি করা:

পোস্টের রিচ কেমন হচ্ছে সেটা লক্ষ রাখতে হবে। ফেসবুকে অন্যান্য ব্যবসায়ীদের মাঝে টিকে থাকতে হলে আপনার পোস্ট রিচ হওয়া খুবই জরুরি।

৫। অ্যানালাইসিস:

ফেসবুকে ব্যবসা করার নিয়ম এর মাঝে এফ কমার্সে সফলতা পেতে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নিজের প্রতিদ্বন্দী ফেসবুক ব্যবসায়ীদের অ্যানালাইস করা। এর মাধ্যমেও মিলতে পারে অনেক ধরণের আইডিয়া। একই সাথে নিজের সমস্যা, নেগেটিভ দিক গুলোও খুঁজে বের করা সহজ হয়ে ওঠে।

৬। প্রোডাক্ট সোর্স:

ফেসবুকে ব্যবসা করার গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম হলো, যে পণ্য নিয়ে কাজ করবেন তার যথাযথ সোর্স খুঁজে বের করা এবং সে বিষয়ে স্বচ্ছতা অবলম্বন করাও একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। এটা অবশ্যই খেয়াল রাখবেন।

৭। ডেলিভারি সার্ভিস:

চার্জ সহনীয় পর্যায়ে রাখতে হবে। ফেসবুকে ব্যবসার প্রচারের স্বার্থে শুরুতে কিছুদিন ফ্রী ডেলিভারি দিতে পারেন।

৮। রিভিউ:

আপনার ক্রেতাদের প্রতিবার পণ্য দেওয়ার পর তাদের থেকে একটি পজিটিভ রিভিউয়ের রিকুয়েস্ট করুন। এতে নতুন ক্রেতারা বেশী আগ্রহ পাবে।

ফেসবুকে অনলাইন ব্যবসা গ্রাহক ধরে রাখার উপায়

১. নিজের পণ্যের ছবিগুলোতে লোগো ব্যবহার করুন

আপনি যখন আপনার পণ্যগুলোর ছবি আপলোড করবেন, তখন যেকেউ আপনার পেইজ থেকে ছবিগুলো ডাউনলোড করতেই পারে এতে আপনার ব্যবসায়ে ক্ষতি হতে পারে। তাই নিজের ছবিতে লোগো ব্যবহার করুন।

এতে প্যাসিভ এডভারটাইজমেন্টও হয়ে যায়। কেউ যদি ছবিগুলো পছন্দ করে কোথাও শেয়ার করে, তবে লোগো থাকার কারণে সোর্স সম্পর্কে জানতে পারবে এবং আপনার পেজ খুজে বের করতে পারবে।

আরো পড়ুন:  ফেসবুকে কিভাবে টাকা আয় করা যায় | সেরা ৮ উপায় জেনে নিন

২. কাস্টমারদের দ্রুত রিপ্লাই করুন

আপনি যত দ্রুত আপনার কাস্টমারদের রিপ্লাই করবেন তত বেশী আপনার কাস্টমাররা আপনার প্রোডাক্ট ক্রয় করতে আস্থা পাবেন।

৩. সবসময় সহজ লেখা ব্যবহার করুন

আপনার পণ্য সম্পর্কে বিস্তারিত যা তথ্য দিবেন তা যেন খুব সহজ ভাষায় দেওয়া থাকে সেদিকে সচেতন থাকুন।

৪. দ্রুত ডেলিভারি

ফেসবুকে ব্যবসা করার এই নিয়মটি বাংলাদেশে খুব একটা ফলো করেনা, যা ক্রেতা হারানোর অন্যতম কারণ। আপনি যদি আপনার পণ্য ডেলিভারির ক্ষেত্রে কোনে পার্সেল কোম্পানির সাহায্য নিয়ে থাকেন তবে দ্রুত ডেলিভারি করা নিশ্চিত করুন। এতে ক্রেতারা বেশী আগ্রহ পাবেন।

ফেসবুকে অনলাইন ব্যবসা করা কতটা কঠিন?

ফেসবুক বিজনেস আইডিয়াপ্রথমে বিষয়টি নিয়ে অনেকেই ভাবতে পারেন যে ফেসবুকে অনলাইন ব্যবসা পরিচালনা করা খুবই বড় ব্যাপার। প্রক্রিয়াগুলো খুবই জটিল হবে, খরচ বেশী হবে। তবে ব্যাপারটি মোটেও তেমন কিছু না।

ফেসবুকে ব্যবসা করার ক্ষেত্রে আপনাকে কোনো খরচই করতে হবে না। শুধু প্রয়োজন একটা গুছানো ও পরিপাটি বিজনেস পেইজ।

ফেসবুকে অনলাইন ব্যবসা কেন করবেন?

বর্তমানে সময়টিকে বা যুগকে ব্যবসায়ের জন্য অনুকূল হিসেবেই গণ্য করা হয়। ফেসবুকে ব্যবসা আরম্ভ করা খুব বেশী কঠিন না। তবে ব্যবসায়ের এই সহজলভ্যতার বাজারে প্রতিযোগীতামূলক ব্যবসা করা খুবই কঠিন, বিশেষ করে ফেসবুকে ব্যবসা করার নিয়ম ফলো করে দীর্ঘদিন ধরে রাখাই কষ্টকর।

সকল ব্যবসায়ীরাই চান তার ব্যবসা সম্পর্কে সকল ক্রেতা বা ভোক্তারা জানুক। পন্য অন্য কারো থেকে না নিয়ে তাদের থেকেই ক্রয় করুক। এতে তাদের মুনাফা বাড়বে এবং ব্যবসায়ের প্রসার হবে।

তবে প্রতিযোগীতামূলক ব্যবসা করা সম্ভব হচ্ছে না শুধুমাত্র একটি প্রধান কারনে এবং সেটি হচ্ছে প্রচারের সহজলভ্যতা।

তাই সারাক্ষণ নিউজফিডে ঘুরে সময় নষ্ট না করে নিজের সময়টাকে কাজে লাগাতে পারেন। যে ফেসবুকে ঘন্টার পর ঘন্টা সময় আর ডাটা নষ্ট করছেন সেগুলোই কাজে লাগিয়েই যদি ফেসবুক থেকে আয় করতে পারেন তাহলে কিন্তু ব্যাপারটা মন্দ হয় না।

যদি আপনি ফেসবুকে ব্যবসা করার নিয়মগুলো ফলো করে ফেসবুকে অনলাইন ব্যবসা শুরু করেন, তাহলে কিন্তু ব্যাপারটা বেশ ইফেক্টিভ হবে, সেইসাথে আপনার পড়াশোনার খরচ বা নিজের হাতখরচও উঠে আসবে। কিংবা আপনার ক্যারিয়ার অপশন হিসেবেও ফেসবুক বিজনেস বা এফ কমার্স করা যায়।

সেরকম হলে আপনি নিজেই নিজের কর্মসংস্থানের একটা ব্যবস্থা করতে পারবেন এবং চাইলে পড়াশোনা শেষে এই ফেসবুকে অনলাইন ব্যবসার সাথে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে নিতে পারেন।

ফেসবুকে ব্যবসা করার নিয়ম বিষয়ে শেষ কথা

ফেসবুকে ব্যবসা করার নিয়ম জানা কিংবা শুধু ব্যবসায়িক আইডিয়া থাকলেই হবে না, বা তার সাথে সাথে বাস্তবায়নের জন্য সঠিক পরিকল্পনাও জরুরি। ফেসবুকে অনলাইন ব্যবসা করার ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই সঠিক পরিকল্পনা করেই মাঠে নামতে হবে। তা না হলে অকালে ঝরে পরার সম্ভাবনাও কিছু কম নয়।

ফেসবুক হলো এমন একটা জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যেখানে জনগণের সরাসরি প্রতিক্রিয়া জানানোর অনেক সুযোগ থাকে। যার কারণে আপনার ফেসবুক ব্যবসার সুনাম ধরে রাখতে হলে ভোক্তার পজিটিভ রিভিউ খুব গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করবে।

কিন্তু যদি কোনো কারণে ভোক্তার কাছে মানসম্মত প্রোডাক্ট বা সার্ভিস পৌঁছে দিতে অক্ষম হন তাহলে ভোক্তার নেগেটিভ রিভিউ আপনার প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে মানুষের নেগেটিভ ধারণা তৈরি হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়।

তাই আপনাকে মনে রাখতে হব,  ভোক্তার সন্তুষ্টিই আপনার ফেসবুকে ব্যবসার সুনামের ও সফলতার পূর্বশর্ত।

সবসময় চেষ্টা করবেন পণ্য বা সার্ভিসের দাম অনুযায়ী গুণগুত মান বজায় রাখতে। তাহলেই আপনার ফেসবুকে অনলাইন ব্যবসা জমিয়ে উঠতে খুব বেশি সময় লাগবে না।

কাস্টমারের সাথে সুসম্পর্ক যেকোনো ব্যাবসার জন্যই অতীব গুরুত্বপূর্ণ তা হোক অনলাইন বা অফলাইন।

এটুকু বলতে পারি, এতক্ষণ যা যা বললাম অর্থাৎ, ফেসবুকে ব্যবসা করার নিয়ম অনুযায়ী সবকিছু ঠিকঠাকভাবে করতে পারলে আপনার ব্যাবসার প্রচার প্রসার নিশ্চিতভাবেই বৃদ্ধি পাবে ইন-শা-আল্লাহ। আপনার ফেসবুক ব্যবসা আরো গতিশীল হোক এটাই কামনা।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top