অনলাইন বিজনেস আইডিয়া : ২৮ টি সেরা ব্যবসা

অনলাইন বিজনেস আইডিয়া

অনলাইন বিজনেস হলো এমন একটি ব্যবসা যা সম্পূর্ণরূপে ইন্টারনেট দ্বারা পরিচালিত হয়। ব্যবসা শুরু করার জন্য বিভিন্ন ধরনের অনলাইন বিজনেস আইডিয়া নিয়েই কাজ করা যায়। যেকোন পণ্য বিক্রি থেকে শুরু করে অনলাইন পরিষেবা অনলাইন বিজনেস এর অন্তর্ভুক্ত।

প্রযুক্তির অগ্রগতির সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অনলাইন বিজনেস। যেহেতু ঘরে বসে কম বিনিয়োগে অনলাইন বিজনেস আইডিয়া নিয়ে কাজ করা যাচ্ছে, তাই অধিকাংশ মানুষ অনলাইন বিজনেসকে তাদের লক্ষ্য হিসেবে নিচ্ছেন। এখন এটা হলফ করে বলা যায় যে, সূদুর ভবিষ্যতে অনলাইন ব্যবসা অফলাইন ব্যবসাকে ছাড়িয়ে যাবে।

বর্তমানে প্রায় সবার একটাই প্রশ্ন, কীভাবে অনলাইন ব্যবসা শুরু করা যায়? অনলাইন বিজনেস সম্পর্কে অনেকের মধ্যে দ্বিধা কাজ করে। কিংবা অনেকের কাছে অনলাইন বিজনেস আইডিয়া থাকলেও কিভাবে শুরু করা যায় সে বিষয়ে অনেকে অবগত নন।

অর্থাৎ, অল্প টাকায় অনলাইন বিজনেস করার জন্য অনলাইন বিজনেস আইডিয়া খুঁজে পাওয়া এবং কিভাবে অনলাইন বিজনেস শুরু করা যায় সেই প্রশ্নের উত্তর পাওয়াই এখন ব্যবসা শুরু করার বড় চ্যালেঞ্জ।

অনলাইনে কি ব্যবসা করা যায় ভাবছেন, কিংবা আপনি কি অনলাইন বিজনেস আইডিয়া খুঁজছেন, আজকের এই লেখাটা তাহলে আপনার জন্যই।

অনলাইন বিজনেস টিপস ও online business ideas নিয়ে এই আর্টিকেলে অনলাইন বিজনেস কিভাবে শুরু করতে হয় এবং কম পুঁজিতে করা যাবে এমন ২৮ টি অনলাইন ব্যবসার আইডিয়া তুলে ধরার চেষ্টা করবো।

একনজরে সম্পূর্ণ আর্টিকেল

অনলাইন বিজনেস কি | What is Online Business?

ইন্টারনেটকে কাজে লাগিয়ে কোন পণ্য বা সেবা বিক্রি করাকে অনলাইন বিজনেস বলা হয়। অনলাইন ব্যবসায় শুরু থেকে শেষ অবধি প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের উপর নির্ভরশীল। অনলাইনের মাধ্যমে কোনো প্রোডাক্ট বা সেবা টার্গেট গ্রুপের কাছে বিক্রি করে টাকা আয় করা হয়।

তবে, অনলাইন বিজনেস বলতে শুধু যে প্রোডাক্ট কেনা-বেচাকে বুঝায় এমন কিন্তু নয়। অনলাইনের মাধ্যমে যেকোনো ধরনের কাজ যেমন: ব্লগ বা ইউটউব চ্যানেলে গুগল এডসেন্স এর মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে আয় করাও অনলাইন বিজনেস এর অন্তর্ভুক্ত।

অনলাইন বিজনেস আইডিয়া | Online Business Ideas

অনলাইনে ব্যবসার এতো এতো স্কোপ রয়েছে যে, আপনি দ্বিধায় পরে যাবেন কোনটি আপনার জন্য উপযুক্ত। এখানে আমি কয়েকটি সেরা অনলাইন বিজনেস আইডিয়া তুলে ধরার চেষ্টা করবো।  আপনি আপনার সুবিধামতো ব্যবসাটি বেছে নিয়ে শুরু করে দিতে পারেন নিজের অনলাইন ব্যবসা।

আর্টিকেলটিতে আমি এমন কয়েকটি অনলাইন ব্যবসার কথা তুলে ধরবো যা শুরু করার জন্য আপনার খুব কম পুঁজি প্রয়োজন হবে এমনকি, কয়েকটি online business idea নিয়ে কাজ করার জন্য আপনার কোনো বিনিয়োগই প্রয়োজন হবেনা। চলুন তাহলে এমনই ২৮ টি অনলাইন বিজনেস আইডিয়া সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

২৮টি অনলাইন ব্যবসার আইডিয়া

১. অনলাইনে পণ্য বিক্রি

বর্তমানে প্রায় মানুষই অনলাইনের এই বিজনেসটির দিকে বেশি ঝুঁকছেন। আপনিও চাইলে কম পুঁজিতেই শুরু করতে পারবেন এই ব্যবসা।

যেসব জিনিস বেশি নজর কাড়ে ক্রেতাদের এমন product নিয়ে শুরু করতে পারেন আপনার ব্যবসাটি। বর্তমান মার্কেটপ্লেসে কোন প্রোডাক্ট এর জনপ্রিয়তা বেশি? কিংবা ক্রেতারা কোন জিনিসের প্রতি বেশি আগ্রহী সেটা জেনে তা দিয়েই শুরু করতে পারেন আপনার ব্যবসা।

তা হতে পারে পরিধেয় কাপড় কিংবা সাজ-সজ্জার সরঞ্জাম, খেলনা কিংবা যেকোনো পণ্য। তবে আপনি যদি হাতের কাজে পারদর্শী হয়ে থাকেন তাহলে নিজেই ইউনিক কিছু বানিয়ে শুরু করে দিন আপনার অনলাইন ব্যবসা। 

২. রিসেলার বিজনেস

এই অনলাইন রিসেলিং বিজনেস করার জন্য আপনার নিজের কোনো product থাকার দরকার নাই। এর জন্য শুধুমাত্র দরকার পরবে আপনার একটা ওয়েবসাইটের, যার মাধ্যমে আপনি অন্য কোনো কোম্পানীর পণ্য অর্ডার নিয়ে বিক্রি করবেন।

এতে আপনার কোনো বিনিয়োগেরও প্রয়োজন পরবে না, আর না থাকবে পণ্য সংগ্রহ রাখার দায়। খুব সহজেই এই অনলাইন বিজনেসের মাধ্যমে মোটা টাকা লাভ করা সম্ভব। 

৩. অনলাইন কোর্স তৈরি

বর্তমানে শিক্ষার্থীরা প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে পরছে। এখন কোনো বিষয় জানার জন্য তারা শ্রেণি শিক্ষককের কাছে না গিয়ে অনলাইনের দ্বারস্থ হচ্ছে বেশি। তাই শিক্ষণীয় কিছু কোর্স তৈরি করে শুরু করতে পারেন আপনার অনলাইন কোর্স বিজনেস। 

আপনি যে বিষয়ে অভিজ্ঞ কিংবা ভালো জানেন এমন কোনো বিষয় নিয়ে কোর্স তৈরি করে নিজের ব্লগে কিংবা প্রতিষ্ঠিত কোনো অনলাইন কোর্সের প্লাটফর্ম যেমন; আপগ্রেড, ইউডেমির মাধ্যমে বিক্রি করে ইনকাম করতে পারেন।

আরো পড়ুন:  অল্প পুঁজিতে লাভজনক ব্যবসা | 10 Business idea with small capital

এক্ষেত্রে এমন কিছুর উপর কোর্স তৈরি করবেন যা অন্যের উপকারে আসে এবং কোর্স তৈরির পূর্বে নিজেকে দিয়ে যাচাই করে নিবেন এই কোর্সটি আপনি নিজে কিনতেন কি না?

৪. ই-বুক লেখা

আপনার লেখার দক্ষতা থাকলে আপনার জন্য এই বিজনেসটি হতে পারে খুবই লাভজনক ব্যবসা। বাজারে চাহিদার ওপর ভিত্তি করে 

যেকোনো বিষয় নিয়ে লিখতে পারেন ই-বুক।তবে যেকোনো বিষয় লিখার পূর্বে সে বিষয় নিয়ে পর্যাপ্ত অনুশীলন করে একটি স্বচ্ছ ধারণা নিয়ে লিখতে হবে ই-বুক।

আপনাকে মনে রাখতে হবে আপনার লেখায় এমন কিছু নতুনত্ব থাকবে যা পাঠককে আকৃষ্ট করতে বাধ্য। ই-বুক পাবলিশ করার অনেক সাইট রয়েছে যেখানে আপনার বুকটি পাবলিসড করে অনেক টাকা আয় করতে পারবেন। এমনই একটি জনপ্রিয় ও লাভজনক প্লাটফর্ম হলো “অ্যামাজনের কিন্ডল ডিরেক্ট পাবলিশিং ই-বুক”।

৫. অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং মডেলএফিলিয়েট মার্কেটিং অনলাইনে বিজনেস করে আয়ের একটি সহজ ও লাভজনক উপায়।

অ্যামাজনের মতো বিখ্যাত অনলাইন স্টোরের অ্যাফিলিয়েট হয়ে Sell এর ওপর কমিশন নিয়ে ভাল টাকা রোজগার করা যেতে পারে।

আমাদের সাইটে ইতোপূর্বেই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করা যায় তার সঠিক গাইডলাইন দেয়া হয়েছে। আপনি চাইলে সেটিও পড়ে নিতে পারেন।

৬. ব্লগিং

বর্তমানে খুবই লাভজনক একটি অনলাইন ব্যবসা হচ্ছে Blogging. িমানুষ প্রতিদিন হাজার হাজার বিষয় নিয়ে সার্চ করছে Google এ। তাই ব্লগিংয়ের কেনো শেষ নেই। আপনি চাইলেই ঘরে বসে ব্লগিংয়ের মাধ্যমে ইনকাম করতে পারবেন। বেছে নিতে পারেন আমাদের শেয়ার করা জনপ্রিয় ব্লগিং আইডিয়ার কোনো একটি।

৭. ইউটিউব চ্যানেল

বর্তমানে স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে গৃহিণী,কর্মজীবী প্রায় সবাই ইউটিউব থেকে ইনকাম করায় বেশি আগ্রহী। যেকোনো বিষয়ের উপর ভিডিও বানিয়ে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে  অনেকে মোটা অঙ্কের টাকা ইনকাম করছেন এই ইউটিউবের মাধ্যমে। 

অনলাইন বিজনেস টিপস

আপনিও চাইলে যেকোনো বিষয়ের উপর হতে পারে ট্রাভেলিং, গেমিং, রান্নার রেসিপি কিংবা আপনার কোনো স্পেশাল ট্যালেন্ট এর উপর ভিডিও তৈরি করে আপনার YouTube channel টিতে আপলোড করতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে আপনার উপস্থাপনার দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।

যতো বেশি দর্শক হবে, আপনার ইনকামও ততো বেশি হবে। তাই ইউটউব সাবস্ক্রাইবারভিউ বাড়ানোর উপায় জেনে নিতে হবে।

৮. অনলাইন ফটো বিক্রি

আপনি কি একজন ফটোগ্রাফার? খুব ভালো ফটো তোলেন? তাহলে এটাকেই আপনার ব্যবসায় কাজে লাগিয়ে দেন। বর্তমানে মানুষ বিভিন্ন কাজে অনলাইন থেকে ছবি কিনে নিচ্ছেন প্রতিনিয়ত।

এমন কিছু সাইট রয়েছে যেগুলো আপনার তোলা ছবি কিনে বিক্রি করে। সেরকম কিছু সাইট হলো আইস্টক, ফটোড্যুন, শাটারস্টক ইত্যাদি যাদের মাধ্যমে  সরাসরি ফটো বিক্রি করতে পারবেন।

৯. কন্টেন্ট রাইটিং

কন্টেন্ট রাইটিং হতে পারে অনলাইন বিজনেস এর জন্য সেরা একটি আইডিয়া। আপনার যদি ভাষার উপর দক্ষতা থাকে তবে রাইটিং আপনার জন্য ভালো পেশা হতে পারে। খুব সহজ এবং সাবলীল ভাষায় লিখতে পারদর্শী হলে কন্টেন্ট রাইটিংকে আপনার ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিতে পারেন।

বাংলা এবং ইংরেজি উভয় ভাষায় আপনার দক্ষতা থাকলে খুব সহজেই আপনি অনেক টাকা ইনকাম করতে।

১০. কাস্টম ডিজাইন টি-শার্ট

নিত্য নতুন প্রমোশনাল ক্যাম্পেইনের মাঝে অন্যতম টি-শার্ট। সুন্দর টি-শার্ট ডিজাইন যেমন বিভিন্ন কোম্পানী ও এজেন্সির কাছে গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি বিভিন্ন গ্রুপ এবং হ্যাং-আউটেও এখন আবশ্যক। কোথাও গ্রুপ করে ঘুরতে গেলেই অবশ্যই আমাদের সবার একই ডিজাইনের টি-শার্ট চাই।

আপনার ডিজাইনিং সেন্স ভালো থাকলে শুরু করে দিতে পারেন টি-শার্ট ডিজাইন বিজনেস। এর পাশাপাশি বিভিন্ন স্পোর্টস টি-শার্ট ইম্পোর্ট করেও অনলাইনে বিক্রি করতে পারেন।

একটি ফেসবুক পেজ দিয়েই শুরু করে দিতে পারেন আপনার টি-শার্টের অনলাইন বিজনেস।

১১. সেকেন্ড-হ্যান্ড ডিভাইস

পুরাতন ডিভাইস ক্রয়-বিক্রয় করা দারুন একটি অনলাইন বিজনেস আইডিয়া হতে পারে। অনেকেই সখের বশে বিভিন্ন প্রোডাক্ট কিনে কিছুদিন পরই বিক্রি করে দেন। অন্যদিকে অনেকেই বাজেটের কারণে নতুন প্রোডাক্ট কিনতে পারেন না।

বাংলাদেশের সেরকম কোনো মিডিয়া নেই, যেখানে পুরাতন জিনিস বেচা কেনা করা যায়। আপনি এমন একটি বিশ্বস্ত মিডিয়া সৃষ্টি করার চেষ্টা করুন।

১২. সেকেন্ড হ্যান্ড বই বিক্রি

অনলাইনে কি ব্যবসা করা যায়বই আর মুভি! দ্বিতীয়বার নিশ্চয়ই পড়তে বা দেখতে ইচ্ছে করেনা। পড়া শেষে যদি বইটিকে বোঝা না বানিয়ে ভালো দামে বিক্রি করে দেওয়া যায় তাহলে কিন্তু খারাপ হয় না।

অন্যদিকে, প্রয়োজনীয় বই যদি কিছুটা কম দামে পাওয়া যায়, তবে ক্রেতার জন্যও সুবিধা। তাই, আপনিই না হয় এগিয়ে আসুন! আমাদেরও সুবিধা হলো, আপনারও ব্যবসা দাড়িয়ে গেল।

১৩. মেডিকেল রিলেটেড প্রোডাক্ট

মানুষের জীবনে ঔষুধের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে নিশ্চয়ই আপনাকে বুঝানোর দরকার নেই। প্রয়োজনীয় ঔষুধের পাশাপাশি আরো বিভিন্ন মেডিকেল রিলেটেড প্রোডাক্ট এর চাহিদা রয়েছে, যা অনলাইনে এখনো পর্যাপ্ত নয়। তাছাড়া, এমন অনেক ঔষধ রয়েছে যা দেশে পাওয়া যায় না।

এসব সমস্যার সমাধান হিসেবে শুরু করে দিতে পারেন একটি অনলাইন মেডিকেল শপ।

আরো পড়ুন:  ফেসবুকে ব্যবসা করার নিয়ম | ফেসবুকে অনলাইন ব্যবসা

১৪. ডিজিটাল প্রোডাক্ট বিক্রি

বর্তমানে অনলাইন বিজনেস বৃদ্ধির সাথে সাথে অনলাইন স্টোর, ই-কমার্স শপ এর জন্য ওয়েবসাইটের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর এসবের জন্য প্রয়োজন থিম, প্লাগইন, টুলস যেমন কিওয়ার্ড রিসার্চ টুলস, গ্রামার চেকার, ইত্যাদি।

আপনি চাইলে এসব প্রয়োজনীয় টুলসগুলোর এজেন্সি লাইসেন্স কিনে কম দামে বিক্রি করতে পারবেন।

১৫. ডোমেইন হোস্টিং বিজনেস

ওয়েবসাইট অনলাইনে নিয়ে আসার জন্য থিম, প্লাগইনের চেয়েও ডোমেইন ও হোস্টিং বেশি জরুরী। দেশের সকলের কাছে বিশেষ করে যারা ওয়েবসাইট শুরু করতে চান, তাদের কাছে মাস্টার কার্ড, ভিসা কার্ড থাকে না। তাই পেমেন্ট করা বেশ ঝামেলা হয়ে যায়।

এই সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে আপনি বড় বড় কোম্পানীর থেকে রিসেলিং প্যাকেজ কিনে নিয়ে বিক্রি করতে পারেন, যেখানে বিকাশ, নগদরকেট একাউন্টের মাধ্যমে পেমেন্ট করা যাবে।

১৬. পডকাস্টিং

বাংলাদেশের মার্কেটে নতুন একটি নাম। পডকাস্ট হলো অনলাইনে পাওয়া যায় এমন অডিও ভার্সন। আপনি যদি মোবাইলে রেকর্ড করা ফাইল অনলাইনে ছেড়ে দেন, তাহলেও এটিকে পডকাস্ট বলা হবে।

তবে প্রফেশনালি পডকাস্ট কোনো নির্দিষ্ট টপিক বা সিরিজ হিসেবে প্রকাশ করা হয়। যেমন: কোনো রোমাঞ্চকর উপন্যাস, লোমহর্ষক গল্প,  নির্দিষ্ট টপিকের উপর বিস্তারিত আলোচনা, ইত্যাদি।

এই কাজ তুলনামূলক সহজ তবে সবার জন্য নয়। কন্টেন্ট তৈরি করার জন্য সৃজনশীলতা এবং পাঠক আকৃষ্ট করতে দূর্দান্ত একটি ভয়েস প্রয়োজন।

রেকর্ড করার জন্য দারুন একটি মাইক্রোফোন, অডিও এডিটর এবং একটি কম্পিউটার বা মোবাইল দরকার হবে।

কিভাবে পডকাস্ট তৈরি করে আয় করা যায়, সেবিষয়ে বিস্তারিত জেনে নিন।

১৭. ট্রান্সক্রাইবিং

অডিও বা ভিডিও ফাইলের অডিও শুনে শুনে লিখিত কন্টেন্ট তৈরি করার প্রক্রিয়াই ট্রান্সক্রাইবিং। বর্তমানে ইংলিশের পাশাপাশি বাংলাতেও এই কাজটির চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

মূলত, কোনো গেস্ট এর বক্তব্য কিংবা গুরুত্বপূর্ণ কোনো আলোচনার রেকর্ডিংকে লিখিত রূপে নিয়ে আসা দরকার হয়।

ইংরেজি দক্ষতা এবং লেখায় ভালো স্পিড থাকলে ঘরে বসেই এই অনলাইন বিজনেস আইডিয়া নিয়ে কাজ শুরু করে দিতে পারেন।

১৮. ট্রান্সলেটিং

ট্রান্সক্রাইবিং এর পাশাপাশি আরো একটি ঘরে বসে কাজ করা যায় এমন অনলাইন বিজনেস আইডিয়া। বাংলার পাশাপাশি অন্য কোনো জনপ্রিয় ভাষায় দক্ষতা থাকলে যেকোনো ফ্রিল্যান্সিং সাইট এবং স্যোশাল মিডিয়ায় ট্রান্সলেটিং এর কাজ পেয়ে যাবেন।

১৯.  এসইও এক্সপার্ট

কোনো ওয়েবসাইট কিংবা ব্লগ শুধুমাত্র অনলাইনে নিয়ে আসলেই হবেনা, দরকার হাজার হাজার, লাখ লাখ ট্রাফিক। ট্রাফিক কোথা থেকে আসবে? নিশ্চয়ই সার্চ ইঞ্জিন!

কিন্তু সার্চ ইঞ্জিনে যদি পজিশনে না আসতে পারেন, তবে ভিজিটর কিভাবে জানবে?

যি, একজন এসইও এক্সপার্ট এই পজিশনে নিয়ে আসার কাজই করে থাকেন। আপনি যদি শিখতে চান, তবে প্রাথমিকভাবে ফ্রি এসইও কোর্স দিয়ে শুরু করতে পারেন।

২০. কেক বিক্রি

বর্তমানে কেক খুব গুরুত্বপূর্ণ কনফেকশনারি আইটেম। এখন আর কেক হলেই চলেনা, সাথে মনের মতো ডিজাইনও চাই।

অনলাইন বিজনেসআপনার লোকাল এরিয়ার মানুষের মনের চাহিদা মেটাতে শুরু করে দিতে পারেন একটি অনলাইনে কেক সেলিং শপ। খুব বেশি খরচ হবে না, দরকার হবেনা কোনো ওয়েবসাইট। একটি ফেসবুক বিজনেস পেজই যথেষ্ট।

২১. ফটো এডিটিং

অনলাইন বিজনেস আইডিয়া গুলোর মাঝে এটি বেশ নতুন। তবে এর ভবিষ্যত বেশ ভালো। মানুষ অফলাইনে কাজের চেয়ে অনলাইনে বেশি কম্ফোর্টেবল।

বিভিন্ন ব্লগ, ইউটিউব, ই-বুকের জন্য ফিচার ফটো, থাম্বনেইল ও আকর্ষনীয় কভার প্রতিনিয়ত দরকার হচ্ছে। আর এই কাজগুলো করছেন বেশিরভাগ ফ্রিল্যান্স ফটো এডিটর

পার্সনাল ক্লায়েন্ট এর পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং সাইটেও কাজ পাওয়া যায়। তাছাড়া, ফটো এডিট করে স্টক ফটো সাইটে আপলোড করেও ইনকাম করার সুযোগ রয়েছে।

২২. ভিডিও এডিটিং

ফটো এডিটিং এর পাশাপাশি ভিডিও এডিটরদের চাহিদা আরো দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই অনলাইন বিজনেস আইডিয়া নিয়েও ঘরে বসে কাজ করতে পারবেন।

ফটো এডিটরদের মতো পার্সোনাল ক্লায়েন্ট, ফ্রিল্যান্সিং জব কিংবা স্টক ভিডিও আপলোডিং সাইটে আপলোড করে ইনকাম করতে পারবেন।

২৩. সিগনেচার প্রোডাক্ট বিক্রি

সিগনেচার প্রোডাক্ট বলতে কোনো এলাকা বা কোম্পানীর সেরা প্রোডাক্ট, অর্থাৎ যে প্রোডাক্টের জন্য বিখ্যাত। যেমন: দই বললেই বগুড়ার নাম আসে, রসমালাই এর কথা আসলেই কুমিল্লার কথা মনে হয়, কিংবা চাপাইনবাবগঞ্জ এর আম।

আপনি যে এলাকায় থাকেন, সেখানেও নিশ্চয়েই বিখ্যাত কিছু রয়েছে, যা সারাদেশের মানুষের কাছে চাহিদা রয়েছে।

এমন কিছু প্রোডাক্ট নিয়ে অনলাইন ব্যবসা শুরু করে দিলে আর চিন্তা করতে হবেনা। তবে হ্যা, মানে যেন কোনো কম্প্রোমাইজ না হয়।

২৪. প্রাকৃতিক বিউটি প্রোডাক্ট

মানুষ এখন সচেতন হচ্ছে। কৃত্রিম বিউটি প্রোডাক্টের ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে জানছে এবং ব্যবহারে নিরুৎসাহিত হচ্ছে।

পাশাপাশি প্রাকৃতিক বিউটি প্রোডাক্ট এর উপর আকর্ষিত হচ্ছে। তবে প্রাকৃতিকভাবে বিভিন্ন ফেসিয়াল প্যাক বা ট্রিটমেন্ট ক্রিম বানানোর ঝামেলাও অনেকে নিতে চান না।

তাদেরকে সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে নিয়ে আসুন একটি অনলাইন ন্যাচারাল বিউটি ট্রিটমেন্ট প্রোডাক্ট শপ।

২৫.  ভয়েস ওভার আর্টিস্ট

পডকাস্ট, ভিডিও কিংবা অডিও সব ক্ষেত্রেই একজন ভয়েস আর্টিস প্রয়োজন হয়। আপনার সুন্দর ভয়েসের পাশাপাশি উচ্চারণ যদি শুদ্ধ হয়, তবে হয়ে যেতে পারেন একজন সফল ভয়েস ওভার আর্টিস্ট।

আরো পড়ুন:  ইকো প্রিন্ট টিউটোরিয়াল : প্রাকৃতিকভাবে কাপড় ও কাগজ নকশা করার উপায়

২৬. অনলাইন টিউটর

যারা টিউশনি করতেন করোনাকালে প্রায় সবাই অনলাইন টিউটর বনেই গেছেন। কারণ বাড়ি বাড়ি গিয়ে তো এই সময়ে পড়ানো সম্ভব হয়নি।

আপনার এই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে অনলাইনে টিউটর হিসেবে প্রফেশনালি কাজ শুরু করতে পারেন। এক্ষেত্রে ফেসবুক গ্রুপ, পেজের পাশাপাশি ওয়েবসাইট থাকলে ভালো হবে। যেখানে ছাত্র-ছাত্রীরা মাসিক সাবস্ক্রিপশনের বিনিময়ে ক্লাস লিংক পেয়ে যাবে।

পাশাপাশি বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করে নেওয়ার জন্য সারাদিনে একটি সেশন রাখবেন, যেখানে স্টুডেন্ট তার সমস্যা নিয়ে আপনার সাথে সরাসরি কথা বলতে পারবে।

২৭. হাতের কাজ

আপনি কি পাঞ্জাবি কিংবা শাড়ির উপর ভালো কাজ করতে পারেন। তাহলে কম কাজ করা পাঞ্জাবি বা শাড়ি কিনে এর উপর কাজ করে আকর্ষনীয় করে তুলুন এবং অধিক দমে বিক্রি করুন।

এছাড়া হাতের কাজ দিয়ে অনেক সৌখিন জিনিস বানানো যায়, আপনিও এমন কিছু পারলে চেষ্টা করে দেখতে পারেন।

২৮. ডায়েট প্লানার

বর্তমানে মানুষ অনেক বেশি স্বাস্থ্য সচেতন। তবে সঠিক গাইডলাইনের অভাবে নিজের স্বাস্থ্য নষ্ট করে ফেলছেন এমন মানুষের সংখ্যাও কম নয়। তাই এই অনলাইন বিজনেস আইডিয়া টি অনেক মানুষের জন্য স্বাস্থ্য ঠিক করতে সহায়ক হতে পারে।

ওজন বেশি এমন মানুষ ওজন কমাতে চায়, ওজন যাদের কম তারা বাড়াতে চায়। কিন্তু এজন্য একজন ডায়েট প্লানার দরকার, যা বাংলাদেশে অপ্রতুল, বিশেষ করে অনলাইনে।

অনলাইন বিজনেস কিভাবে শুরু করব?

বর্তমানে ইন্টারনেটের সহজলভ্যতার জন্য অনলাইন বিজনেস শুরু করা বেশ সহজ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। যেকেউ খুব সহজেই কিছু ধাপ অনুসরণ করে অনলাইন ব্যবসা শুরু করে দিতে পারেন।

তবে অনলাইন বিজনেসের মূল টার্গেট যেহেতু কাঙ্খিত গ্র্রাহক অবধি পণ্য বা সেবা পৌঁছানো, তাই অনলাইন ব্যবসা শুরু করার জন্য এই ধাপটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অবশ্য, বর্তমানে ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা অনলাইন ব্যবসাকে এতটাই সহজ করেছে যে, খুব সহজেই কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছানো যায়।

আপনি যদি একজন নতুন ব্যবসায়ী হোন কিংবা ব্যবস্থা শুরু করতে চান তবে, আপনাকে প্রথমে কিভাবে বিজনেস শুরু করবেন সে বিষয়ে ভালো জ্ঞান রাখতে হবে। অনলাইন ব্যবসা আইডিয়া জেনে নেয়ার পূর্বে কিভাবে শুরু করবেন অনলাইন বিজনেস সে বিষয়ে জেনে নেয়া উচিত।

অনলাইন বিজনেস শুরু করার জন্য যা যা করতে হবে:

১. বিজনেস ওয়েবসাইট তৈরি

বর্তমানে মানুষ অনলাইনে কেনা-কাটায় বেশি আগ্রহী। এখন কারো কোনো পণ্য বা সেবার প্রয়োজন পরলে প্রথমেই খোঁজ নেয় অনলাইনে। তাই অনলাইনে ব্যবসা করতে হলে নিজের একটা বিজনেস ওয়েবসাইট অর্থাৎ E-commerce website থাকা দরকার। বর্তমানে  E-commerce কেনা-বেচার জন্য খুবই জনপ্রিয় এবং লাভজনক প্লাটফর্ম।

তবে আপনার যদি নিজের কোনো E-commerce website না থাকে কিংবা আপনি যদি এটি তৈরি করতে ইচ্ছুক না হোন তবে বিভিন্ন E-commerce সাইটে আপনি আপনার product বিক্রি করতে পারবেন। যেমন: ফ্লিপকার্ট, অ্যামাজন, e-Bay, দাড়াজ, ইত্যাদি ই-কমার্স সাইটে যুক্ত হয়ে ব্যবহার করে আপনি খুব সহজেই আপনার পণ্য বিক্রি করতে পারবেন।

২. সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজনেস পেজ তৈরি

বর্তমানে এমন কিছু সোশ্যাল মিডিয়া রয়েছে যেগুলো খুবই জনপ্রিয় এবং বিশ্বের প্রায় সব মানুষই কমবেশি এসব media তে যুক্ত। যেমন; Facebook, Twitter, Instagram, Telegram ইত্যাদি এদের কথা না বললেই নয়।

এই সোশ্যাল মিডিয়াগুলো বর্তমানে এত বেশি ব্যবহৃত হয় যে, আপনি চাইলেই বিশ্বের যেকোনো প্রান্তের মানুষের কাছে নিজের পণ্য বা সেবা পৌঁছে দিতে পারবেন।

আপনার যদি নিজস্ব কোনো ওয়েবসাইট না থাকে, তাহলে আমি সাজেস্ট করবো সোশ্যাল মিডিয়াগুলোর মাধ্যমে আপনার ব্যবসা শুরু করার জন্য। বর্তমানে অনলাইন ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়াকেই কাজে লাগাচ্ছেন অনেকে। এমনকি ওয়েবসাইট থাকার পরও আপনার শক্তিশালী বিজনেস সোশ্যাল হ্যান্ডেল থাকতে হবে।

৩. অনলাইন বিজনেস অ্যাপ তৈরি

আপনারা নিশ্চয়ই “Food panda” এর নাম শুনেছেন? হ্যাঁ, না শুনার কথাও নয়। এখন কারো কোনো কিছু খাওয়ার ইচ্ছে হলে restaurant যাওয়ার কথা না ভেবেই সোজা চলে যান মোবাইলের Food panda apps টিতে, আর order করেন নিজের পছন্দমতো খাবার। ব্যস কিছুক্ষণের মধ্যেই বাসায় পৌঁছে যায় খাবার।

ঠিক এমনই আরো কিছু Unique apps রয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে মানুষ তাদের product বা service বিক্রি করে ইনকাম করছেন অনলাইনে।

আপনার মাথায়ও যদি কোনো অনলাইন বিজনেস এর জন্য ইউনিক আইডিয়া থাকে তাহলে অ্যাপ তৈরি করে আপনার ব্যবসা শুরু করে দিতেই পারেন।

৪. ব্লগ ও ইউটউব চ্যানেল

আপনি যদি কোনো টাকা ব্যয় না করেই অনলাইন বিজনেস করার চিন্তা করে থাকেন, তবে ব্লগিং বা ইউটিউব চ্যানেলের কথা ভেবে দেখতেই পারেন।

অনলাইন ব্যবসার আইডিয়া

বর্তমানে এদের কদরও খুব বেশি। ব্লগিং এবং ইউটিউব ভিডিওতে গুগল এডসেন্স অনুমোদন নিয়ে অনেকে লাখ লাখ টাকা ইনকাম করছেন।

আপনিও যদি কোনো প্রাথমিক বিনিয়োগ ছাড়াই অনলাইন বিজনেস শুরু করার কথা চিন্তা করে থাকেন তবে, ব্লগিং ও ইউটিউব হতে পারে আপনার ব্যবসা শুরু করার সঠিক মাধ্যম।

অনলাইন বিজনেস আইডিয়া নিয়ে শেষ কথা

অনলাইন বিজনেস বর্তমানে সবার তুঙ্গে অবস্থান করছে। এটি একদিকে যেমন লাভজনক, অন্যদিকে খুব একটা বিনিয়োগেরও প্রয়োজন পরে না এতে। যেকেউ নিজ দক্ষতা আর একটু সময় দিলেই এই অনলাইন বিজনেস থেকে ইনকাম করতে পারবে ঘরে বসেই।

তবে সেক্ষেত্রে ব্যবসা শুরু করার উপায় জেনে নিয়ে কোন বিজনেসটা তার জন্য উপযুক্ত সেটা যাচাই-বাছাই করে নিতে হবে আগে। যেহেতু, অনলাইনে অনেক ধরনের বিজনেস করার অপশন আছে, তাই কেউ অনলাইন ব্যবসা শুরু করার পূর্বে তার জন্য উপযুক্ত কোনটি, সেটা আগেই নির্ধারণ করে নিতে হবে।

আমরা এই আর্টিকেল কিভাবে অনলাইন বিজনেস শুরু করবেন এবং কিছু টপ অনলাইন বিজনেস আইডিয়া তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করছি এটি আপনাদের অনলাইন ব্যবসার ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও কাজে আসবে।

উপর্যুক্ত অনলাইন বিজনেস আইডিয়াগুলোর মধ্যে আপনি কোনটি করতে ইচ্ছুক? আমাদের জানাতে ভুলবেন না যেনো!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top