সেরা ১০টি অনলাইন জব করে আয় করুন ঘরে বসে (২০২৩)

অনলাইন জব করে আয়

অনলাইন জব : আপনি ছাত্র, গৃহীনি, বা কর্মজীবি যেই হোন না কেন, মাস শেষে ঘরে বসে প্রতিদিন ৩-৪ ঘন্টা ব্যায় করে অনলাইনে জব করতে নিশ্চয়ই অপছন্দ করবেন না। আর যদি মাস শেষে অনলাইন জব করে ভালো এমাউন্ট আয় হয়, তাহলে তো কোনো কথাই নেই।

  • বাংলাদেশ থেকে অনলাইন জব করা যায়?
  • অনলাইন জব কিভাবে করবো?
  • বাংলাদেশী অনলাইন জব কোনগুলো?
  • অনলাইন জব কি ঘরে বসে করা যায়?

উপরের যেকোনো একটি প্রশ্ন যদি আপনার মনেও থেকে থাকে তবে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। আশা করি অনলাইন জব নিয়ে সবগুলো প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন।

অনলাইন জব টার্মটা আমাদের সবার কাছে পরিচিত মনে হলেও বাংলাদেশী অনলাইন জব কিংবা বাংলাদেশ থেকে যে অনলাইন জব করা সম্ভব, এটা নিয়ে অনেকেই সন্দিহান।

দুঃখজনকভাবে হলেও কথাটা এখনো শতভাগ মিথ্যা নয়। এর পিছনে মূল কারণ হিসেবে পেমেন্ট গেটওয়ে সিস্টেমকেই দায়ী মনে হয়। কারণ, অনলাইনে জব দেয় এমন আন্তর্জাতিক সাইটের সহজ কোনো পেমেন্ট সিস্টেমই আমাদের দেশে প্রচলিত নেই।

আরেকটি সমস্যা আমাদের নিজেদের। সবাই শুধু অনলাইন জব বিকাশ পেমেন্ট দেয়, এমন কাজ চাই। আবার অন্য একদল অনলাইন জব মোবাইল দিয়ে করতে চান।কিন্তু, যারা জব দিচ্ছে তারা তো নিজেকে মেরে আপনাকে কাজ দিবেনা। তারাও আপনার মতোই সুবিধা, এবং কাজের কোয়ালিটি দেখবে, যেটা মোবাইলে করলে বেশিরভাগ সময়ই পাওয়া যায় না।

সে যাহোক, ভালো খবর হলো এখন বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সিং সাইট রয়েছে, পেপালের পাশাপাশি আরো অনেক পেমেন্ট সিস্টেমও অন্যান্য সাইটে যুক্ত হয়েছে। সবমিলিয়ে বাংলাদেশ থেকেও এখন অনলাইন জব করে আয় করা সম্ভব।

অনলাইন জব কি | What is Online Job in Bangla?

অফিসে না গিয়ে অন্য যেকোনো স্থানে বসে কোনো কোম্পানী কিংবা কোনো ব্যক্তির সাথে কাজ করাকে অনলাইন জব বা রিমোট জব বলা হয়।

অনলাইন জব বিভিন্ন রকম হতে পারে। যেমন:

  • ঘন্টা ভিত্তিক কাজ
  • প্রজেক্ট ভিত্তিক কিংবা
  • মাসিক চুক্তি

এছাড়াও কোনো কোম্পানী বা ব্যক্তির অধীনে না থেকেও অনলাইনে কাজ করা যায়।

অফলাইন এবং অনলাইন জব এর মাঝে পার্থক্য

বেশি পার্থক্য উল্লেখ করবোনা, কারণ বেশিরভাগই আপনি জানেন। কিন্তু যারা এখনো অনলাইন মার্কেটে প্রবেশ করেননি তারা যেটি প্রথমে জানেন না সেটি একটু বলি।

অফলাইনে আপনার সিভির ওয়েট যত বেশিই হোক না কেন, আপনি খুব বেশি প্রমোশন পাবেন না। অর্থাৎ মাস শেষে মোটামুটি একই পরিমাণ টাকা পকেটে আসবে। তবে অফলাইনে জব পাওয়ার সাথে সাথেই মোটামুটি ভালো একটা এমাউন্ট হাতে আসা শুরু করে।

কিন্তু, অনলাইন জব পাওয়ার পর পরই আপনি ভালো টাকা কামাবেন, কিংবা প্রতিনিয়ত জব পাবেন এমনটা আশা না করাই ভালো। তবে আপনার প্রোফাইল রেটিং বৃদ্ধির সাথে সাথে ইনকামও সমানুপাতিকহারে বৃদ্ধি পেতে থাকবে।

তাই অনলাইনে সাফল্য পেতে প্রচুর ধৈর্য্য থাকতে হবে।

অনলাইন জব করতে কি কি প্রয়োজন?

  • একটি কম্পিউটার (কিছু অনলাইন জব মোবাইল দিয়েও করা যায়)
  • ইন্টারনেট কানেকশান
  • কম্পিউটার সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা
  • ইংরেজি নলেজ (না জানলেও কাজ করা সম্ভব)
  • কমিউনিকেশান স্কিল
  • সফট স্কিল

মোটামুটি ভালো টাকা ইনকাম করা যাবে এমন অনলাইন জব করার জন্য এই কয়টি জিনিস থাকলেই হবে। ইন্টারনেট কানেকশান যেন বিদ্যুৎ চলে গেলেও বন্ধ না হয়, সেজন্য ইউপিএস ব্যবহার করা জরুরী।

আপনার দক্ষতা, স্কিল এবং রিসোর্স যত বেশি থাকবে, আপনার হাতে ততো বেশি কাজ আসবে, এবং উপার্জনও বাড়বে।

সেরা অনলাইন জব আইডিয়া | Online Job in Bangladesh

আমাদের আলোচনায় আমরা চেষ্টা করেছি সকলেই করতে পারবেন এমন কাজ খুঁজে বের করার। কিভাবে কাজটি খুঁজতে হবে বা অ্যাপ্লাই করতে হবে সেসম্পর্কেও সংক্ষেপে বলা হয়েছে।

যাদের পেমেন্ট সিস্টেম নিয়ে সমস্যা, কিংবা কম্পিউটার নেই, তাদের জন্যও আমরা এখানে কিছু ঘরে বসে করা যাবে এমন অনলাইন জব নিয়ে আলোচনা করেছি। চলুন তাহলে ১০টি সেরা online জব সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

আরো পড়ুন:  ব্লগে ভিজিটর ধরে রাখার উপায় খুঁজছেন? ১০টি কৌশল জেনে নিন

১। অনলাইন ব্লগিং জব

ব্লগিং বর্তমানে ফুল টাইম প্রফেশন হিসেবে যথেষ্ট লাভজনক। অনলাইনের বিস্তৃতি বাড়ার সাথে সাথে ব্লগিং করে ইনকামের উপায়ও প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলায় ব্লগিং করেও অনেক ছাত্র-ছাত্রী, গৃহিনী কিংবা পার্ট টাইম অনলাইন জব খুঁজছিলেন এমন মানুষেরা  প্রতিমাসে ১০ থেকে ৪০ হাজার বা তার বেশি ইনকাম করছেন। ইংরেজিতে পারদর্শী হলে যেটি ৬ডিজিট করা সম্ভব।

ব্লগিং আসলে নিজের একটি ওয়েবসাইট তৈরি এবং সেখানে নিজের প্রতিদিনের অভিজ্ঞতা, টিপস এন্ড ট্রিক্স, কিংবা নিজের  মতামত ও জ্ঞান শেয়ার করা। কিংবা নির্দিষ্ট কোনো লাভজনক ব্লগিং টপিক সিলেক্ট করে প্রতিনিয়ত লিখে যাওয়া।

পাঠকরা আপনার ব্লগ ভিজিট করার জন্য আপনি ব্লগ থেকে বিভিন্ন উপায়ে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

আপনার যদি প্রচুর পড়াশোনা করার ইচ্ছা থাকে এবং অন্যদের সাথে নলেজ শেয়ার করতে আনন্দ পান, তবে পার্টটাইম কিংবা ফুল টাইম প্রফেশন হিসেবে ব্লগিং বেছে নিতে পারেন।

পার্ট টাইম হিসেবে বাংলায় ব্লগিং করলে ইনকাম জেনারেট  করতে অনেক সময় লেগে যাবে যদি না প্রচুর ভিজিটর নিয়ে আসতে পারেন। কম কাজ করে বেশি উপার্জন করতে চাইলে ইংরেজিতে ব্লগিং করুন।

ব্লগিং শুরু করতে চাইলে আপনাকে যা যা জানতে হবে, এবং কিভাবে ব্লগে সফলতা পওয়া যায়, তা জানতে আমাদের ফ্রি ব্লগিং টিউটোরিয়ালটি পড়ে নিন।

২। অনলাইন সার্ভে জব

আপনি কি অনলাইন জব মোবাইল দিয়ে করতে চান? তাহলে আপনার জন্য সেরা একটি অপশন হতে পারে অনলাইন সার্ভে জব। অনলাইন সার্ভে জব পার্ট টাইম কিংবা ফ্রি টাইমে অনেক বেশি রিলাক্স নিয়ে করে আয় করতে পারবেন।

আমাদের সবকিছু অনলাইন ভিত্তিক হওয়ায় প্রোডাক্ট ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানা যেকোনো কোম্পানীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

তাছাড়া নতুন কোনো কোম্পানী কিংবা প্রোডাক্ট বাজারে নিয়ে আসতে হলেও বাজারের চাহিদা সম্পর্কে সবচেয়ে পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যায় সার্ভে করে।

অনলাইন সার্ভে জব

কিন্তু কারোই এতো সময় নেই যে, ফ্রিতে তাদের সাথে অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে যাবে। তাই তাদের প্রয়োজনীয় ইনফরমেশন নেওয়ার জন্য আপনাকে টাকা দিবে, এর বিনিময়ে আপনাকে তথ্য দিতে হবে।

সার্ভে জব করে প্রতিদিন ৩-৪ ঘন্টা সময় দিয়ে প্রতিমাসে গড়ে ৮হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা ইনকাম করা যায়।

অনলাইন সার্ভে জব করে টাকা ইনকাম করার সাইট এবং বাংলাদেশ থেকে কিভাবে আয় করা যায় জানতে হলে আমাদের গাইডটি পড়ে নিন।

৩। অনলাইন টিউটর জব

যেমনটা আমরা পূর্বেও বলেছি, প্রতিনিয়ত সবকিছু অনলাইনে চলে আসছে। প্রতিদিনই অনলাইনে নতুন নতুন জব অফার করা হচ্ছে। সেরকমই নতুন একটি জব অনলাইন শিক্ষকতা।

করোনার সময়ে যখন ছাত্রদের পড়াশোনা স্থবির হয়ে গিয়েছিলো, তখন পড়াশোনা করার একমাত্র উপায় ছিলো অনলাইন, এবং সবচেয়ে বড় Role পালন করেছে অনলাইন কোর্স এবং টিউটর সাইটগুলো।

অনলাইন শিক্ষকতার জব পাওয়ার জন্য ইংরেজিতে দক্ষতা ভালো থাকলে ইন্টারন্যাশনাল মার্কেট থেকে ছাত্র পেতে পারেন, যেখানে ইনকাম অনেক বেশি। তবে বাংলায় পড়াতে চাইলেও সমস্যা নেই। bdjobs.com এ নজর রাখতে পারেন। তবে সবচেয়ে ইফেক্টিভ উপায় ফেসবুক জব এবং ফেসবুক টিউটর গ্রুপগুলো। আরো কিছু অনলাইন টিউটরিং জব পাওয়ার সাইট হলো,

৪। কনটেন্ট রাইটিং অনলাইন জব

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, ব্লগ, ইউটিউব, নিউজপেপারের জন্য প্রতিনিয়ত কনটেন্ট প্রয়োজন হয়। এছাড়াও ফেসবুক বা অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ায় মার্কেটিং করার জন্য কনটেন্ট রাইটার দরকার হয়।

আপনার যদি লেখালেখির শখ থাকে তবে এটাকেই অনলাইনে জব করার জন্য কাজে লাগাতে পারেন। তাছাড়া online job টি করার জন্য কম্পিউটার দরকার নেই। এই অনলাইন জব মোবাইল দিয়েই করতে পারবেন।

১) ইংরেজি আর্টিকেল

যদি অনলাইনে কোনো ব্লগে ইংরেজি আর্টিকেল পাবলিশ করে আয় করতে চান তবে, প্রতিটি পাবলিশড আর্টিকেলের জন্য ২৫ থেকে ৫০০ ডলার বা তারও বেশি পাওয়া যাবে। ইংরেজি আর্টিকেলে লেখার জন্য ২টি প্লাটফর্ম বেছে নিতে পারেন।

তবে শুরুর দিকে আন্তর্জাতিক ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটে কাজ পাওয়া কঠিন হলে বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সিং মার্কেট, ফেসবুক জব, লিঙ্কডইন এবং ফেসবুকে কনটেন্ট রাইটার গ্রুপগুলোতে যোগ দিতে পারেন।

এছাড়াও careerjet, onlinejobbd এর মতো জব সাইটগুলোতেও কনটেন্ট রাইটিং জব পাওয়া যায়।

২) বাংলা আর্টিকেল

পিওর বাংলাদেশী অনলাইন জব যারা খুঁজছেন তাদের জন্য এই জব। বাংলা আর্টিকেল লেখার জন্য আমাদের দেশের বিভিন্ন পত্রিকায় লিখে আয় করতে পারেন, এজন্য তাদের ওয়েবসাইটের যোগাযোগ অপশন থেকে মেইল এড্রেস সংগ্রহ করে লেখা জমা দিতে হবে।

আরো পড়ুন:  ১০টি অনলাইনে আয় করার সহজ উপায় ২০২৩

তবে এটা  অনেকের জন্য বেশ জটিল বা কঠিন মনে হলে যেসব জনপ্রিয় বাংলায় ব্লগ আছে, যাদের মধ্যে অনেক ব্লগই তাদের সাইটে আর্টিকেল লেখার জন্য পেমেন্ট করে। এইধরনের ৭টি বিশ্বস্ত আর্টিকেলে লেখার ব্লগ সাইটে পার্টটাইম অনলাইন জব করে বিকাশ পেমেন্ট নিতে পারেন। এছাড়াও ফেসবুক জব, বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সিং সাইট, এবং ফেসবুক গ্রুপ থেকে কাজ পাবেন।

এমন কিছু কনটেন্ট রাইটিং গ্রুপ হলো:

  1. Freelance writers, Bangladesh
  2. Content Writer Group BD, ইত্যাদি

এসব গ্রুপে ট্রান্সলেশন, ট্রান্সক্রাইব, অ্যাফিলিয়েট কনটেন্টসহ সবধরনের বাংলা এবং ইংরেজি কনটেন্ট রাইটিং জব অফার করা হয়।

ক্লায়েন্ট আপনার লেখা আর্টিকেল কেমন, তা জানতে নিশ্চিতভাবেই আপনার কাছে আগের লেখা কোনো আর্টিকেলের লিঙ্ক চাইবে।

টিপস: কাজ পাওয়ার জন্য একটি ফ্রি ব্লগ বানিয়ে সেখানে নিজের লেখা সুন্দর কিছু ডেমো কনটেন্ট পাবলিশ করবেন। তবে ভালো হয় যদি জনপ্রিয় ব্লগে নিজের লেখা পাবলিশ করা যায় (ফ্রিতে হলেও)। অবশ্যই আপনার ছবি এবং নামসহ আর্টিকেল পাবলিশ করতে হবে।

৫। ফটোগ্রাফি

ছবি তুলতে নিশ্চয়ই অপছন্দ না আপনার! কেমন হয় যদি আপনার মোবাইলের স্টোরেজ নষ্ট না করে ছবিগুলো একটা ক্লাউড স্টোরেজে রেখে দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়? আপনার ছবির রেজ্যুলেশন নষ্ট না করে তারা খুব যত্ন সহকারে রেখে দিবে। আবার এজন্য আপনাকে পেমেন্টও করা হবে? মজার না!

হ্যা, এটা সত্যি যে ছবি তোলা এখন আর শুধু সখের মধ্যে আটকে নেই। এটা এখন খুব বড় ইনকাম সোর্স এ কনভার্ট হয়েছে।

অনলাইনে এখন অনেক ছবি বিক্রি করার সাইট রয়েছে যেখানে আপনি চাইলেই ছবি বিক্রি করে আয় করতে পারেন। এমন কিছু জনপ্রিয় সাইট shutterstock, adobestock, istock, ইত্যাদি।

আপনি কি ভাবছেন এই অনলাইন জব মোবাইল দিয়ে করা যাবেনা? উহু, ভুল ভাবছেন। এখন বেশিরভাগ ছবি বিক্রি করার সাইটই মোবাইলে তোলা ফটো নেয়, তবে রেজ্যুলেশন হাই হতে হবে। তাছাড়া শুধুমাত্র মোবাইলে ক্যাপচার করা ছবি বিক্রি করার অ্যাপস তো রয়েছেই।

৬। অনলাইনে পডকাস্ট বানানোর জব

আমরা এখন কতটা ব্যস্ত চিন্তা করেছেন একবার? এখন আমাদের ভালো লাগার বই তো দূরের কথা, সংবাদপত্র পড়ারও সময় নেই, টিভির সামনে বসে দেখার মতো সুযোগও নেই। এর সমাধান কি?

ইয়েস! রেডিওতে ফেরৎ যাওয়া। কিন্তু রেডিওতে না হয় সংবাদ পাওয়া গেল, অন্য বিনোদন কিভাবে? বই পড়ে কে শোনাবে! কিংবা অন্য কোনো জনপ্রিয় শো কানে হেডফোন লাগিয়ে শুনতে শুনতে যদি কাজ করা যায়, তাহলে আর একটু ভালো হয় কি না!

এই জায়গাতেই প্রতিনিয়ত পডকাস্ট এর চাহিদা বেড়ে যাচ্ছে।

পডকাস্ট-আর্টিস্ট-জব

Podcast ২০০৪ সালের দিকে শুরু হয়, ২০০৮ সালে এসে হঠাৎ অডিয়েন্স কমে যায় কিন্তু তারপর থেকে শুধু বৃদ্ধিই পাচ্ছে। ২০০৯ সালে USA তে ২৫ মিলিয়ন অডিয়েন্স ছিলো, ২০১৪ সালে পডকাস্ট অডিয়েন্স ৭৫ মিলিয়নে পৌছায়।

তাই অনলাই জব এ আরো একটু বেশি স্বাধীনতা পেতে পডকাস্টিং শুরু করতে পারেন।

Podcast হলো একটি সাধারণ রেকর্ড করা অডিও, যেটি কি না অনলাইনে শেয়ার করা হয়।

পডকাস্ট নিয়ে দুইভাবে কাজ করা যায়। নিজের পডকাস্ট পাবলিশ করা অথবা অন্যের সাথে কাজ করা। ফেসবুক, ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটে প্রায়শই পডকাস্ট আর্টিস্ট চেয়ে জব অফার করা হয়।

কিভাবে পডকাস্ট তৈরি করে আয় করা যায়, বিস্তারিত উল্লেখ করে আমরা ইতিমধ্যে সেবিষয়ে আলোচনা করেছি। আশা করি আপনার পডকাস্ট বানাতে তা বেশ সহায়ক হবে।

৭। অনলাইন ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট জব

একজন ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট সাধারনত যেকোনো অবস্থানে থেকে কোম্পানীর প্রশাসনিক সার্ভিস দিয়ে থাকেন।

একজন ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট যেসব কাজ করেন:

  • অ্যাপয়েন্টমেন্ট শিডিউল করা
  • ফোন কল করা
  • ইমেইল ম্যানেজ করা
  • কাস্টমার সিার্ভিস দেওয়া, ইত্যাদি।

তাছাড়াও অনেক কোম্পানীর অনলাইন ভিত্তিক প্রচুর কাজ থাকে, যেমন ডাটা এন্ট্রি, সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলিং, ইমেইল মার্কেটিং কিংবা প্রোডাক্ট প্রমোশন করে বিক্রি করা।

একজন ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট হতে যেসব দক্ষতা প্রয়োজন:

  • ওয়ার্ড প্রসেসিং স্কিল
  • কমিউনিকেশন স্কিল (ফ্লুয়েন্টলি কথা বলা এবং রাইটিং স্কিল)
  • কম্পিউটার স্কিল
  • দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা
  • পরিস্থিতি সামলানো
  • সেইসাথে প্রতিনিয়ত শেখার আগ্রহ।

ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট এর কাজ পাওয়ার জন্য সবচেয়ে ভালো জায়গা upwork.com, Fiverr এবং Guru.

৮। অনলাইন অডিও ট্রান্সক্রাইবিং জব

অডিও ট্রান্সক্রিপশন কি তা নিশ্চয়ই নাম থেকেই বুঝতে পারছেন। যি, একদম ঠিক ধরেছেন। কোনো অডিও শুনে শুনে টেক্সট ফাইল তৈরি করাই একজন ট্রান্সক্রিপশনিস্ট এর কাজ।

আরো পড়ুন:  গুগল অ্যাডসেন্স বিকল্প এড নেটওয়ার্ক | 7 best Google Adsense Alternatives

সাধারণত এধরনের টেক্সট ফাইল পরবর্তীতে ভিডিওতে সাবটাইটেল হিসেবে এড করা হয়।

অনলাইন ট্রান্সক্রিপশনের জব করে প্রতি ঘন্টায় গড়ে ১০ডলার কিংবা তার বেশিও পাওয়া সম্ভব। মূলত, আপনার রাইটিং স্পিড কেমন, তার উপরই ইনকাম নির্ভর করবে।

কাজ পাওয়া যাবে বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং সাইট যেমন, ফাইভার এবং ফেসবুক ও লিঙ্কডইন থেকে।

৯। অনলাইন এসইও এক্সপার্ট

প্রতিযোগিতার এই যুগে কে চায় সার্চ রেজাল্টের নিচে থেকে ব্যবসায় অনুন্নতি করতে? আপনি কি চান? নাহ, আমিও চাই না। অনলাইন ব্যবসায় সাফল্য পেতে ডিজিটাল মার্কেটিং এর বিকল্প নেই। আর সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী ও লাভজনক ডিজিটাল মার্কেটিং বলে যদি কিছু থাকে সেটি হলো সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা এসইও।

একজন এক্সপার্ট এসইও স্পেশালিস্টই পারেন একটা সাইট বা ব্লগকে সার্চ ইঞ্জিন রেজাল্টে Rank করাতে। তাই অনলাইন জব মার্কেটে এসইও এক্সপার্টদের ব্যপক চাহিদা।

এসইওর মাঝেও আবার অনেকরকম কাজ পাওয়া যায় যেমন,

  • ব্যকলিঙ্ক তৈরি
  • অনপেজ এসইও
  • লোকাল এসইও
  • কীওয়ার্ড রিসার্চ
  • পেজ স্পিড অপটিমাইজেশন, ইত্যাদি।

আপনি যদি এসইও না জানেন, তবে প্রথমে ফ্রি এসইও কোর্স করে শিখে নিতে পারেন, এরপর কিছু ওয়েবসাইট নিয়ে ইন্টারন করুন, Rank করান, এরপর মার্কেটে প্রবেশ করুন।

কাজ পাওয়া যাবে upwork, Guru, Fiverr, Freelancer, বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সিং সাইট এবং বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপ যেমন, SEO Community Bangladesh.

১০। ওয়েব ডেভেলপমেন্ট/ডিজাইনিং জব

এই কাজটা যারা ভবিষ্যতে ফুল টাইম ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে চান কিংবা ইতিমধ্যে এই বিষয়ে শিখতে শুরু করেছেন তাদের জন্য। এখন থেকেই ছোট ছোট ডেভেলপমেন্ট কিংবা ডিজাইনের কাজ করে রেটিং বাড়ানোর চেষ্টা করা যেতে পারে।

ফুল-টাইম বা পার্ট-টাইম অনলাইন জব, দুইভাবেই একজন ওয়েব ডেভেলপার কিংবা ডিজাইনার কাজটি নিতে পারেন। কারণ এগুলো সাধারণত প্রজেক্ট ভিত্তিক কাজ হয়ে থাকে।

ডেভেলপমেন্ট এবং ডিজাইন ক্যাটেগরিতে অনেকরকম কাজ রয়েছে যেমন:

  • মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট
  • ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট
  • ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপমেন্ট
  • প্লাগইন তৈরি
  • ওয়েব ডিজাইন
  • টি-শার্ট ডিজাইন
  • লোগো ডিজাইন, ইত্যাদি

প্রথমদিকে ছোট ছোট কাজ দিয়ে শুরু করা যেতে পারে, যেমন নরমাল ওয়ার্ডপ্রেস ব্লগ ডেভেলপমেন্ট, কিংবা যারা ইতিমধ্যে ডিজাইনের কাজ পারেন, তারা লোগো ডিজাইন, টি-শার্ট ডিজাইন শুরু করতে পারেন।

কিভাবে ওয়েব ডেভেলপার হওয়া যায় তা নিয়ে আমাদের টিউটোরিয়াল রয়েছে, এছাড়া কিভাবে গ্রাফিক্স ডিজাইন শেখা যায় সেবিষয়েও পূর্বে আলোচনা করেছি।

বেশি আয় করতে চাইলে একজন ওয়েব ডেভেলপার কিংবা ডিজাইনার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়ার চেষ্টা করুন। কারণ প্রতিনিয়ত ওয়েব ডিজাইনার এবং ডেভেলপারদের চাহিদা বেড়ে চলছে।

ওয়েব ডেভেলপারদের আয় এবং গ্রাফিক্স ডিজাইন থেকে আয় করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে আর্টিকেল দুইটি পড়ে নিতে পারেন।

FAQ: অনলাইন জব নিয়ে প্রায়শই জিজ্ঞেসিত প্রশ্ন সমূহ

প্রশ্ন: বাংলাদেশে সহজ অনলাইন জব কোনগুলো?

উ: আমার কাছে মনে হয় ফটোগ্রাফি আমরা সবাই করি, এবং এটা ভালোভাবে করাটাও কোনো কঠিন কাজ নয়। সামান্য কিছু টেকনিক শিখে নিলেই ভালো ছবি উঠানো সম্ভব। এছাড়া, যাদের পড়ার অভ্যাস রয়েছে তাদের জন্য ব্লগ আর্টিকেল রাইটিং কঠিন কাজ হওয়ার কথা না। আরো কিছু সহজ অনলাইন জব হলো-

  • ডাটা এন্ট্রি, ক্যাপচা এন্ট্রি
  • অনলাইন সার্ভে
  • অডিও ট্রান্সক্রাইবিং।

প্রশ্ন: মেয়েদের জন্য অনলাইন জব কোনগুলো?

উ: দেখুন অনলাইন জবে আপনার শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে না। বরং কম্পিউটার ও মোবাইল দিয়ে কাজ করতে হবে। সুতরাং, অনলাইন জবের ক্ষেত্রে ছেলে মেয়ে আলাদা করে দেখার সুযোগ নেই। আপনি মেয়ে হয়েও সকল কাজই করতে পারবেন।

প্রশ্ন: অনলাইন জব কি মোবাইল দিয়ে করা সম্ভব?

উ: অবশ্যই সম্ভব। যেকোনো কন্টেন্ট রাইটিং, সার্ভে, ক্যাপচা এন্ট্রির মতো কাজগুলো খুব সহজেই মোবাইল দিয়ে করতে পারবেন। তবে কর্মদক্ষতা কিছুটা কম হতে পারে।

প্রশ্ন: অনলাইন জব বিকাশ পেমেন্ট করে এমন কিছু সাইটের নাম বলুন।

উ: বাংলাদেশী অনলাইন জব সাইট যেগুলোর কথা উল্লেখ করেছি, সবগুলোই আপনাকে বিকাশে পেমেন্ট করবে। এছাড়া, বাংলাদেশী অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সাইট রয়েছে, যেখানে অনলাইন মার্কেটিং জব করে আপনার ইনকাম বিকাশে নিতে পারবেন।

প্রশ্ন: এড ফি ছাড়া অনলাইন জব সাইট আছে কি?

উ: যেসব সাইটে এড ফি দেওয়া লাগে, সেগুলোর বেশিরভাগই ভুয়া Bangladeshi job site. এসব থেকে দূরে থাকবেন। এখানে উল্লেখ করা কোনো সাইটেই এড ফি দিতে হবেনা।

প্রশ্ন: ছাত্রদের জন্য অনলাইনে চাকরির কোনো সুযোগ আছে?

উ: অনলাইন জব ফর স্টুডেন্টস ইন বাংলাদেশ এ সুযোগ কম নয়। বর্তমানে মার্কেটিং, কন্টেন্ট রাইটিং এর মতো বাংলাদেশ থেকে পাওয়া সম্ভব। তবে অন্য কোনো ভালো স্কিল থাকলে কম সময় দিয়ে ছাত্রদের জন্য ভালো আয় করার সুযোগ রয়েছে।

অনলাইন জব নিয়ে পরিশেষ

বাংলাদেশী অনলাইন জব করতে চাইলেও মাস শেষে ভালো একটা এমাউন্ট পাওয়া যায়, এমন কিছুই করা উচিৎ। ভিডিও দেখে কিংবা ক্যাপচা সলভ করেও আয় করা যায়। তবে সত্যিকার অর্থে আয় করতে চাইলে প্রয়োজনে অনলাইনে কোর্স করে তারপর জব খুজুন।

আশা করি, উপরে উল্লেখ করা সেরা ১০টি অনলাইন জব আপনাকে পছন্দের কোনো জব খুঁজে পেতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে ইন-শা-আল্লাহ।

5 thoughts on “সেরা ১০টি অনলাইন জব করে আয় করুন ঘরে বসে (২০২৩)”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top