ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কি? Virtual Reality কিভাবে কাজ করে? 

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কি

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি দ্বারা এমন এক কাল্পনিক পরিবেশ সৃষ্টি করা হয় যা আপনার মধ্যে বাস্তব অনুভূতি সৃষ্টি করবে। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কি বা virtual reality meaning in bengali বিষয়ে বলতে গেলে প্রথমত বলতে হয়, এটি বিজ্ঞানের এমনই একটি বিশেষ উদ্ভাবন যা আমাদেরকে কল্পনার রাজ্যে বিচরণ করার সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়।

আপনার কি কখনও চাঁদে যাওয়ার ইচ্ছা হয়? কিংবা সমুদ্রের তলদেশে মাছদের সাথে খেলা করার ইচ্ছা জাগে? কিংবা রূপকথার গল্পের সেই ভূত-প্রেতের জগতে ঘুরে আসার শখ জাগে? 

হ্যাঁ, আমাদের সবারই কম-বেশি এই ধরনের ইচ্ছা থাকে। তবে এই অকল্পনীয় ইচ্ছাগুলো কি আদৌ বাস্তবে পূরণ হওয়া সম্ভব?

হ্যাঁ, সম্ভব। অবাক হচ্ছেন? ভাবছেন আমি মজা নিচ্ছি! না, একদমই না। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ( virtual reality ) হলো এমনই একটি উদ্ভাবন যা আপনার এই অকল্পনীয় ইচ্ছাগুলোকে বাস্তবে রূপ দেয়। 

মজার এই উদ্ভাবন যা আমাদের অকল্পনীয় ইচ্ছাগুলোকেও বাস্তবে পূরণ করে দেয়, তার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে নিশ্চয়ই আপনার ইচ্ছে জাগছে?

তাহলে চলুন ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কি? কিভাবে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কাজ করে এসম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কি ? : What is Virtual Reality in Bangla

Virtual Reality (VR) দুটি শব্দের সমন্বয়ে গঠিত। এখানে “ভার্চুয়াল(Virtual)” মানে হলো সামনে এবং “রিয়েলিটি(Reality)” মানে হলো বাস্তবতা। অর্থাৎ সামনের বাস্তবতা অনুভব করাই হচ্ছে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি যা কেবল মানুষের দ্বারাই সম্ভব।

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি হলো এমন এক কাল্পনিক জগত যা মানুষের মধ্যে বাস্তবের চেতনা উদ্বেগ করে। 

সহজ কথায় বলতে গেলে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি (Virtual reality) মানে হলো প্রকৃত অর্থে বাস্তব নয় কিন্তু বাস্তবের চেতনা উদ্বেগকারী এক বিজ্ঞাননির্ভর কল্পনা যা আপনাকে ভিন্ন এক জগতে নিয়ে যাবে।

কম্পিউটার প্রযুক্তি ব্যবহার করে এখানে ত্রিমাত্রিক ইমেজ তৈরি করা হয় যা অনেক অসম্ভব ঘটনাগুলোও ব্যবহারকারীর সামনে নিয়ে আসে।

যেমম ধরুন, গহীন এক জঙ্গলে ডাইনোসরের তাড়া খেয়ে আপনি প্রাণপণে ছুটছেন। এমন কোনো দৃশ্য আপনার সামনে দেখানো হলো। তাহলে আপনার ঐ মূহুর্তে মনে হবে আপনি সত্যি সত্যিই ডাইনোসরের তাড়া খাচ্ছেন।

Virtual reality কে আমরা ঘুমন্ত অবস্থায় যে স্বপ্ন দেখি তার সাথে তুলনা করতে পারি। আপনি যখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে স্বপ্নের জগতে চলে যান, তখন নিশ্চয়ই সেটাকে বাস্তব মনে হয়? ভার্চুয়াল রিয়েলিটিটাও ঠিক এমনই। এখানে এমন এক কাল্পনিক পরিবেশ তৈরি করা হয় যা আপনার মধ্যে বাস্তব অনুভূতি সৃষ্টি করে।

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি আপনাকে Mentally এবং physically ঐ ভার্চুয়াল জগতের ঘটনাগুলো অনুভব করাবে। 

তাহলে বুঝলেন তো, ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কি?

ফেসবুক ভার্চুয়াল রিয়েলিটি আসার চেষ্টা করছে, এবিষয়ে সম্প্রতি মার্ক জুকারবার্গ একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কাকে বলে তা বুঝতে নিশ্চয়ই এই ভিডিওটি সহায়ক হবে।

ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ইতিহাস

আমরা ইতোমধ্যেই বুঝে গেছি ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কি? তবে এই যে চমৎকার এই উদ্ভাবনটির পিছনে কারা অবদান রেখেছেন? কিংবা ঠিক কবে এই উদ্ভাবনটির যাত্রা শুরু হয়েছে?  নিশ্চয়ই আপনার জানতে ইচ্ছে হচ্ছে? 

চলুন তাহলে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ইতিহাস সম্পর্কেই এখন জেনে নেওয়া যাক।

আপনি কি জানেন, Stereoscope কবে আবিস্কার করা হয়েছিল?  হ্যাঁ ঠিক ধরেছেন। ১৮৩৮ সালে Stereoscope আবিষ্কার করা হয় যেখানে একটি Image(ইমেজ) কে প্রজেক্ট করার জন্য একটি  টুইন মিরর(twin mirror) ব্যবহার করা হয়েছিল। 

আরো পড়ুন:  অপটিক্যাল ফাইবার কি | অপটিক্যাল ফাইবারে সাধারণত কয়টি অংশ থাকে?

১৯৮০ দশকের মাঝামাঝি সময়ে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি প্রথম ব্যবহার করা হয়েছিল, যখন Visual Program Lab (VPL) রিসার্চ (Research) এর সম্পাদক Jaron Lanier গুগোল(goggle) এবং গ্লাভস(gloves) সহ Gears বিকশিত করা শুরু করেছিলেন। পরে তিনি এটাকেই ভার্চুয়াল রিয়েলিটি(Virtual reality) হিসেবে অভিহিত করেন।

Virtual reality প্রযুক্তির উদ্ভাবন করা হয় ১৯৫৭ সালে “Morton Heiling” এর দ্বারা। উনার multimedia device যা “sensorama” নামে পরিচিত যাকে সবচেয়ে পূর্বকালীন VR system বলে অভিহিত করা হয়।

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কিভাবে কাজ করে

Virtual reality কাজ করার জন্য কিছু উপাদানের প্রয়োজন।  যেমন;

  • মাথায় হেড মাউন্টেড ডিসপ্লে (Head Mounted Display)
  • হাতে একটি ডেটা গ্লোভ (Data Glove)
  • শরীরে একটি পূর্ণাঙ্গ বডি স্যুট(Body Suit) ইত্যাদি পরিধান করতে হয়।

ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে ব্যবহারকারীকে এক বিশেষ ধরনের চশমা বা হেলমেট পরানো হয় যেখানে দুটি চোখে ভিন্ন ভিন্ন দৃশ্য দেখিয়ে ত্রিমাত্রিক অনুভূতি সৃষ্টি করা হয়।

এখানে কম্পিউটারের কিছু হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যারের সাহায্য নিয়ে ত্রিমাত্রিক দৃশ্য সৃষ্টি করা হয় যা ব্যবহারকারীর কাছে বাস্তব মনে হয়।

এই কাল্পনিক পরিবেশ  সৃষ্টি করার জন্য শক্তিশালী কম্পিউটারের সংবেদনশীল গ্রাফিক্স ব্যবহার করা হয়।

এই ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে ব্যবহৃত গ্রাফিক্স সাধারণ গ্রাফিক্সের তুলনায় আলাদা। এখানে শব্দ এবং স্পর্শকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয় যাতে ব্যবহারকারীর কাছে পুরোটাই বাস্তব হয়ে ধরা দেয়।

অর্থাৎ ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে একজন ব্যবহারকারীকে প্রয়োজনীয় সামগ্রী ( বিশেষ চশমা/হেলমেট, গ্ল্যাভস, বডি স্যুট, বুট ইত্যাদি)  পরিধান করিয়ে কম্পিউটারের সাহায্যে 3D অথবা 5D ইমেজ/পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে ব্যবহারকারীকে এক কাল্পনিক জগতের বাস্তবিক অনুভূতি দেওয়া হয়।

ভার্চুয়াল রিয়েলিটির কত প্রকার ও কি কি?

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি মূলত ৫ প্রকার। যথা;

  1. Fully-immersive Virtual Reality
  2. Semi-immersive Virtual Reality
  3. Non-immersive Virtual Reality
  4. Augmented Reality
  5. Collaborative Virtual Reality 

 Virtual Reality এর এই পাঁচ প্রকারের বিস্তারিত বর্ণনা নিম্নে দেওয়া হলো;

1.Fully-immersive Virtual Reality 

সম্পূর্ণ বাস্তব অভিজ্ঞতা উপভোগ করার জন্য এই Virtual technology ব্যবহার করা হয়। এই টেকনোলজি আপনাকে এমন এক কাল্পনিক জগতে নিয়ে যাবে যা আপনার কাছে সম্পূর্ণ বাস্তব বলে মনে হবে।

এই ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহার করার সময় আপনার মনে হবে আপনি সম্পূর্ণ অন্য একটা জগত বা পরিবেশে অবস্থান করছেন। এর মাধ্যমে আপনি শারীরিক অনুভব করার সাথে সাথে আপনার মনে হবে শারীরিকভাবে আপনি ঐ ভার্চুয়াল জগতেই অবস্থান করছেন।

এই Virtual technology এর সাহায্যে আপনাকে যা যা দেখানো হবে সবটাই আপনার কাছে পুরোপুরি বাস্তব মনে হবে।

তবে এই ভার্চুয়াল রিয়েলিটি উপভোগ করার জন্য আপনাকে প্রচুর টাকা ব্যয় করতে হবে। এটি অন্যসব ভার্চুয়াল রিয়েলিটির থেকে একটু বেশিই ব্যয়বহুল( expensive)।

এই Fully-immersive virtual reality টেকনোলজি প্রয়োগ করার জন্য টেকনিক্যাল হ্যালমেট( technical helmet), গ্লাভস(gloves)  এবং কিছু বডি কানেক্টরস( body connectors) ব্যবহার করা হয়।

এই body connectors গুলো শক্তিশালী কম্পিউটারের সাথে যুক্ত করা হয় যা আপনার ইন্দ্রিয়ের গতিবিধি শনাক্ত (detect) করে থাকে।

এটি আপনার শারিরীকভাবে করা প্রত্যেকটি movement এমনকি আপনার চোখের পিটপিট করাটাও শনাক্ত করে সেগুলোকে ভার্চুয়াল জগতে স্থাপন করে।

যার ধরুন আপনার মনে হবে আপনি সম্পূর্ণভাবে ভার্চুয়াল জগতে অবস্থান করছেন।

2.Semi-immersive Virtual Reality 

এটি হচ্ছে এমন এক ভার্চুয়াল জগত যা Fully-immersive virtual reality এবং Non-immersive virtual reality এর সমন্বয়ে তৈরি করা হয়।

এই semi-immersive virtual reality তে আপনি শুধুমাত্র Visual experience উপভোগ করতে পারবেন। Fully-immersive virtual reality এর মতো এখানে কোনো শারীরিক গতিবিধি লক্ষ্য করা হয় না।

আরো পড়ুন:  ইন্টারনেট কাকে বলে কত প্রকার ও কি কি | ইন্টারনেট কিভাবে কাজ করে?

এই ভার্চুয়াল জগতে হারিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজন পরে কিছু device এর। যেমন; Computer screen কিংবা VR box, Headset ইত্যাদি। 

এই ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে আপনি কম্পিউটারে থাকা মাউস(mouse) ব্যবহার করে নিজের আচরণ ( character)  নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।

3.Non-immersive Virtual  Reality  

এই ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে আপনি software এ থাকা বিভিন্ন Character এবং activities গুলোকে নিয়ন্ত্রণ( control)  করতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনি সরাসরি ভার্চুয়াল বা কাল্পনিক জগতে সংযুক্ত না হয়ে সফটওয়্যারে থাকা যেকোনো character কিংবা activities গুলোকে কন্ট্রোল করার মাধ্যমে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মজা উপভোগ করতে পারবেন। 

ধরুন একটি গেমিংয়ের কথাই বলি। “Temple run” গেমটি খেলেছেন নিশ্চয়ই? এই যে এখানে থাকা character এর গতিবিধি সবকিছুই কিন্তু আপনি নিজে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। খেলতে খেলতে একটা সময় আপনার মনে হবে ঐ গেমের character টা বুঝি আপনি নিজেই।

এই যে যেকোনো game এর ক্যারেক্টার এবং তার activities গুলো control  করার মাধ্যমে আপনি নিজেই ঐ গেমিং দুনিয়ায় প্রবেশ করেন এটাই হচ্ছে Non-immersive virtual reality।

বিভিন্ন ধরনের ভিডিও গেম, গ্রাফিক্স এনিমেশন ইত্যাদি আমাদেরকে Non-immersive virtual reality উপভোগ করার সুযোগ করে দেয়।

4.Augmented Reality

বাস্তব এবং ভার্চুয়ালের সংমিশ্রণে তৈরি এক পরিবেশই হলো Augmented Reality। এই Augmented Reality এর মূল শব্দ হচ্ছে “Augment” যার অর্থ হচ্ছে কোনো কিছু যুক্ত বা সংযুক্ত করা। অর্থাৎ বাস্তবিক পরিবেশের সাথে কম্পিউটারের সাহায্যে যে স্তর সৃষ্টি করা হয় তাই Augmented Reality।

চলুন একটু সহজভাবে বুঝে নেওয়া যাক। মনে করুন আপনি আপনার ঘর কিংবা অফিসের একটি রুম বা কক্ষ মোবাইলের স্ক্রিনে দেখছেন এবং আপনি একটি ক্যারেক্টার হিসেবে পুতুল বা প্রাণী সেখানে যুক্ত করছেন।

তাহলে আপনি স্ক্রিনে আপনার কক্ষে পুতুলটির উপস্থিতি দেখতে পারবেন, যদিও বাস্তবে তা থাকবেনা।

এই Augmented Reality ব্যবসায়ীরা বেশি ব্যবহার করে থাকেন। ধরুন আপনি আপনার কক্ষের জন্য ফার্নিচার কিনতে চাচ্ছেন। তাহলে দোকানে গিয়ে Augmented reality এর মাধ্যমে আপনি আপনার কক্ষের কোন স্থানে কোন ফার্নিচারটা বেশি ভালো মানাবে সেটা আগে থেকেই দেখে উপযুক্ত ফার্নিচার নির্বাচন করে নিতে পারছেন। 

5.Collaborative Virtual Reality

এই ভার্চুয়াল রিয়েলিটি হচ্ছে খুব উন্নত এবং আধুনিক। এর মাধ্যমে একই সময়ে ভিন্ন ভিন্ন জায়গা থেকে লোকেরা সংযুক্ত হয়ে একই ভার্চুয়াল জগতে অবস্থান করতে পারে।

বর্তমানে খুবই জনপ্রিয় একটি গেম “PUBG” এর কথা শুনেছেন নিশ্চয়ই? এই অনলাইন গেইমে অনেক player একইসাথে একটি ভার্চুয়াল জগতে সংযুক্ত হয়। এখানে আপনি নিজেই নিজের virtual character টিকে কন্ট্রোল করতে পারবেন।

এই ভার্চুয়াল জগতে একইসাথে অনেকজন সক্রিয় থাকার পাশাপাশি “microphone”, “headset” এর মাধ্যমে একে অপরের সাথে কথা বলা ও শোনার ব্যবস্থাও রয়েছে। এমনকি এই ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে একে অপরের সাথে chatting এর সুযোগও করে দেওয়া হয়।

ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ব্যবহার

বর্তমানে প্রায় সর্বক্ষেত্রেই Virtual Reality এর প্রয়োগ দেখা যাচ্ছে। নিম্নে কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ব্যবহার উল্লেখ করা হলো;

1. প্রকৌশল ও বিজ্ঞান

ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ব্যপক ব্যবহার প্রকৌশল এবং বিজ্ঞানক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যায়। বিজ্ঞানের জটিল জটিল বিষয় নিয়ে গবেষণা কিংবা 

গবেষণালব্ধ ফলাফল বিশ্লেষণ ও উপস্থাপনের ক্ষেত্রে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

এছাড়াও বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রসেসের সিমুলেশনে virtual reality এর প্রয়োগ লক্ষ্য করা যায়।

2. খেলাধুলা ও বিনোদন

ভার্চুয়াল রিয়েলিটির সাহায্য কম্পিউটারের সাথে কোনো খেলায় অংশগ্রহণ কিংবা কম্পিউটার সিস্টেমে অনুশীলন করা সম্ভব হচ্ছে। Virtual reality এর কল্যাণে কোচ এবং player নিজ নিজ কাজের ক্ষেত্রে নিজেদের স্কিলকে আরও শার্প করে তুলছে দিন দিন।ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে ত্রিমাত্রিক ইমেজের মাধ্যমে যেকোনো মুভমেন্ট দেখানো হয় যার ফলে প্লেয়ার খুব সহজেই তার কোচের নির্দেশনা বুঝতে পারে।

আরো পড়ুন:  ইন্টারনেট কাকে বলে কত প্রকার ও কি কি | ইন্টারনেট কিভাবে কাজ করে?

তবে বর্তমানে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি মানুষকে ব্রডকাস্টিং এর সুবিধা দিচ্ছে  যার ফলে যেকেউ ঘরে বসেই ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে স্টেডিয়ামে খেলা দেখার মতো করে সবকিছু উপভোগ করতে পারবে।

এই ভার্চুয়াল রিয়েলিটির কল্যাণে দ্বিমাত্রিক বা ত্রিমাত্রিক সিমুলেশনের মাধ্যমে নির্মিত হচ্ছে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী নির্ভর ছবি যা সবার কাছে জনপ্রিয়তা অর্জন করছে।

3. শিক্ষাক্ষেত্রে 

শিক্ষাক্ষেত্রে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির প্রয়োগ ব্যপক। এর মাধ্যমে কঠিন বিষয়কে সুন্দরভাবে চিত্রসহ প্রদর্শন করানো হয় যা শিক্ষার্থীদের কাছে বোধগম্য করা সহজ হয়।

বিজ্ঞানের কিছু লেখা আছে যা বইয়ের লেখায় সঠিকভাবে বোধগম্য হয় না। যেহেতু আমাদের সবার ভিজুয়াল ক্ষমতা সমান না। তাই এই বিষয়গুলো যদি ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে উপস্থাপন করা যায় তাহলে সবাই সহজেই বুঝতে এবং শিখতে পারবে।

4. চিকিৎসাক্ষেত্রে

চিকিৎসাক্ষেত্রে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির অবদান অপরিসীম। জটিল অপারেশনের ক্ষেত্রে কিংবা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজনের ক্ষেত্রে এটির ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়।

এছাড়াও রোগ নির্ণয়, টেলিমেডিসিন সেবা, নতুন চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্যও এটির ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

4. ব্যবসা ও বানিজ্য 

ভার্চুয়াল রিয়েলিটির প্রয়োগ ব্যবসা-বানিজ্যতেও লক্ষ্য করা যায়। উৎপাদিত কিংবা প্রস্তাবিত কোনো পণ্যের গুণগত মান, বিপণন, গঠন সবকিছু ভার্চুয়াল রিয়েলিটি সিমুলেশন পদ্ধতিতে আগেই যাচাই করে নেওয়া হয়।

এছাড়াও কোনো পণ্যের ব্যবহার ও অন্যান্য সুবিধাসমূহ ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে সহজেই ভোক্তা বা ক্রেতার কাছে তুলে ধরা যায়।

5. সেনাবাহিনী প্রশিক্ষণ 

ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে সত্যিকার যুদ্ধক্ষেত্রের আবহ তৈরি করে সৈনিকদেন নিখুঁত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। সেনাবাহিনীতে অস্ত্র চালনা ও আধুনিক যুদ্ধাস্ত্রের ব্যবহার কম সময়ে নিখুঁতভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় এই ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমেই।

6. বিমান ও নৌবাহিনী প্রশিক্ষণ 

ভার্চুয়াল রিয়েলিটির প্রয়োগে বিমানবাহিনীতে বিমান চালানো এবং প্যারাসুট ব্যবহারের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

এছাড়াও নৌবাহিনীতে যুদ্ধ প্রশিক্ষণ এবং ডুবোজাহাজ চালানোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়ে থাকে।

7. ড্রাইভিং নির্দেশনা 

ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে মানুষ সহজে কম সময়ে ঝুঁকিমুক্ত পরিবেশে ড্রাইভিংয়ের বাস্তব নির্দেশনা নিতে পারে।

এছাড়াও বর্তমানে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি এর অনেক অনেক ব্যবহার রয়েছে যা বলে শেষ করা যাবেনা।

প্রাত্যহিক জীবনে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি এর প্রভাব

বাস্তব জীবনে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ইতিবাচক এবং নেতিবাচক উভয় ভূমিকাই রয়েছে। নিম্নে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ইতিবাচক এবং নেতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরা হলো;

ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ইতিবাচক প্রভাব : Advantages of Virtual Reality

  • শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে জটিল বিষয়গুলো ত্রিমাত্রিক চিত্রের মাধ্যমে আকর্ষণীয় ও সহজে বোধগম্য করা যায়।
  • বাস্তবায়নের পূর্বেই কোনো কিছুর গুণাগুণ এবং অন্যান্য মান জেনে নেওয়া যায়। যার ধরুন খরচ কম হয় এবং অপচয় হয় না।
  • Virtual reality  প্রয়োগ করার মাধ্যমে ঝুঁকিপূর্ণ উৎপাদন ব্যবস্থার ক্ষেত্রে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে উৎপাদন সহজ করা হয়।
  • ঝুঁকিপূর্ণ যেকোনো ট্রেনিং কোনো ধরনের ক্ষতি ছাড়াই নেওয়া যায়।

ভার্চুয়াল রিয়েলিটির নেতিবাচক দিক : Disadvantages of Virtual Reality

  • ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি এবং প্রযুক্তি  খুবই উন্নত এবং ব্যয়বহুল।
  • ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে মানুষ কল্পনার রাজ্যে বিচরণ করার সুযোগ পায়। আর দীর্ঘসময় এই কল্পনার রাজ্যে বিচরণের ফলে দেখা যায় সে আর বাস্তবিক পরিবেশ পছন্দ করে না। ফলে সে বেশিরভাগ সময়ই ভার্চুয়াল জগতে কাটাতে চাইবে।
  • দীর্ঘসময় ভার্চুয়াল রিয়েলিটির জগতে থাকার কারণে মানুষের স্বাস্থ্যের অবনতি হয়। এমনকি দৃষ্টিশক্তি এবং শ্রবণশক্তির ব্যপক ক্ষতিসাধন হয়।
  • মনুষ্যত্বহীনতাও দেখা দেয় এর ফলে।

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি নিয়ে শেষ কথা

বর্তমান যুগ হচ্ছে বিজ্ঞানের যুগ। বিজ্ঞানের কল্যাণে এখন ঘরে বসেই চাঁদে বিচরণ করা সম্ভব হচ্ছে। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি আমাদের অকল্পনীয় কল্পনাগুলোকে বাস্তবে পূরণ করার সুযোগ করে দিচ্ছে, যাকে প্রযুক্তির ভবিষ্যত হিসেবে চিন্তা করা হচ্ছে।

আমরা এই আর্টিকেলে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কি ?, ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কিভাবে কাজ করে এটি? প্রকারভেদ, ব্যবহার, সুবিধা ও অসুবিধাগুলো তুলে ধরেছি।

আপনি ভার্চুয়াল রিয়েলিটির কোন সুবিধাটি গ্রহণ করেছেন? আমাদের কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না যেনো!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top