বাড়িতে বসে করা যাবে এমন ঘরোয়া ব্যবসা আইডিয়া খোঁজ করছেন? বর্তমানে দেশে শিক্ষিতের হার দিন দিন বাড়ছে। সেই সাথে চাকরি পাওয়া চ্যালেঞ্জিং হয়ে পড়েছে। তবে অনলাইনের বদৌলতে এখন ঘরোয়া ব্যবসা করে অনেকেই স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করছেন এবং সফলও হচ্ছেন।
বর্তমান সময়ে ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েরাও শিক্ষা, চাকরি, ব্যবসা সব ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। অনেক শিক্ষিত যুবক যুবতী চাকরি না পেয়ে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন। অথচ, শুধু চাকরির পেছনে না ছুটে যদি অল্প পুঁজিতে ব্যবসা করেও সফল হওয়া সম্ভব। অনেকে ব্যবসা শুরু করার চিন্তা করলেও কি ব্যবসা করবেন সেটা অনেকে বুঝতে পারছেন না, অর্থাৎ তাদের এগিয়ে যেতে সবচেয়ে বড় বাধা পছন্দের ইউনিক বিজনেস আইডিয়া।
ব্যবসা করতে গেলে যে বাহিরে যেতে হবে বা অনেক পুঁজির দরকার হবে বিষয়টি এমন নয়। যেকেউ চাইলে ঘরে বসে ব্যবসা শুরু করতে পারি। এমন অনেক ঘরোয়া ব্যবসা আছে যেগুলো ঘরে বসেই করা যায় স্বল্প পুঁজি এমনকি পুঁজি ছাড়াই।
এখন সবার যে প্রশ্ন হলো বাড়িতে থেকে কি কি ঘরোয়া ব্যবসা করা যায়? তাহলে চলুন ঘরোয়া ব্যবসা নিয়ে আমাদের শীর্ষ ১৫টি আইডিয়া দেখে নেওয়া যাক।
একনজরে সম্পূর্ণ আর্টিকেল
ঘরোয়া ব্যবসা আইডিয়া | Business Ideas From Home
ঘরোয়া ব্যবসা তালিকা :
- Home Made Food
- Cloth Business
- Pets Farm
- Nursery/Gardening
- ব্লগিং ব্যবসা
- Jewelry Making Business
- Cake Making
- Chocolate Making Business
- ইউটিউব চ্যানেল
- রিসেলার বিজনেস
- ক্যান্ডেল মেকিং ব্যবসা
- গ্রিটিং কার্ড বিজনেস
- আচার তৈরির ব্যবসা
- ফ্রিল্যান্সিং ব্যবসা
- ফুলের গহনার ব্যবসা
১। Home Made Food – ঘরোয়া ব্যবসা
কেউ যদি রান্নাবান্নায় ভালো হয়ে থাকেন তাহলে ঘরে বসেই তার রান্না করা খাবার অনলাইনের মাধ্যমে সেল করে ভালো ইনকাম করতে পারেন। খুব সহজে ঘরে তৈরি খাবার দিয়ে ব্যবসা শুরু করা যায়। এটার জন্য বেশি পুঁজির দরকার হয় না।
অল্প কিছু উপকরণ দিয়ে রান্নার ব্যবসা শুরু করা যায়। প্রথমে যেটা করতে হবে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে খাবারের ছবি পোস্ট করতে হবে এবং ফ্রেন্ড সহ আশেপাশের মানুষের মধ্যে প্রচার করতে হবে। যদি কারো আপনার খাবারের ছবি ভালো লেগে থাকে তাহলে সেখান থেকেই অর্ডার পেয়ে যেতে পারেন।
হোম মেইড খাবারের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বিশেষ করে অফিসের লাঞ্চ, টিফিন বা যেকোনো অনুষ্ঠানে। যদি আপনার খাবার তাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনার কাছ থেকেই তারা নিয়মিত খাবার অর্ডার করবে।
হোম মেইড সব ধরনের খাবার দিয়ে আপনার ব্যবসা শুরু করতে পারেন। খাবার ডেলিভারি দেওয়ার জন্য একজন ডেলিভারি ম্যান রাখতে পারেন। Food Panda তে রেজিস্ট্রেশন করে খুব সহজে আপনার তৈরি করা খাবার সেল ও ডেলিভারি দিতে পারবেন।
২। Cloth Business – ঘরোয়া ব্যবসা
ঘরে বসে খুব সহজেই গার্মেন্টস ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এই ব্যবসা ছেলে-মেয়ে উভয়ের করতে পারে। গার্মেন্টস ব্যবসা অনলাইন ও অফলাইন দুভাবেই করা যায়।
নিজের বাসায় ছোট একটি জায়গা নিয়ে সেখানে সব ধরনের কাপড় বিশেষ করে মেয়েদের যত ধরনের আইটেম আছে সবই রাখতে পারেন। কারণ মেয়েদের বরাবরই পোশাকের প্রতি বেশ আকর্ষণ থাকে।
এই কাপড় আপনি অনলাইনে ছবি তুলে বিক্রি করতে পারবেন। এই ঘরোয়া ব্যবসা শুরু করতে বেশি পুজির দরকার হয় না। অল্প পুজিতে শুরু করা যায়। গার্মেন্টস ব্যবসায় ভালো করতে হলে অবশ্যই কাপড় ভালো চিনতে হবে এবং কাপড়ের মান ঠিক আছে কিনা সেটা খেয়াল রাখতে হবে।
বর্তমানে মেয়েরা ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে গার্মেন্টস ব্যবসা করে অনেক সফল হচ্ছে। আপনার যদি হাতের কাজ ভালো জানা থাকে তাহলে কাপড়ে হাতের কাজ করেও বিজনেস শুরু করতে পারেন।
এই ব্যবসার জন্য অবশ্যই একজন কুরিয়ার ম্যান রাখতে হবে যাতে অনলাইনে অর্ডার পাওয়ার পর ঠিক সময়ে জিনিস পৌঁছে দেওয়া যায়। আপনার যদি বাজেট বেশি থাকে তাহলে আপনি প্রডাকশনে যেতে পারেন এবং ব্যবসা বড় করতে পারেন।
ব্যবসায় সফল হতে হলে যে বিষয় খেয়াল রাখতে হবে সেটা হচ্ছে আপনি যে প্রোডাক্ট কিনছেন সেটা কম প্রাইজের মধ্যে কিনতে হবে এবং প্রডাক্ট কোয়ালিটি ঠিক রাখতে হবে। তাহলে আপনি ব্যাবসা করে সফল হতে পারবেন।
৩। Pets Farm – ঘরোয়া ব্যবসা
Pets Farm এর ব্যবসা আগে মেয়েরা না করলেও বর্তমানে শখের বশে পশু পাখির প্রতি ভালোবাসা থেকেই অনেকে Pets Farm করে থাকেন এবং পরবর্তীতে সেটা ব্যবসায়ী হিসেবে গ্রহণ করেন।
বর্তমানে এটি Profitable একটি বিজনেস আইডিয়া হয়ে উঠেছে। এই ব্যবসায় তেমন ইনভেস্ট করতে হয় না এবং কষ্ট কম। তাই ছেলেমেয়ে যে কেউ বাড়িতে থেকে এই ব্যবসা করতে পারেন।
Pets এর মধ্যে বিভিন্ন প্রজাতির বিদেশি কুকুর, খরগোশ, দুর্লভ পাখি, রঙিন মাছ এগুলো নিয়ে বাড়িতেই ফার্ম করতে পারেন। এগুলো বিক্রির জন্য বাজারে যেতে হবে না। অনলাইনের মাধ্যমে খুব সহজেই এগুলো সেল করা যায়।
সুন্দর সুন্দর ছবি পোস্ট করার মাধ্যমে সেল করতে পারবেন এবং পেটস লাভাররা অটোমেটিক্যালি আপনাকে খুজে নেবে। সৌখিন মানুষদের জন্য এটি একটি ভালো বিজনেস আইডিয়া।
বাড়িতে থেকেই এই ব্যবসার মাধ্যমে আপনিও লাভবান হতে পারেন। তবে এই ব্যবসাটি করতে হলে আপনাকে অবশ্যই যত্নশীল হতে হবে।
৪। Nursery/Gardening – ঘরোয়া ব্যবসা
গার্ডেনিং একটি যত্নশীল ব্যবসা। এই ব্যবসা বাড়িতে থেকেই করা যায়। বাড়ির ছাদে বা ফাঁকা যেটুকু জায়গা পাওয়া যায় সেখানেই গার্ডেনিং করতে পারেন।
অনেকে শখের বশে গার্ডেনিং করে থাকেন। আপনার যদি গার্ডেনিং এর শখ থাকে তাহলে এটাকে ব্যবসা হিসেবে নিতে পারেন। এটি একটি ঘরোয়া ব্যবসা করার লাভজনক আইডিয়া।
নার্সারি করে সফল হওয়ার জন্য প্রশিক্ষণ নিয়ে নিতে পারেন। গাছের সঠিক পরিচর্যা করার জন্য এ সম্পর্কে ধারণা থাকা প্রয়োজন। অনলাইন বা অফলাইনে আপনি বাড়িতে থেকে গাছ বিক্রি করতে পারবেন এবং গার্ডেন প্লানার হিসেবে অন্যদেরকে আইডিয়া দিতে পারবেন।
৫। ব্লগিং ব্যবসা
বর্তমানে ব্লগিং করার মাধ্যমে অনেকেই ভালো ইনকাম করছে। ঘরে বসে ব্লগিং করা এটি একটি ভালো বিজনেস আইডিয়া। ব্লগিং করার জন্য আপনাকে কোথাও যেতে হবে না। এটি ঘরে বসেই করতে পারবেন।
বিশেষ করে লেখালেখি যদি আপনার passion হয়ে থাকে তাহলে এই passion কে বিজনেস এ রুপান্তর করতে পারেন। তার জন্য আপনাকে আপনার পছন্দের একটি ব্লগ নিশ সিলেক্ট করতে হবে, টপিকসের উপর একটি ওয়েবসাইট খুলতে হবে।
সেই ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন দিতে হবে। এই বিজ্ঞাপন যে সকল ভিজিটর দেখবেন এবং আপনার দেখা পড়বে তখন সেখান থেকে আপনি আয় করতে পারবেন ঘরে বসেই।
এই বিজ্ঞাপনগুলো আপনি গুগল এডসেন্স, বা এডসেন্স বিকল্প নেটওয়ার্ক থেকে নিতে পারবেন। এই ঘরোয়া ব্যবসা আপনি ফ্রিতে শুরু করতে পারেন।
তবে এর জন্য টেকনিক্যাল নলেজ থাকা প্রয়োজন। টেকনিক্যাল নলেজ থাকলে আপনি এই ব্যবসায় সফল হতে পারবেন।
৬। Jewelry Making Business – ঘরোয়া ব্যবসা
জুয়েলারি ব্যবসা এখনকার সময়ে একটি লাভজনক ব্যবসা। এটিও ঘরে বসেই করা যায়।
বরাবরই মেয়েদের জুয়েলারির প্রতি খুব বেশি আকর্ষণ। বিয়ে থেকে শুরু করে যেকোনো অনুষ্ঠানে পুতির গহনা সহ বিভিন্ন অলংকার খুব বেশি ব্যবহার হয়।
যার কারণে সারা বছরই জুয়েলারির অনেক চাহিদা থাকে এবং এই ব্যবসাও ভালো হয়। এ সকল জুয়েলারি নিজেরা ঘরে তৈরি করার জন্য যে raw materials লাগে তা যদি কম মূল্যে ক্রয় করা যায়, তাহলে এই ব্যবসাতে ভালো লাভ থাকে।
এই ব্যবসায় বেশি লাভবান হতে হলে অবশ্যই নিজের মধ্যে কিছু ক্রিয়েটিভিটি থাকতে হবে। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে নতুন নতুন ডিজাইনের গহনা বানাতে পারলে এই ব্যবসাতে ভাল প্রফিট আসবে।
অল্প পুঁজিতে ব্যবসা এ শুরু করা যায়। অনলাইন, অফলাইন, হোয়াটসঅ্যাপ ও ফেসবুক যে কোন প্লাটফর্ম থেকে এই প্রোডাক্ট সেল করা যায় এবং এটি ডিমান্ড সবসময়ই থাকে। এটার জন্য বাহিরে যাওয়ার প্রয়োজন হবে না।
৭। Cake Making – ঘরোয়া ব্যবসা
হোমমেড কেকের চাহিদা সব সময় আছে। বিভিন্ন পার্টি, জন্মদিন, বিবাহ বার্ষিকী এসকল অনুষ্ঠানে কেক দরকার হয়। কেউ যদি ঘরে বসে ভালো কেক বানাতে পারেন তাহলে এটার মাধ্যমে ভালো ইনকাম করতে পারবেন।
নিজে একটি ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইউটিউব গ্রুপে নিজের চ্যানেল খুলে নিজের বানানো কেক এর ছবি পোস্ট করে অর্ডার নিতে পারেন। কেক বানাতে যে উপাদান গুলো লাগে তা কম খরচে ক্রয় করা যায়।
হোমমেড কেকের ব্যবসা করে অনেকে স্বাবলম্বী হয়েছেন। কেক তৈরি করার জন্য অবশ্যই কিছু জিনিস খেয়াল রাখতে হবে। কেকের গুণগত মান ঠিক আছে কিনা এবং কেক বানানোর সময় উপাদানগুলো পরিমাণমতো দিতে হবে। কেকের উপরের ডেকোরেশন সুন্দর হলে ক্রেতাদের কাছে এর চাহিদা বাড়বে।
৮। Chocolate Making Business – ঘরোয়া ব্যবসা
কেক মেকিং বিজনেসের মত চকলেট মেকিং বিজনেসও বেশ জনপ্রিয়। ছোট বড় সকলেই চকলেট পছন্দ করেন। ঘরে বসেই চকলেটের ব্যবসা করতে পারবেন এবং আপনার প্রোডাক্ট অনলাইনের মাধ্যমে সেল করতে পারবেন।
বিভিন্ন বার্থডে পার্টিতে চকলেট গিফট করা হয় যার কারণে এর চাহিদাও অনেক। এই ব্যবসা শুরু করে আপনিও সফল হতে পারেন। চকলেট তৈরি করতে খরচ কম হয় এবং লাভ বেশি হয়।
চকলেট তৈরিতে তিন থেকে চারটি উপকরণই যথেষ্ট। চকলেট সাচ, বড় প্যাকেট চকলেট, চকলেট বানিয়ে প্যাক করার জন্য প্যাকিং ম্যাটেরিয়াল এগুলো লাগবে।
খুব সহজেই এ গুলো দিয়ে ঘরে বসে চকলেটের ব্যবসা শুরু করা যায়। মাইক্রোওভেন ও গ্যাসের চুলায় চকলেট তৈরি করা যায়।
৯। ইউটিউব চ্যানেল
ইউটিউব চ্যানেল খুলে যে কেউ ঘরে বসে ব্লগিং করতে পারেন। বর্তমানে এটি অনেক জনপ্রিয় একটি ব্যবসা। আপনি যে বিষয়ের উপর অভিজ্ঞ বা যে বিষয়টি পছন্দ করেন সেই বিষয়ের উপর ইউটিউব চ্যানেল খুলতে পারেন।
রান্নার চ্যানেলসহ এখন বিভিন্ন বিষয়ে ব্লগ করার জন্য চ্যানেল খোলা হয়। আপনিও চাইলে যেকোনো একটি চ্যানেল খোলার মাধ্যমে আপনার প্রতিভার বিকাশ ঘটাতে পারেন এবং ঘরে বসে ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে ভালো টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
তবে এই কাজের জন্য অবশ্যই থাকতে হবে। ধৈর্য নিয়ে ব্যবসা শুরু করলে অবশ্যই একদিন না একদিন আপনি সফল হবেন।
১০। রিসেলার বিজনেস
রিসেলার বিজনেস বর্তমানে ভালো জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। রিসেলিং বিজনেস মূলত কোনো পণ্য ক্রয় করে তা আবার পুনরায় বিক্রয় করাকে বুঝায়। এটি বর্তমানে অনেক জনপ্রিয় একটি ঘরোয়া ব্যবসা যা বাড়িতে বসেই করা সম্ভব। এটার জন্য বিভিন্ন রিসেলিং অ্যাপস রয়েছে।
এসব অ্যাপসে বিভিন্ন ছবি দেওয়া থাকে। সেই ছবি নিজের ওয়েবসাইটে বা ফেসভবুক পেজে শেয়ার করে সেল করা যায়। পণ্যের ডেলিভারি নিয়ে নিজেকে ভাবতে হয় না।
যে কোম্পানির পণ্য আপনি রিসেল করবেন সেই কোম্পানিই পণ্যের ডেলিভারির দায়িত্ব নিয়ে থাকেন। cash-on-delivery ক্ষেত্রে ক্রেতা পণ্য হাতে পাওয়ার পর পেমেন্ট করে থাকেন।
কোম্পানী কর্তৃক নির্ধারিত মূল্যের অতিরিক্ত মূল্য কমিশন হিসেবে আপনাকে দিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে নিজের কোন রিক্স থাকে না। এই বিজনেস করতে গেলে যে দক্ষতার প্রয়োজন হয় তা হচ্ছে- ফেসবুক সম্পর্কে ধারণা, ই-কমার্স সম্পর্কে কম-বেশি ধারণা থাকা এবং অনলাইন সম্পর্কে ধারণা থাকতে হয়। যাতে আপনি একটি ওয়েবসাইট ভালোভাবে ব্যবহার করতে পারেন।
এগুলো জানা থাকলে আপনি সহজে রিসেলার বিজনেস শুরু করতে পারবেন। রিসেলার বিজনেস শুরু করতে একটি ওয়েবসাইটের দরকার হয় এবং এই ওয়েবসাইটের উপরই নির্ভর করে আপনার বিজনেস কেমন হবে।
এই বিজনেসে ভালো করতে হলে আপনাকে অবশ্যই ওয়েবসাইটে ভালো পারফরম্যান্স দেখাতে হবে। ওয়েবসাইটের লোডিং স্পীড ভালো হতে হবে এবং ওয়েবসাইটের ডিজাইন প্রফেশনাল হতে হবে।
তাহলে ক্লায়েন্ট আপনার পণ্যের ক্যাটালগ দেখে সহজভাবে অর্ডার করতে পারবেন এবং আপনার পণ্যের সেল ভালো হবে।
১১। ক্যান্ডেল মেকিং বিজনেস
মোমবাতি তৈরির ব্যবসা লাভজনক ব্যবসা। কিছু কাঁচামাল এবং মেশিন ক্রয় করে ঘরে বসে এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন। মোমবাতি তৈরীর কাঁচামাল ও মেশিন বর্তমানে খুবই এভেলেবল, বাজারে সহজেই কিনতে পাবেন।
মোমবাতির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বার্থডে সেলিব্রেট, বিভিন্ন পার্টি এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠানের ডেকোরেশনের কাজে মোমবাতির ব্যবহার হয়। তাছাড়া ক্যান্ডেল লাইট ডিনার ব্যাপক জনপ্রিয়। সর্বক্ষেত্রে মোমবাতির চাহিদা রয়েছে।
খুব কম খরচে ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। মোমবাতি তৈরীর জন্য বিভিন্ন ডিজাইনের সাচ রয়েছে, সেগুলো ক্রয় করতে হবে। এগুলো কম টাকার মধ্যে পাওয়া যায়।
এছাড়াও মোমবাতি তৈরীতে যা যা লাগে- মোম, রং এবং প্যাকেট। এই ব্যবসা করে সহজে লাভবান হওয়া সম্ভব।
১২। গ্রিটিং কার্ড বিজনেস
এখন সকল স্থানেই গ্রিটিং কার্ড এর ব্যাপক প্রচলন রয়েছে। সব ধরনের ইনভাইটেশন এর ক্ষেত্রে গ্রিটিং কার্ড এর মাধ্যমে ইনভাইট করা হয়ে থাকে।
বিয়ে, ম্যারেজ অ্যানিভার্সারি, বার্থডে, নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে বিভিন্ন ধরনের আকর্ষণীয় কার্ডের ব্যবহার হয়। হাতের কাজের পারদর্শী হয়ে থাকলে ঘরে বসে খুব কম খরচে গ্রিটিং কার্ড এর ব্যবসা করতে পারবেন।
এটা বেশ জনপ্রিয় ঘরোয়া ব্যবসা আইডিয়া। মার্কেটে এর চাহিদাও ভালো এবং এটা সারা বছরই ভালো সেল হয়। অল্প কিছু উপাদান দিয়ে এই ব্যবসা শুরু করতে পারবেন।
তবে ভালো মার্কেট পেতে গেলে অবশ্যই কার্ড নতুন নতুন ডিজাইন এর হতে হবে এবং দেখতে যাতে আকর্ষণীয় হয়। তাহলে খুব সহজেই ক্রেতারা আকৃষ্ট হবেন এবং সেলও বাড়বে। এই ব্যবসা শুরু করে যে কেউই খুব সহজেই লাভবান হতে পারবেন।
১৩। আচার তৈরির ব্যবসা
ঘরে বসে খুব সহজভাবে আচার তৈরির ব্যবসা শুরু করতে পারেন। অল্প পুঁজি নিয়ে ব্যবসা করা যায়। আচারের চাহিদা রয়েছে সব জায়গাতে। ছোট বড় সকলেই আচার খেতে পছন্দ করেন।
বাজারে বিভিন্ন ধরনের আচার পাওয়া যায়। আপনি চাইলে ঘরে বসে কিছু উপকরণ দিয়ে আচারের ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
আচার তৈরি করার জন্য খুব বেশি কিছু লাগে না। তেল, আচার তৈরির মসলা এবং আপনি যে আচার তৈরি করতে চান তার উপাদান, এগুলো দিয়ে ভালো আচার তৈরি করতে পারবেন।
আচার তৈরি করার পর তা বাজারজাত করার জন্য কাচের ছোট পট বা বোতলে আচার ভরে সেল করতে পারবেন।
এই ব্যবসায় ভালো করতে হলে আচারের গুণগত মান ঠিক আছে কিনা সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। এ বিষয়ে যুব উন্নয়ন সহ বিভিন্ন কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।
ব্যবসার ভালো করার জন্য সঠিক প্রশিক্ষণ নিতে পারেন। আচারের অনেক প্রকার রয়েছে, যেমন, বড়ই, চালতা, তেঁতুল, জলপাই, আম ইত্যাদি এসব আচার ব্যাপক জনপ্রিয়।
আপনি যেটা ভালো তৈরি করতে পারেন সেটা দিয়ে আপনার ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এটি অনলাইন অফলাইন দু’ভাবে আপনি সেল করতে পারবেন।
১৪। ফ্রিল্যান্সিং বিজনেস
বর্তমান সময়ে ফ্রিল্যান্সিং একটি ভালো বিজনেস আইডিয়া। ঘরে বসে অনলাইনে এই কাজ করা যায়। ফ্রিল্যান্সিং করে যে কেউ তার ক্যারিয়ার ডেভলপ করতে পারেন।
ফ্রিল্যান্সিং মূলত স্বাধীন একটি পেশা। বর্তমান ইন্টারনেটের যুগে ফ্রিল্যান্সিং একটি স্মার্ট বিজনেস আইডিয়া। সঠিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে যে কেউ ঘরে বসে ফ্রিল্যান্সিং এর ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এটা নির্দিষ্ট কোনো ধরাবাধা নিয়ম নেই। কেউ চাইলে ইন্টারনেটে একাধিক কাজের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং করতে পারেন।
অনলাইনে অনেকগুলো ফ্রিল্যান্সিং সাইট আছে আপনি চাইলে যেকোন একটি বিষয়ের উপর দক্ষতা অর্জন করে কাজ শুরু করতে পারেন। যেমন ডাটা এন্ট্রি, কনটেন্ট রাইটিং, লোগো ডিজাইন, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ফটো এডিটিং, টি-শার্ট ডিজাইন, SEO, ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট, কপি পেস্ট টাইপিং ইত্যাদি।
এ ধরনের যত প্রকার কাজ আছে তার যেকোনো একটি দিয়ে আপনার বিজনেস শুরু করতে পারেন এবং একাধিক কাজ জানা থাকলে ফ্রিল্যান্সিং ভালো লাভবান হতে পারবেন। সারা মাস জুড়ে এই কাজ করে ভালো ইনকাম করা যায়।
ফ্রিল্যান্সিংয়ে পছন্দ অনুযায়ী কাজ করার সুযোগ থাকে। এ ব্যবসায় তেমন কোন ইনভেস্ট করতে হয় না। শুধুমাত্র ইন্টারনেট কম্পিউটার ইংরেজিতে দক্ষতা থাকলেই হয়। বিভিন্ন কোম্পানি বা ব্যাক্তির কাজ করে ভালো ইনকাম করা যায়।
ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ এর জন্য যুব উন্নয়ন, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার গুলোর সাহায্য নিতে পারেন। এছাড়াও অনেক প্রতিষ্ঠান অনলাইন কোর্স করিয়ে থাকেন।
প্রশিক্ষণ গ্রহণের মাধ্যমে আপনিও চাইলে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে গড়ে তুলতে পারবেন।
১৫। ফুলের গহনার ব্যবসা
বর্তমানে ফুলের গহনা চাহিদা খুব বেশি। গায়ে হলুদ ও বসন্ত উৎসব এগুলোতে বেশি ফুলের গহনার ব্যবহার হয়ে থাকে। যে কেউ চাইলে ঘরে বসে সহজেই আর্টিফিশিয়াল ফুল দিয়ে গহনা তৈরি করে ভালই ইনকাম করতে পারেন।
ফুলের গহনা তৈরি করতে আর্টিফিশিয়াল ফুল, টারসেল ও পুথির প্রয়োজন হয়। আপনি যদি এই র-মেটেরিয়াল গুলো পাইকারি দোকান থেকে কম মূল্যে ক্রয় করতে পারেন তাহলে এ ব্যবসায় অনেক বেশি লাভবান হতে পারবেন। অনলাইন অফলাইন উভয় ভাবেই এই ঘরোয়া ব্যবসায় সফল হতে পারবেন।
ফুলের গহনা তৈরি করে সফল হতে হলে অবশ্যই আপনাকে গহনায় নতুনত্ব আনতে হবে। আধুনিক এবং অন্যদের থেকে আলাদা কোন ডিজাইনের গহনা বানাতে হবে। যাতে আপনি সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে ব্যবসায় টিকে থাকতে পারেন।
ঘরোয়া ব্যবসা নিয়ে শেষ কথা
যারা বাড়িতে বসে ঘরোয়া ব্যবসা করে স্বাবলম্বী হতে চান তারা ওপরের এই ব্যবসা গুলো থেকে যে কোন একটি পছন্দ করে কাজ শুরু করতে পারেন। অল্প পুঁজি দিয়ে ব্যবসা গুলো করতে পারবেন।
এখন সবকিছুতে মানুষ এগিয়ে যাচ্ছে, সে ক্ষেত্রে বেকার ঘরে বসে না থেকে যেকোনো একটি ব্যবসা শুরু করে নিজেকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলতে পারেন। তবে ব্যবসার জন্য চাই সঠিক পরিকল্পনা এবং সঠিক সময়।
সঠিক সময়কে কাজে লাগিয়ে যে কেউ সামনে এগিয়ে যেতে পারেন। ঘরোয়া ব্যবসার শুরু থেকেই বেশি বেনিফিট পাওয়ার আশা না করে সঠিকভাবে কাজ শিখে একাগ্রতার সাথে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। তাহলে, অবশ্যই আপনার ঘরোয়া ব্যবসা থেকেই একদিন সফলতা আপনার কাছে ধরা দিবে ইন-শা-আল্লাহ।